৭ অক্টোবর, ১৮৮৭ তারিখে এসেক্সের লেটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, কোচ ও আম্পায়ার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন তিনি। ১৯২০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
অনেকগুলো বছর এসেক্সের উইকেট-রক্ষক টম রাসেলের সন্তান ছিলেন। লেটনের কাউন্টি গ্রাউন্ডের কাছাকাছি এলাকায় তাঁর জন্ম। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯০৮ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়ের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। অন-সাইডের দিকে খেলতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। এসেক্সের পক্ষে বর্ণাঢ্য খেলোয়াড়ী জীবন অতিক্রম করেছিলেন।
১৯২০ থেকে ১৯২৩ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ১০ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ৫৬.৮৭ গড়ে রান তুলেছিলেন। শুরুটা তেমন ভালো হয়নি। চার ইনিংস থেকে মাত্র ১০ রান তুলতে পেরেছিলেন। শেষ আট টেস্ট থেকে ৭৫ গড়ে ৯০০ রান পেয়েছিলেন। দুই অঙ্কের রানকে তিন অঙ্কে রূপান্তরে স্মরণীয় সাফল্য পেয়েছেন। মাত্র সাতবার ৫০-এর কোটা স্পর্শ করলেও পাঁচটিকেই শতকে পরিণত করেন।
১৯২০-২১ মৌসুমে জনি ডগলাসের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। ১৭ ডিসেম্বর, ১৯২০ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অ্যাব ওয়াডিংটন, সিস পার্কিন ও প্যাটসি হেনড্রেনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ০ ও ৫ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৩৭৭ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়ে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
১৯২২-২৩ মৌসুমে এমসিসি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ডারবানে নিজের শেষ টেস্টে স্বর্ণালী মুহূর্ত অতিবাহিত করেন। প্রথম ইংরেজ ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টের উভয় ইনিংসে শতক হাঁকানোর গৌরব অর্জন করেন। ১৪০ ও ১১১ রান তুলে ইংল্যান্ড দলের ১০৯ রানের বিজয়ে অংশ নেন। তাঁর এ অর্জনকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছিল। বিস্ময়করভাবে এরপর আর কোন টেস্টে অংশ নেননি। এ প্রসঙ্গে উইজডেনে মন্তব্য করা হয় যে, তিনি অসুস্থ ছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংস খেলাকালীন মাঠের চেয়ে বিছানায় থাকার দিকেই অধিক দৃষ্টি দিয়েছিলেন।
১৯২২-২৩ মৌসুমে ফ্রাঙ্ক মানের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৩ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দূর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনে অগ্রসর হন ও ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১৩৫ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ১৪০ ও ১১১ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ১০৯ রানে জয়লাভ করলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে জয় পায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৭১ শতক সহযোগে ৪১.৭৩ গড়ে ২৭৫৪৬ রান সংগ্রহ করেছেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২৭.১৭ গড়ে ২৮৫ উইকেট দখল করেছিলেন। পাশাপাশি ২৯২ ক্যাচ মুঠোয় পুড়েছিলেন। সচরাচর স্লিপ অঞ্চলে ফিল্ডিং করে দক্ষতার পরিচয় দিতেন। ১৯২৩ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচ ও আম্পায়ারিংয়ের দিকে ধাবিত হন। ২৪টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা পরিচালনা করেছিলেন। পেশাদার খেলোয়াড়দের অন্যতম হিসেবে এমসিসি’র সম্মানসূচক সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন।
২৩ মার্চ, ১৯৬১ তারিখে এসেক্সের হুইপস ক্রস এলাকায় ৭৩ বছর ১৬৭ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
