|

খালিদ ওয়াজির

২৭ এপ্রিল, ১৯৩৬ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের জলন্ধরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৫০-এর দশকে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

দীর্ঘদেহী ও মজবুত গড়নের অধিকারী ছিলেন। আগ্রাসী ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। মিডিয়াম-পেস বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডার হিসেবেও দারুণ ভূমিকা রেখেছেন। পাকিস্তানের শুরুরদিকের অন্যতম টেস্ট ক্রিকেটার ছিলেন। ১৯৩০-এর দশকে ভারতের প্রতিনিধিত্বকারী ওয়াজির আলী’র সন্তান ছিলেন। দেশ বিভাজনের পর তাঁর পরিবার জলন্ধর থেকে করাচীতে বসবাস করতে থাকে। পাকিস্তানের ক্রিকেটের সূচনালগ্নে তাঁর পরিবার বিরাট প্রভাব ফেলে। লাহোরে অধিকাংশ প্রতিযোগিতাধর্মী ক্লাব প্রতিযোগিতার আয়োজন হলে সেগুলো ওয়াজির আলী লীগ নামে পরিচিতি লাভ করতো।

১৮ বছর বয়সী ছাত্র অবস্থাতেই বিস্ময়করভাবে জাতীয় দলে খেলার জন্যে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান দলের সাথে ইংল্যান্ড গমনের সুযোগ পান। এ পর্যায়ে তিনি মাত্র দুইটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। এমনকি এ সফরকে ঘিরে ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে কায়েদ-ই-আজম ট্রফিতেও খেলেননি।

১৯৫৪ সালে পাকিস্তানের পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ঐ বছর আব্দুল কারদারের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ব্যাটিংয়ে অভিজ্ঞ হিসেবে সিরিজের দুই টেস্টে অংশ নিলেও তেমন সুবিধে করতে পারেননি। ১০ জুন, ১৯৫৪ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। আলিমুদ্দীন ও শুজাউদ্দীনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। পাকিস্তানের ষোড়শ টেস্ট ক্রিকেটার ও তৎকালে হানিফ মোহাম্মদের পর দেশের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটারের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। একবার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে ৩ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।

একই সফরের ২২ জুলাই, ১৯৫৪ তারিখে ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ২ ও ৯* রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে ও চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

ঐ সফরে ব্যক্তিগতভাবে সফলতার সন্ধান পাননি। টেস্টের তিন ইনিংস থেকে মাত্র ১৪ রান তুলতে পেরেছিলেন। বোলিং করার সুযোগ পাননি। ইংল্যান্ড সফরে সব মিলিয়ে ১৬টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে একটি অর্ধ-শতক সহযোগে ১৬.৮৬ গড়ে ২৫৩ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, ৬২.৬৬ গড়ে নয় উইকেট দখল করেছিলেন। পাকিস্তানে ফিরে আসার পর আর কোন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নেননি।

১৯৬২ সালে ইংল্যান্ডে পরবর্তী সফরেও তাঁকে দলে রাখা হয়। পুরোপুরি বিধ্বস্ত এ সফরে কোন খেলায় অংশ নেননি ও ইতোমধ্যে ইংল্যান্ডে বসবাস করতে থাকেন। নর্থ স্টাফোর্ডশায়ার ও ডিস্ট্রিক্ট লীগে সফলতম ক্লাব ক্রিকেটার হিসেবে নিজের পরিচিতি ঘটান। কিছু সময় অসুস্থ ছিলেন। অতঃপর, ২৭ জুন, ২০২০ তারিখে চেস্টারে ৮৪ বছর ৬১ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts