২৪ নভেম্বর, ১৯৮০ তারিখে ওয়ারউইকশায়ারের বার্মিংহামের মোজলি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ২০০০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
ক্রিকেটপ্রেমী পরিবারে জন্ম। তাঁর ভাই – আতিফ আলী হ্যাম্পশায়ার ও ওরচেস্টারশায়ার দ্বিতীয় একাদশে খেলেছেন। চাচাতো ভাই – কাদির আলী, এমএম আলী ও ওএম আলী প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘কাব্বি’ কিংবা ‘ট্যাক্সি’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। ৬ ফুট উচ্চতার অধিকারী কবির আলী মোজলি স্কুলে অধ্যয়ন শেষে উল্ভারহাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছেন।
শুরুতে মাঠ ও মাঠের বাইরে ব্যাপক সম্ভাবনাময় হিসেবে চিত্রিত হয়েছিলেন। ১৯৯৯ থেকে ২০১৪ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরে প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ার, ল্যাঙ্কাশায়ার ও ওরচেস্টারশায়ার এবং ভারতীয় ক্রিকেটে রাজস্থানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, বরিশাল বার্নার্স, মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব ও ওরচেস্টারশায়ার ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষে খেলেছেন। ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে দারুণ ক্রীড়ানৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারেননি।
ডিসেম্বর, ২০০২ সালে ইংল্যান্ড উপর্যুপরী অষ্টমবারের মতো অ্যাশেজ সিরিজ খুঁয়ায়। নতুন খেলোয়াড়ের সন্ধানে সিম-বোলিং অল-রাউন্ডার হিসেবে তাঁকে সনাক্ত করা হয়। খণ্ডকালীন মডেল হিসেবে কাজ করতেন। একবার ব্রিটেনে এশিয়ান ওম্যান ও ব্রাইড সাময়িকী তাঁকে ৫০জন যোগ্য কুমারের অন্যতম হিসেবে মনোনীত করে। এক পর্যায়ে ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলারেরা যেখানে অস্ট্রেলিয়ায় কোন পাত্তাই পেতো না, সেখানে তিনি ২০০২-০৩ মৌসুমে অ্যাডিলেড একাডেমিতে প্রশিক্ষণের সুযোগ পান ও একদিনের দলে তাঁকে যুক্ত করা হয়।
২০০৩ থেকে ২০০৬ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে সব মিলিয়ে একটিমাত্র টেস্ট ও ১৪টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। খেলাগুলো থেকে সাধারণমানের সফলতা পান। উপর্যুপরী আটটি অ্যাশেজ সিরিজ খোঁয়ানো ইংল্যান্ড দলের পুণর্গঠনকালীন ২০০৩ সালে তাঁকে দলে ঠাঁই দেয়া হয়। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে সফলতার সন্ধান পাননি। ১ জুলাই, ২০০৩ তারিখে লিডসে অনুষ্ঠিত সফররত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওডিআইয়ে অংশ নিলেও মাঠে নামার পূর্বেই বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়।
২০০৩ সালে নিজ দেশে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ২১ আগস্ট, ২০০৩ তারিখে লিডসের হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি বল হাতে নিয়ে ৩/৮০ ও ২/৫৬ পান। এছাড়াও, ১ ও ৯ রান সংগ্রহ করেন। গ্যারি কার্স্টেনের অনবদ্য ব্যাটিং নৈপুণ্যে স্বাগতিকরা ১৯১ রানে পরাভূত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
কিন্তু, ধারাবাহিকতা রক্ষার অভাবে উচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। এছাড়াও, ক্রমাগত আঘাতপ্রাপ্তিও তাঁর উত্তরণের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এরপর দ্রুত পর্দার অন্তরালে চলে যান। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আঘাতে জর্জড়িত অবস্থা থেকে উত্তরণে খেলোয়াড়ী জীবনে পুণর্জাগরণ ঘটাতে ২০১৩ সালকে ঘিরে ল্যাঙ্কাশায়ারের সাথে দুই বছরের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ২০১০ সালে ৩১ বছর বয়সী কবির আলী হ্যাম্পশায়ারে চলে যান। তবে, তিন বছর তিনি মাত্র ৩৩ খেলায় অংশ নেয়ার সুযোগ পান। এর পরপরই হাঁটুতে গুরুতর আঘাতসহ গোড়ালীর সমস্যায় ভুগেন। পূর্বেকার গোড়ালীর আঘাতের কারণে ২০০৮ সালে ইংল্যান্ড লায়ন্সের সাথে ভারত সফরে যেতে পারেননি। এরফলে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সুযোগ নষ্ট করেন।
১২ মে, ২০১৫ তারিখে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। ২০০০ সালে এনবিসি ডেনিস কম্পটন পুরস্কার লাভ করেন।
