১৪ এপ্রিল, ১৯৬০ তারিখে চেশায়ারের ম্যাকলসফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করতেন। ১৯৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
৬ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী জোনাথন অ্যাগ্নিউ ‘স্পাইরো কিংবা ‘অ্যাজার্স’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। আপিংহাম স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। লিকলিকে গড়ন তাঁর। সঠিকভাবে চলমান থাকা অবস্থায় দূর্দান্ত পেস বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। বিবিসি’র ক্রিকেট সংবাদদাতা হিসেবে বিরাট খ্যাতি অর্জন করেন ও এক পর্যায়ে তিনি যে ক্রিকেট খেলতেন তা খুব সহজেই বিস্মৃতির অন্তরালে চলে যেতে হয়। ১৯৭৮ সালে আপিংহামের পক্ষে চমৎকার মৌসুম অতিবাহিত করেন। মাত্র ৮ গড়ে ৩৭ উইকেট দখল করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে, লিচেস্টারশায়ার দলে যাচাই-বাছাইয়ের খেলার জন্যে মনোনীত হন।
১৯৭৮ থেকে ১৯৯০ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজস্ব চতুর্থ বলে উইকেট লাভ করেন। উপযোগী পরিবেশে দ্রুতলয়ে খেলতেন। ১৯৮৭ সালে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। ১০১ উইকেট দখল করেছিলেন। ১৯৮৭ ও ১৯৮৮ সালে সেরা ইংরেজ পেস বোলার হিসেবে বিবেচিত হলেও দল নির্বাচকমণ্ডলীর উপেক্ষার শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। তন্মধ্যে, ১৯৮৮ সালে সেরা ধারাবাহিকতাপূর্ণ ফাস্ট বোলার হিসেবে ১৯৪ উইকেট পেয়েছিলেন। ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে ও ভবিষ্যতের কর্মজীবন অনিশ্চিত হয়ে অবসর গ্রহণের দিকে ধাবিত হন।
১৯৮৪ থেকে ১৯৮৫ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে তিনটিমাত্র টেস্ট ও সমসংখ্যক ওডিআইয়ে অংশ নেন। অংশগ্রহণকৃত সবগুলো টেস্টেই বেশ হিমশিম খান। ১৯৮৪ সালে নিজ দেশে ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ৯ আগস্ট, ১৯৮৪ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। রিচার্ড এলিসনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ০/৪৬ ও ২/৫১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৫ ও ২* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, ডেসমন্ড হেইন্সের অসাধারণ শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ১৭২ রানে জয় পেলে ৫-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।
পরবর্তী গ্রীষ্মে সর্বশেষ টেস্ট খেলেন। ১৯৮৫ সালে নিজ দেশে অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১ আগস্ট, ১৯৮৫ তারিখে ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্ট খেলেন। খেলায় তিনি ০/৬৫ ও ০/৩৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে দলের একমাত্র ইনিংসে ২* রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। ক্রেগ ম্যাকডারমট অসাধারণ বোলিংশৈলী প্রদর্শন করলেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে ছয়-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে অগ্রসর হতে থাকে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।
১৯৯২ সালে আঘাতে জর্জড়িত লিচেস্টারশায়ার দলে খেলতে নামেন। ১২ ওভারে ১/৩১ নিয়ে দলকে চূড়ান্ত খেলায় নিয়ে যান। তবে, ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির সেমি-ফাইনালে গুরুতর আঘাত পেলে ৩০ বছর বয়সেই তাঁকে খেলার জগৎ থেকে চলে আসতে হয়। ১৯৮৭ সালে বিবিসি রেডিও লিচেস্টারে ক্রীড়া সম্প্রচারকারী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। ১৯৮৮ সালে পেশাদার কাউন্টি ক্রিকেটারের জীবনীকে ঘিরে বিনোদনধর্মী গ্রন্থ ‘এইট ডেজ এ উইক’ প্রকাশ করেন। ১৯৯০-৯১ মৌসুমে অধুনা বিলুপ্ত টুডে সংবাদপত্রে অস্ট্রেলিয়ায় ইংল্যান্ডের সফরের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ৩০ বছর বয়সে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর বিবিসি’র ক্রিকেট সংবাদদাতা হিসেবে মনোনীত হন। ধারাভাষ্যকর্মের দিকে ঝুঁকে পড়েন। বিবিসির টেস্ট ম্যাচ স্পেশালে যুক্ত হন। টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল দলে অনেকটা কর্তৃত্বময় পরিবেশ গড়ে তুললেও খেলোয়াড় হিসেবে তিনি সর্বদাই খেলায় কৌতুকময় ভূমিকা রাখতেন।
