১৬ ডিসেম্বর, ১৯০৯ তারিখে মালয়ের কুয়ালালামপুরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৩০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
৫ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। ১৯৩১-৩২ মৌসুম থেকে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে হিন্দু ও সাউদার্ন পাঞ্জাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
মাঠে সজীব ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন ও বল তালুবন্দীকরণে দক্ষতার কারণে পরিচিতি লাভ করেন। ব্যাট হাতে নিয়ে তেমন রানের সন্ধান পাননি কিংবা বল হাতে নিয়ে তেমন উইকেটও লাভ করেননি। তাসত্ত্বেও, কেবলমাত্র মাঠে অপূর্ব দক্ষতার কারণে তাঁকে ভারত দলে রাখা হয়েছিল।
মালয়েশীয় বংশোদ্ভূত প্রথম টেস্ট ক্রিকেটারের গৌরব অর্জন করেন। পরবর্তীতে, ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটা স্টিফেন ও’কিফ তাঁর সাথে যুক্ত হন। ঐ সময়ে ফেডারেটেড স্টেটস অব মালয়ের পক্ষে খেলেছিলেন। এছাড়াও, ভারতের পক্ষে খেলা প্রথম শিখ টেস্ট খেলোয়াড়ের মর্যাদা পান। তাঁর ভ্রাতা বিএস গিল ক্রিকেটার ছিলেন এবং মালয় ও ফেডারেটেড স্টেটস অব মালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন; তবে, তিনি কোন প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণ করেননি।
১৯৩২ সালে ভারতের পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ভারতের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৩২ সালে সিকে নায়ড়ু’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২৫ জুন, ১৯৩২ তারিখে লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। দলের অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এ টেস্টের মাত্র এক সপ্তাহ পূর্বে ৫২ রানে ইনিংস খেলেছিলেন। ভারতে দীর্ঘদিন অবস্থান না করা সত্ত্বেও ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট কাউন্সিল ঐ খেলায় তাঁর অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়। মোটেই সুবিধে করতে পারেননি। খেলায় তিনি মাত্র ১৫ ও ২৯ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। তবে, দৃষ্টিনন্দন ফিল্ডিং করে ফ্রাঙ্ক ওলিকে নয় রানে রান-আউট করে ইংল্যান্ড দলকে ১৯/৩-এ নিয়ে যান। ঐ টেস্টে স্বাগতিকরা ১৫৮ রানে জয়লাভ করেছিল।
চতুর্থ ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ ৮৩/৫ থাকা অবস্থায় ক্রিজে নামেন। ১০৮ রানে সপ্তম উইকেটের পতনের পর অমর সিংয়ের সাথে জুটি গড়েন। তাঁরা চল্লিশ মিনিটে ৭৪ রান তুলেন। এটিই ভারতের পক্ষে যে-কোন উইকেটে প্রথম অর্ধ-শতরানের জুটি ছিল। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুম পর্যন্ত অষ্টম উইকেটে তাঁদের সংগ্রহের রেকর্ডটি টিকেছিল।
নিজের প্রথম টেস্ট খেলার পর ভারতে ফিরে আসেন। পাতিয়ালার মহারাজা রঞ্জিতসিংজী’র অধীনে চাকুরী লাভ করেন। সাউদার্ন পাঞ্জাবের পক্ষে রঞ্জী ট্রফিতে অংশ নেন। এছাড়াও, বোম্বে কোয়াড্রাঙ্গুলার প্রতিযোগিতায় হিন্দু দলের পক্ষে খেলেন।
অবিশ্বাস্য ফিল্ডিং দক্ষতার কারণে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিল। খুব সম্ভবতঃ ভারতের প্রথম ফিল্ডিং অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হিসেবে চিত্রিত হয়েছেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যাটিং কিংবা বোলিংয়ে তেমন কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেননি। ঘরোয়া আসরের ৩২ খেলা থেকে একটি শতরানের ইনিংসে ২৪.৯৫ গড়ে ১১২৩ রান পেয়েছেন ও একটিমাত্র উইকেট লাভ করেছেন।
১৯৮০ সালে বিসিসিআইয়ের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বোম্বেতে সূবর্ণজয়ন্তী টেস্টে প্রবীণতম খেলোয়াড় হিসেবে অংশগ্রহণের জন্যে আমন্ত্রিত হন। তাজমহল হোটেলের গায়িকাকে বিয়ে করেন। তবে, খেলোয়াড়ী জীবনের পর কোথায় অবস্থান করেন তা স্পষ্ট নয়। কারও অভিমত, প্যারিসে নাইটক্লাব পরিচালনা করেছেন, কেউবা তাঁকে কুয়ালালামপুরে ফিরে আসতে দেখেছেন ও সেখানে মাঠ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে দেখেছেন। ১৯ নভেম্বর, ১৯৮৫ তারিখে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ৭৬তম জন্মদিন উদযাপনের এক মাস পূর্বে ৭৫ বছর ৩৩৮ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
