১৪ নভেম্বর, ১৯৭৪ তারিখে মহারাষ্ট্রের পুনেতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকর অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
ক্রীড়াপ্রেমী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হেমন্ত কানিতকর ভারত ও মহারাষ্ট্রের পক্ষে খেলেছেন। ভ্রাতা আদিত্য গল্ফ এবং বৌমা ও শ্যালিকা রাধিকা তুলপুলে টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম থেকে ২০১৩-১৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষে খেলেছেন।
ডিসেম্বর, ১৯৯৪ সালে মহারাষ্ট্রের সদস্যরূপে বোম্বের বিপক্ষে রঞ্জী ট্রফিতে অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। খেলার একমাত্র ইনিংসটিতে ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৪ রান তুলেছিলেন। এছাড়াও, সুলক্ষ্মণ কুলকার্ণীকে বিদেয় করে নিজস্ব প্রথম উইকেটের সন্ধান পান।
১৯৯০-এর দশকের শেষদিকে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের ঢাকায় অনুষ্ঠিত ত্রি-দেশীয় ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপের চূড়ান্ত খেলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে স্মরণীয় বাউন্ডারিতে ভারতকে জয় এনে দিয়েছিলেন। এক বল বাকী থাকতে পাকিস্তানী স্পিনার সাকলাইন মুশতাকের বল থেকে চারের মার মারেন। তবে, উঁচু স্তরের ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। পিতার ন্যায় তিনিও স্বল্পসংখ্যক টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেছিলেন।
১৯৯৭ থেকে ২০০০ সময়কালে ভারতের পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্ট ও ৩৪টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। উভয় টেস্টই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে নিজ দেশে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হন। ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৯৭ তারিখে ইন্দোরে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করেন। ১৯ জানুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে অনুষ্ঠিত নিজস্ব তৃতীয় ওডিআইয়ে দলের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাউন্ডারি মেরে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। ৪৮ ওভারে ৩১৫ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় ধাবমান থাকাকালে শেষ দুই বলে ৩ রানের প্রয়োজন পড়ে। বিখ্যাত স্পিনার সাকলাইন মুশতাকের বলে মিড-উইকেট বরাবর বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের বিজয় নিশ্চিত করেন। তাৎক্ষণিকভাবে বীর বনে যান। কয়েক বছর পর একান্ত আলাপচারিতায় মন্তব্য করেন যে, অপরপ্রান্তে থাকা জবাগল শ্রীনাথের বল স্পর্শ করার পরামর্শটিই তাঁকে এ সফলতা এনে দিয়েছিল।
দূর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁর আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবন বেশ থেমে থেমে চলে। তবে, সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। তাসত্ত্বেও, ওডিআইয়ে একটিমাত্র অর্ধ-শতকের সন্ধান পেয়েছিলেন। ১৯৯৮ সালে কোচিতে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এ সাফল্য পান।
ভারত ‘এ’ দলের নেতৃত্বে থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যান। এ পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ায় সফররত ভারত দলে অজয় জাদেজা’র শূন্যতা পূরণে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে টেস্ট খেলার জন্যে আমন্ত্রণ বার্তা পান। তবে, টেস্টে শক্তিধর অস্ট্রেলীয় বোলিংয়ের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি। সহস্রাব্দের শেষদিকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দুইটি টেস্টে অংশ নেন।
১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে শচীন তেন্ডুলকরের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। তবে, অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণে বেশ হিমশিম খেয়েছিলেন। দলনায়কের আপ্রাণ প্রয়াস সত্ত্বেও তাঁর দল ১৮০ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ১১ ও ৪৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
একই সফরের ২ জানুয়ারি, ২০০০ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্ট খেলেন। ১০ ও ৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এ টেস্টেও তাঁর দল ইনিংস ও ১৪১ রানে পরাজয়বরণ করে ও ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। সব মিলিয়ে টেস্টে ১৮.৫০ গড়ে ৭৪ রান ও ওডিআইয়ে ১৭.৮৪ গড়ে ৩৩৯ রান সংগ্রহসহ ১৭ উইকেট সংগ্রহ করেছেন।
মহারাষ্ট্রের পক্ষে নিয়মিতভাবে রান পেয়েছেন। খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে রাজস্থানের অধিনায়কত্ব করে দুইবার রঞ্জী ট্রফির শিরোপা বিজয়ে ভূমিকা রাখেন। ২০১২-১৩ মৌসুমের শেষদিকে ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন। সব মিলিয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দশ সহস্রাধিক রান ও ৭৪ উইকেট দখল করেছিলেন।
ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। গোয়া দলের কোচ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন।
