Skip to content

৩ অক্টোবর, ১৮৬২ তারিখে নটিংহ্যামশায়ারের সাটন-ইন-অ্যাশফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

‘বয়’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। উইকেট লাভে সক্ষমতাসহ দীর্ঘক্ষণ ধরে একাধারে বোলিং করতে পারতেন। ছোটখাটো গড়নের অধিকারী হলেও পেসের বৈচিত্র্যতা আনয়ণের ফলে দৃশ্যতঃ সময়ে সময়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়তেন। স্পিনার হওয়া সত্ত্বেও প্রায়শঃই দলের বোলিং উদ্বোধনে নামতেন। ১৮৭৯ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ল্যাঙ্কাশায়ার দলের তারকা খেলোয়াড়ের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। ওল্ড ট্রাফোর্ডভিত্তিক দলটির পক্ষে ১৬৯৬ উইকেট দখল করে দ্বিতীয় সর্বাধিক উইকেট সংগ্রাহকে পরিণত হন।

১৮৮৪ থেকে ১৮৯৯ সময়কালে সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে ৩৩ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে ১০০ উইকেট লাভের কৃতিত্বের অধিকারী হন ও রেকর্ড বহিতে নিজেকে ঠাঁই করে নেন। অংশগ্রহণকৃত টেস্টগুলো থেকে ১১৮ উইকেট পেয়েছিলেন। ১৮৮৪-৮৫ মৌসুমে আর্থার শ্রিউসবারি’র নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ১২ ডিসেম্বর, ১৮৮৪ তারিখে অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। জো হান্টার, ববি পিল, উইলিয়াম অ্যাটওয়েল ও উইল্ফ ফ্লাওয়ারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১ রান সংগ্রহ করে জোই পালমারের বলে বিদেয় নেন। স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

১৮৮৬ সালে লর্ডসে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং করেন। ঐ টেস্টে তিনি ৭৪ রান খরচায় ১১ উইকেট দখল করেন। এরফলে লর্ডস অনার্স বোর্ডে নিজেকে তৃতীয় অবস্থানে যুক্ত করার গৌরব অর্জন করেন। ৩৫৩ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দল। অধিনায়ক এ জি স্টিল তাঁকে প্রথম পরিবর্তিত বোলার হিসেবে বোলিং করার সুযোগ দেন। পাঁচ-উইকেট লাভ করেন। এরফলে, সফরকারী দল ৪৫/১ থেকে ১২১ রানে গুটিয়ে যায়। ফলো-অনের কবলে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ৬/৪৫ পান। এরফলে, অস্ট্রেলিয়া দল ১২৬ রানে গুটিয়ে যায়। ইংল্যান্ড দল ইনিংস ও ১০৬ রানে জয় তুলে নেয়।

তাঁর এ সাফল্যে ক্রিকেট বিশ্লেষকেরা অনেকেই বিস্মিত হয়ে পড়েন। কেননা, দুই সপ্তাহ পূর্বে ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে তাঁকে পুরো খেলায় বোলিং করার জন্যে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি।

১৮৮৮-৮৯ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে মেজর হোয়ার্টনের ব্যবস্থাপনায় দক্ষিণ আফ্রিকায় এমসিসি দলের প্রথম সফরে যান। ১২ মার্চ, ১৮৮৯ তারিখে পোর্ট এলিজাবেথের জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে আলবার্ট রোজ-ইন্সের বলে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নমুখী হন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৪/৩৯ ও ২/৩৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ৮ উইকেটে জয়লাভ করলে তাঁর দল দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ২৫ মার্চ, ১৮৮৯ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। বেশ কয়েকবার ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে ডব্লিউএইচ অ্যাশলেকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৬/৪৫। দ্বিতীয় ইনিংসেও একই খেলোয়াড়ের উইকেট লাভ করে পূর্বেকার সাফল্যকে ছাঁপিয়ে যান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৭/১৭। এ পর্যায়ে এবি ট্যানক্রেডের তৃতীয় উইকেট লাভ করে টেস্টে ৫০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৭/১৭ ও ৮/১১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসে নতুন রেকর্ড গড়েন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে দলের একমাত্র ইনিংসে ৬ রান করেছিলেন। ইনিংস ও ২০২ রানে জয়লাভ করে সফরকারীরা ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

১৮৯৯ সালে নিজ দেশে জো ডার্লিংয়ের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২৯ জুন, ১৮৯৯ তারিখে লিডসে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৩/৫৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, আঘাতের কারণে ব্যাট হাতে মাঠে নামতে পারেননি। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

ক্রিকেটের পাশাপাশি হকি ও রাগবি খেলায় দক্ষ ছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে দুই হাজারের অধিক উইকেট লাভ করেছেন। মুমূর্ষু অবস্থায় জীবনের শেষ দিনগুলো অতিবাহিত করেছেন। ফলে, তাঁর মৃত্যুর সংবাদে কাউকে তেমন বিচলিত হতে দেখা যায়নি। ১১ জানুয়ারি, ১৯০২ তারিখে চেশায়ারের হিল্ড গ্রীন এলাকায় মাত্র ৩৯ বছর ১০০ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।