৪ জানুয়ারি, ১৯৮০ তারিখে কেপ প্রভিন্সের পার্ল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। পরবর্তীতে অফ-স্পিন বোলিং রপ্ত করেন। এরফলে, নিজেকে আরও কার্যকর ক্রিকেটারে পরিণত করেন। ‘রোডি’ ডাকনামে পরিচিতি পান। তবে, স্বীয় প্রতিভার প্রতি সুবিচার করেননি। নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামলেও যে-কোন অবস্থানে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা রাখেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুম থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে বোল্যান্ড, কেপ কোবরাস ও লায়ন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, আফ্রিকা একাদশের পক্ষে খেলেছেন। ১৯৯৮ সালে বোল্যান্ডের সাথে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। কয়েক বছর অনূর্ধ্ব-১৯ দলসহ ‘এ’ দলের পক্ষে খেলার পর জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান।
২০০১ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্ট, ২৮টি ওডিআই ও ১৪টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। ২৮ এপ্রিল, ২০০১ তারিখে কিংস্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। নয় নম্বর অবস্থানে খেলতে নামলেও তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখেননি।
টেস্টে অংশগ্রহণ করলেও বিতর্কিত হন। ইউসিবি’র সভাপতি পার্সি সন গোত্রনীতি প্রয়োগে তাঁকে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ দেন। এরফলে, দল নির্বাচকমণ্ডলীর সিদ্ধান্তমাফিক জ্যাক রুডল্ফের পরিবর্তে তাঁকে খেলানো হয়। ২০০১-০২ মৌসুমে শন পোলকের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ২ জানুয়ারি, ২০০২ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ওডিআইয়ের ন্যায় এ সংস্করণের ক্রিকেটেও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। খেলায় তিনি ৯ ও ৩২ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে শেন ওয়ার্নের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। এছাড়াও, ০/১০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের পাশাপাশি জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও ম্যাথু হেইডেনের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের কল্যাণে সফরকারীরা ১০ উইকেটের বিরাট ব্যবধানে পরাভূত হলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।
ফলে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনও অধিক সময় টিকে থাকেনি। তবে, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ঠিকই রান সংগ্রহের ধারা অব্যাহত রেখেছিলেন। দুই বছর পর ২০০৪ সালে ভারত গমনার্থে তাঁকে দলে রাখা হয়। ২০০৪-০৫ মৌসুমে ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ভারত সফরে যান। ২৮ নভেম্বর, ২০০৪ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো টেস্ট খেলার সুযোগ পেলেও ভালো খেলতে পারেননি। তবে, ঐ সময়ে ওডিআই দলে নিয়মিতভাবে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। সিরিজের ঐ দ্বিতীয় টেস্টটিতে ১৬* ও ০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৭৯ ও ০/৪৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। হরভজন সিংয়ের অসাধারণ বোলিংয়ের কল্যাণে স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
চার মৌসুম কেন্টের পক্ষে খেলার পর ২০০৮ সালে কেপ কোবরাসের সাথে যুক্ত হন। এরপর থেকে দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হন। ৩৪ মাস জাতীয় দলের বাইরে থাকার পর ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সালে নিউজিল্যান্ড গমনার্থে তাঁকে দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ২০১৪ সালে সাউথ আফ্রিকান ক্রিকেট অ্যানুয়েল কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। ভারত সফরকে ঘিরে ২২ আগস্ট, ২০১৯ তারিখে ল্যান্স ক্লুজনার ও বার্নসের সাথে সহকারী কোচ হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন।
