| | |

লালচাঁদ রাজপুত

১৮ ডিসেম্বর, ১৯৬১ তারিখে মহারাষ্ট্রের বোম্বে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও কোচ। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৮০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

১৯৮১-৮২ মৌসুম থেকে ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে আসাম, বোম্বে ও বিদর্ভের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, স্কটল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন। বোম্বের পক্ষে নিজের সেরা খেলা প্রদর্শন করেছিলেন। ১৯৮৩-৮৪ মৌসুম থেকে ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে পর্যন্ত বোম্বের উপর্যুপরী চ্যাম্পিয়নশীপে শিরোপা বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এ পর্যায়ে ৫৩.১৪ গড়ে ৩৭২ ও ৪০.৯৪ গড়ে ৭৩৭ রান তুলেন। শেষ আসরের চূড়ান্ত খেলায় দিল্লি দল ৬৫ রানে এগিয়ে যাবার পর বোম্বে দলের সংগ্রহ ৩১/২ হলে সন্দীপ পাতিলের সাথে জুটি গড়ে দলের ভিত্তি আনয়ণে ৬৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে বোম্বে দলকে জয় এনে দেন।

১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে বোম্বের অন্যান্য তারকা খেলোয়াড়ের ন্যায় না হলেও তিনি স্ট্রোকের ফুলঝুঁড়ি ছোটাতে পারেননি। প্রায়শঃই সুনীল গাভাস্কার, দিলীপ বেঙ্গসরকার, সন্দীপ পাতিল ও রবি শাস্ত্রী’র ন্যায় তারকা খেলোয়াড়দের সাফল্যে ম্লান হয়ে পড়তেন। তবে, তাঁরা জাতীয় দলে খেলতে ব্যস্ত থাকলে বোম্বের অগ্রযাত্রায় দায়িত্ব নিজ কাঁধে নিতেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২০ শতক সহযোগে ৪৯.৩০ গড়ে ৭৯৮৮ রান তুলেছেন। এছাড়াও, ৫৯ উইকেট পেয়েছেন তিনি। ১৯৮১-৮২ মৌসুম থেকে ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেটে সরব ছিলেন। প্রত্যেক মৌসুমেই ৪০ ঊর্ধ্ব গড়ে রান তুলেছিলেন। এরপর অবসর গ্রহণ করেন। তন্মধ্যে, আট মৌসুমে পঞ্চাশের কোটা অতিক্রম করেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে সর্বোচ্চ ৭৫.২৫ গড়ে রান তুলেছেন।

১৯৮৬-৮৭ মৌসুম থেকে ১৯৮৭-৮৮ মৌসুম পর্যন্ত নিজের স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। প্রথমটিতে ৬৭.৭৬ গড়ে ৮৮১ রান ও দ্বিতীয়টিতে ৬৬.২৮ গড়ে ৯২৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। নিজের স্বর্ণালী সময়ে অবস্থান করা সত্ত্বেও শক্তিধর বোম্বে দলে স্থান পেতে তাঁকে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে বোম্বে দলের নেতৃত্ব থাকার পর আসামে চলে যান। আসাম দলের সদস্যরূপে রঞ্জী ট্রফিতে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জহির আলমের সাথে ৪৭৫ রান তুলে রেকর্ড গড়েন। এরপর, বিদর্ভে চলে যান।

এছাড়াও, স্কটিশ লীগে অংশ নিয়েছেন। এ পর্যায়ে স্কটল্যান্ডের পক্ষে বেনসন এন্ড হেজেস ও ন্যাটওয়েস্ট ট্রফিতে খেলেছেন।

১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সময়কালে ভারতের পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্ট ও চারটিমাত্র ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে নিজ দেশে ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ২৩ জানুয়ারি, ১৯৮৫ তারিখে নাগপুরে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন।

১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ৩০ আগস্ট, ১৯৮৫ তারিখে কলম্বোর এসএসসিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। সদানন্দ বিশ্বনাথের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ৩২ ও ৬১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৫ তারিখে কলম্বোর পিএসএসে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে সর্বশেষ খেলেন। ৭ ও ০ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ১৪৯ রানে জয় পায়।

১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে খেলায় তেমন নেতিবাচক প্রভাব না ফেললেও সুনীল গাভাস্কারের খেলোয়াড়ী জীবন শেষ হলে কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্তের ব্যাটিং কৌশলে সন্দেহ থাকা, নবজ্যোৎ সিঁধু’র আবির্ভাব না ঘটা অবস্থায় আকস্মিকভাবে ভারতের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের সঙ্কট দেখা দেয়। এ সময়েই লালচাঁদ রাজপুত আকস্মিকভাবে দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টিগোচরে পড়েন ও ভারত দলের সদস্যরূপে ঠাঁই দেয়া হয়। তবে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবশ্য নিজেকে দীর্ঘদিন ধরে রাখতে পারেননি। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। ভারতের অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলসহ রঞ্জী ট্রফিতে মুম্বই দলকে প্রশিক্ষণ দেন। এছাড়াও, ২০০৭ সালের টি২০ বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় শিরোপা বিজয়ী ভারত দলের ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

Similar Posts

  • | | | |

    বান্দুলা বর্ণাপুরা

    ১ মার্চ, ১৯৫৩ তারিখে রাম্বুক্কানায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও রেফারি ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, কার্যকর মিডিয়াম-পেস বোলার ছিলেন। শ্রীলঙ্কা দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭০-৭১ মৌসুম থেকে ১৯৮২-৮৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮২ সময়কালে শ্রীলঙ্কার পক্ষে চারটিমাত্র টেস্ট ও ১২টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডে…

  • |

    পিটার কার্স্টেন

    ১৪ মে, ১৯৫৫ তারিখে নাটালের পিটারমারিৎজবার্গে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মাঝে-মধ্যে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। ১৯৯০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুম থেকে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন সরব রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে বর্ডার ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স এবং…

  • |

    জেপি ডুমিনি

    ১৪ এপ্রিল, ১৯৮৪ তারিখে কেপ প্রভিন্সের স্ট্রান্ডফন্তেইন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলেছেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘জেপি’ ডাকনামে পরিচিতি পান। ১.৭০ মিটার উচ্চতার অধিকারী। জন ডুমিনি ও জুনিটা বার্গম্যান দম্পতির সন্তান তিনি। কিশোর বয়সেই প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখেন। মাঠের সর্বত্র শট…

  • |

    সিড বার্নস

    ৫ জুন, ১৯১৬ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের অ্যানানডেল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। চমৎকার ক্রিকেটার ও অদ্ভূত চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। ডন ব্র্যাডম্যানের নেতৃত্বাধীন ‘অপরাজেয় দলের’ সদস্য ছিলেন। সচরাচর ইনিংস উদ্বোধনে নামতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে খেলতেন। অগণিত দূর্ভাগা খেলোয়াড়ের অন্যতম…

  • | | |

    জবাগল শ্রীনাথ

    ৩১ আগস্ট, ১৯৬৯ তারিখে কর্ণাটকের মহীশূরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও রেফারি। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ১.৯১ মিটার উচ্চতার অধিকারী। ১৯৮৯-৯০ মৌসুম থেকে ২০০৩ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে কর্ণাটক…

  • | | | |

    দিলীপ মেন্ডিস

    ২৫ আগস্ট, ১৯৫২ তারিখে মোরাতুয়ায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও কোচ। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। শক্ত মজবুত গড়নের অধিকারী হিসেবে যে-কোন স্তরের ক্রিকেটে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতেন। ১৯৭১-৭২ মৌসুম থেকে ১৯৯০-৯১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর…