৩ জুলাই, ১৯০২ তারিখে নেলসনের ব্রাইটওয়াটার এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৩০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
নেলসন্স কলেজে বিদ্যালয় জীবন কাটান। ১৯২২-২৩ মৌসুম থেকে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারি ও ওয়েলিংটনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯২২-২৩ মৌসুমে ক্যান্টারবারির পক্ষে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেন। ফেব্রুয়ারি, ১৯২৩ সালে একটি খেলায় অংশ নেন। তবে, পরবর্তী আট বছর তিনি কোন প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেননি। এরপর, ১৯৩০-৩১ মৌসুম থেকে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম পর্যন্ত ওয়েলিংটনে খেলেন। ওতাগোর বিপক্ষে খেলায় ৯৬ রান খরচায় ১০ উইকেট লাভ করলে তাঁকে এক সপ্তাহ পরই টেস্ট দলের সদস্যরূপে মনোনীত করা হয়। প্রথম নিউজিল্যান্ডীয় হিসেবে সাউথ আইল্যান্ডের নেলসন থেকে সরাসরি জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেটে খেলার সুযোগ পান।
১৯৩২ থেকে ১৯৩৩ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে তিনটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৩১-৩২ মৌসুমে নিজ দেশে জক ক্যামেরনের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩২ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। স্মর্তব্য যে, নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার এটিই প্রথম টেস্ট ছিল। ডন ক্লেভার্লি’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১৯ ও ৪ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। এরপর, বল হাতে নিয়ে বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে ২/৭৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলায় স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১২ রানে পরাভূত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
১৯৩২-৩৩ মৌসুমে নিজ দেশে বব ওয়াটের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ৩১ মার্চ, ১৯৩৩ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। কোন উইকেট পাননি ও ওয়ালি হ্যামন্ড ৩৩৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে তৎকালীন বিশ্বরেকর্ড গড়েন। এ পর্যায়ে ওয়ালি হ্যামন্ড তাঁর বল থেকে উপর্যুপরী তিনটি ছক্কা আদায় করে নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ০/৮৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ‘ওয়ালি হ্যামন্ডের টেস্ট’ নামে পরিচিত খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় শেষ হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।
এরপর, আর কোন খেলার জন্যে মনোনীত হননি। তবে, নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে সক্রিয় ছিলেন। টেস্টগুলো থেকে ২৫৪ রান খরচায় দুই উইকেট ও ৮.২৫ গড়ে ৩৩ রান পেয়েছিলেন।
ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ধাবিত হন। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৩ সময়কালে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য হন। এরপর, ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৭ সময়কালে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ক্রিকেটের বাইরে ১৯৩০ সালে পারিবারিক পরিবহণ প্রতিষ্ঠান টিএনএল গ্রুপে যোগ দেন। ১৯৮০ সালে সভাপতির দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর, নিউম্যান্স এয়ার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৬ সালে এটি অ্যানসেটের সাথে একীভূত হন। ১৯৭০ সালে পর্যটন শিল্প, বাণিজ্য ও সম্প্রদায়ে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ নাইট পদবী লাভ করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। মার্টল নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির চার কন্যা ছিল। ২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে নেলসনে ৯৪ বছর ৮২ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
