লরি ন্যাশ
২ মে, ১৯১০ তারিখে ভিক্টোরিয়ার ফিটজরয় এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৩০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
১.৭৯ মিটার উচ্চতা ও ৮৩ কেজি ওজনের অধিকারী ছিলেন। তেমন দীর্ঘকায় না হলেও বেশ শক্ত-মজবুত গড়ন ছিল তাঁর। বলকে বেশ অপ্রস্তুতভাবে ফেলতে পারতেন। ১৯২৯-৩০ মৌসুম থেকে ১৯৩৬-৩৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে তাসমানিয়া ও ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাসমানিয়ার সদস্যরূপে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকানদের বিপক্ষে ৭/৫০ লাভের পর তাঁকে জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে এটিই তাঁর সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ছিল।
১৯৩২ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সব মিলিয়ে মাত্র দুই টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। উভয় টেস্টই মেলবোর্নে খেলেছিলেন। ১৯৩১-৩২ মৌসুমে নিজ দেশে জক ক্যামেরনের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩২ তারিখে সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। জ্যাক ফিঙ্গলটনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। নিশ্চল উইকেটে সফরকারীরা মাত্র ৩৬ ও ৪৫ রানে গুটিয়ে যায়। খেলায় তিনি ৪/১৮ ও ১/৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, দলের একমাত্র ইনিংসে ১৩ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৭২ রানে জয় পেলে ৫-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।
তবে, অনেকাংশে বিস্ময়করভাবে অপর টেস্টটি খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে জি. ও. অ্যালানের নেতৃত্বাধীন সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে খেলেছিলেন। ভিক্টোরিয়ার সদস্যরূপে সফররত এমসিসি’র বিপক্ষে ২/২১ ও ২/১৬ লাভ করে ইংরেজদের কিছুটা ব্যতিব্যস্ত করেন। ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে সমতা আনয়ণের পর সিরিজের পঞ্চম টেস্টে অংশ নেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৭ তারিখে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলেন। দ্রুততার সাথে ও বেশ ভালো বোলিং করে ৪/৭০ পান। ফলো-অনের পর ১/৩৪ লাভ করেন। ঐ টেস্ট স্বাগতিক দল জয়লাভ করে ও সিরিজ কুক্ষিগত করে।
২২টি প্রথম-শ্রেণীর খেলার মধ্যে তাসমানিয়ার পক্ষে সতেরো খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ২৮.০২ গড়ে এক শতক সহযোগে ৯৫৩ রান তুলেন। এছাড়াও, ২৮.৩৩ গড়ে ৬৯ উইকেট দখল করেছিলেন।
ক্রিকেটের পাশাপাশি অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলেও সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন। সিটি, সাউথ মেলবোর্ন ও ক্যাম্বারওয়েলের পক্ষে খেলেছন। ১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০২ সালে সিটি/সিটি-সাউথ কর্তৃক শতাব্দীর সেরা দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০০৪ সালে তাসমানিয়ার শতাব্দীর সেরা দলে তাঁকে ঠাঁই দেয়া হয়। ২০০৬ সালে তাসমানিয়ার ফুটবলের হল অব ফেমে তারকা হিসেবে তাঁকে যুক্ত করা হয়। এছাড়াও, সিডনি সোয়ান্স/সাউথ মেলবোর্ন ফুটবল ক্লাবের শতাব্দীর সেরা দলে সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। ২৪ জুলাই, ১৯৮৬ তারিখে ভিক্টোরিয়ার হেইডেলবার্গ এলাকার হাসপাতালে ৭৬ বছর ৮৩ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।