|

মধুসূদন রেগে

১৮ মার্চ, ১৯২৪ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পানভেলে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৪০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

১৯৪৪-৪৫ মৌসুম থেকে ১৯৫৪-৫৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে মহারাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। একগুঁয়েমিপূর্ণ মনোভাব ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধতার কারণে পরিচিতি পান। ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। মহারাষ্ট্র দলের প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কয়েকজন ভারতীয় তারকার ধারাবাহিক ক্রীড়াশৈলীর কারণে দলে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতার পরিবেশ গড়ে তুলে।

জনৈক পুলিশ-ইন্সপেক্টরের পুত্র ছিলেন। ১৯ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। নয়ানগরের বিপক্ষে নয় নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন। কৃষ্ণকুমার যাদবের সাথে নবম উইকেট জুটিতে ৯৬ রান যুক্ত করেন। নিজে করেন ৫২ রান। এরফলে, দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁকে শীর্ষস্তরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দেয়া হয়। ২৫ রান তুলতে পেরেছিলেন। পরের খেলায় বরোদার মুখোমুখি হন। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে ৭২ ও ২৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন।

১০ মৌসুমের অধিক খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। তবে, এ সময়ে তিনি মাত্র ৩৯ খেলায় অংশ নেয়ার সুযোগ লাভ করেছিলেন। অধিকাংশ খেলাই মহারাষ্ট্রের পক্ষে খেলেন। ১৯৪০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ১৯৫০-এর দশকের সূচনাকাল পর্যন্ত মহারাষ্ট্র দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ছয় শতক সহযোগে ৩৭.২৬ গড়ে ২৩৪৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেছেন ১৬৪ রান।

এছাড়াও, ৪২.৯৬ গড়ে ৩৩ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি। অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। তাঁর বোলিং কিছুটা সন্দেহের সৃষ্টি করে। প্রায়শঃই তাঁর বোলিং ভঙ্গীমা আম্পায়ারদের কাছ থেকে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। একবার আম্পায়ার নোশির্বান নাগরওয়ালা’র কাছ থেকে একই ওভারে দুইবার বাঁধাপ্রাপ্ত হন।

১৯৪৫-৪৬ মৌসুমে লিন্ডসে হ্যাসেটের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ান সার্ভিসেস দলের বিপক্ষে খেলেন। অতিথি দল ৩০০ রানে অল-আউট হয়। পুনায় অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় দলের পক্ষে ২৭০ বলে ২৩ বাউন্ডারিতে ২০০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে প্রথমবারের মতো আলোচনায় চলে আসেন। ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। দ্বিতীয় উইকেটে আব্দুল হাফিজ কারদারের সাথে ৩৪৪ রানের নিরবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন। ঐ ইনিংসের কল্যাণে তাৎক্ষণিকভাবে ঝড় তুলেন। দূর্ভাগ্যজনকভাবে খেলাটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের মর্যাদাপ্রাপ্ত ছিল না।

এরপর, সিন্ধুর বিপক্ষে ৭২ ও ২৬ রান তুলেন। পেন্টাগুলার প্রতিযোগিতায় ইউরোপিয়ান্সের বিপক্ষে ১০১ রান তুলে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজস্ব প্রথম শতরানের ইনিংস খেলেন।

১৯৪৮-৪৯ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতার সেমি-ফাইনালে সর্বাধিক স্বর্ণালী মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলেন। বোম্বে দল শতরানের ফুলঝুড়ি ছোটায় ও মহারাষ্ট্র দলকে ৯৫৯ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করে। তিনি ঐ খেলায় ১৩৩ ও ১০০ রান তুলেন। এছাড়াও, ৭৭ ওভার বোলিং করেছিলেন।

১৯৪৯ সালে ভারতের পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে নিজ দেশে জন গডার্ডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২৭ জানুয়ারি, ১৯৪৯ তারিখে মাদ্রাজের চিপকে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। নিরোদ চৌধুরী’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। তবে, তেমন সুবিধে করতে পারেননি। ১৫ ও ০ রান তুলেছিলেন। ইনিংস ও ১৯৩ রানে পরাজিত হয়ে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

বিএ ও বিটি ডিগ্রীধারী ছিলেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩ তারিখে ৮৯ বছর ২৭৩ দিন বয়সে নিজস্ব ৯০তম জন্মদিন উদযাপনের মাত্র কয়েক মাস পূর্বে পুনেতে তাঁর জীবনাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • |

    জিম স্লাইট

    ২০ অক্টোবর, ১৮৫৫ তারিখে ভিক্টোরিয়ার অ্যাশবি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৮৮০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৮৭৪-৭৫ মৌসুম থেকে ১৮৮৭-৮৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ১৮৮০ সালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ…

  • | | | |

    কিম হিউজ

    ২৬ জানুয়ারি, ১৯৫৪ তারিখে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার মার্গারেট রিভার এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও প্রশাসক। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তাঁর সহজাত প্রতিভা লক্ষ্য করা যায়। স্ট্রোকপ্লে মারতে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক রুডি রাইবারজিক মন্তব্য করেছিলেন যে…

  • | |

    জ্যাক ব্ল্যাকহাম

    ১১ মে, ১৮৫৪ তারিখে ভিক্টোরিয়ার নর্থ ফিটজরয় এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হতেন। উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা উইকেট-রক্ষকের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। ‘উইকেট-রক্ষকদের রাজপুত্র’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ঊনবিংশ শতকের শুরুরদিকে ক্রিকেটকে মহীয়ান করে গেছেন। দূর্দান্তভাবে ও দক্ষতার সাথে উইকেট-রক্ষণ…

  • | | |

    ডেভ গ্রিগরি

    ১৫ এপ্রিল, ১৮৪৫ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের ফেইরি মিডো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও আম্পায়ার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ১৮৭০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নেয়াসহ অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের জনক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এডওয়ার্ড উইলিয়াম গ্রিগরি ও মেরি অ্যান দম্পতির সন্তান ছিলেন।…

  • |

    আরিফুল হক

    ১৮ নভেম্বর, ১৯৯২ তারিখে উত্তরাঞ্চলীয় রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। মাঝারিসারিতে নিচেরদিকে ডানহাতে মারকুটে ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে থাকেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ে যথেষ্ট দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে অংশ নেন। অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২৩ দলের সদস্য ছিলেন। ২০০৬-০৭ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন…

  • | |

    নিরোদ চৌধুরী

    ১৪ মে, ১৯২৩ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বিহারের জামশেদপুরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। শৈশবকাল থেকেই সর্বক্রীড়ায় তাঁর প্রতিশ্রুতিশীলতা লক্ষ্য করা যায়। ক্রিকেট, ফুটবল ও উচ্চ লম্ফে বেশ দক্ষ ছিলেন। মোহনবাগানের পক্ষে ফুটবল খেলায়…