|

হারম্যান গ্রিফিথ

১ ডিসেম্বর, ১৮৯৩ তারিখে ত্রিনিদাদের অ্যারিমায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে বার্বাডোসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯২১-২২ মৌসুম থেকে ১৯৪০-৪১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। শীর্ষসারির পেসার হিসেবে নিজের সেরা দিনগুলোয় যে-কোন ব্যাটসম্যানের সমীহের পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। ১৯২৩ সাথে আঞ্চলিক সীমাবদ্ধতার কারণে ইংল্যান্ড সফরে যেতে পারেননি ও জর্জ ফ্রান্সিসকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছিল। তবে, ১৯২৫-২৬ মৌসুমে এমসিসি দলের বিপক্ষে তাঁরা বার্বাডোস দলকে ইনিংস ব্যবধানে জয় এনে দেন। উভয়ে নয় উইকেট করে পেয়েছিলেন।

১৯২৮ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত সময়কালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বমোট ১৩ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইন, ম্যানি মার্টিনডেল ও ফ্রান্সিসসমৃদ্ধ ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টেস্ট দলের সর্বশেষ জীবিত সদস্য ছিলেন। ১৯২৮ সালে কার্ল নুনেসের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ খেলতে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২৩ জুন, ১৯২৮ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ২ ও ০* রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। পাশাপাশি, বল হাতে নিয়ে ২/৭৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ইনিংস ও ৫৮ রানে পরাজিত হলে সফরকারীরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

সন্দেহাতীতভাবে ১৯৩০-৩১ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে বড় ধরনের কীর্তির সাথে নিজেকে জড়িয়েছিলেন। ৪-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় সিডনিতে সিরিজের চূড়ান্ত ও পঞ্চম টেস্টে ২৫১ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ধাবিত অস্ট্রেলীয়রা ধবল ধোলাই করার দিকে অগ্রসর হয়। উদ্বোধনী জুটি ৪৯ রান তুললে বিল উডফুল ও বিল পন্সফোর্ডকে বিদেয়ের পর দ্য ডনকে প্রথমবারের মতো শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরৎ পাঠিয়েছিলেন। দলে উজ্জ্বীবনী শক্তি আনেন ও সিরিজ শেষে এর রেশ রয়ে যায়। ঐ টেস্টে তাঁর দল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথমবারের মতো জয়লাভ করে। তিনি ৪/৫০ লাভ করেছিলেন।

১৯৩৩ সালে জ্যাকি গ্র্যান্টের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ১২ আগস্ট, ১৯৩৩ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্ট খেলেন। খেলায় তিনি ০/৪৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে উভয় ইনিংসে অভিষেক ঘটা চার্লস ম্যারিওটের বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। ঐ টেস্টে সফরকারীরা ইনিংস ও ১৭ রানে পরাভূত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

তাঁর টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন সংক্ষিপ্ত হলেও দুই দশকের অধিক সময় ধরে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন শেষ হলেও ৪০-এর বয়সে এসেও প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। শেষদিকে পেসের কার্যকারিতা প্রকাশ করতে না পারলেও তাঁর গুরুত্বতা একেবারে কমে যায়নি। এ পর্যায়ে নিখুঁতভাব বজায় রাখতেন ও সময়ে সময়ে বিরতি নিয়ে পুণরায় বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। টেস্ট ও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট – উভয় স্তরের ক্রিকেটেই সফল হয়েছিলেন ও মিতব্যয়ী বোলিংয়ে উইকেট লাভ করতেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। এইচএলভি গ্রিফিথ, জিএইচসি গ্রিফিথ ও ইএইচসি গ্রিফথ নামীয় সন্তানের জনক। ১৮ মার্চ, ১৯৮০ তারিখে বার্বাডোসের ব্রিজটাউনে ৮৬ বছর ১০৮ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • | |

    হার্বি টেলর

    ৫ মে, ১৮৮৯ তারিখে নাটালের ডারবানে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের মর্যাদা পেয়েছেন। ১৯০৯-১০ মৌসুম থেকে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নাটাল, ট্রান্সভাল…

  • |

    জিমি সিনক্লেয়ার

    ১৬ অক্টোবর, ১৮৭৬ তারিখে কেপ প্রভিন্সের সুয়েলেন্ডাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। উঁচু থেকে বলে বৈচিত্র্যমূখী পেস বোলিং করতেন। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করে তুলতে অন্যতম পথিকৃতের ভূমিকায়…

  • |

    ইএম গ্রেস

    ২৮ নভেম্বর, ১৮৪১ তারিখে ব্রিস্টলের ডাউনএন্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। ১৮৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ‘দ্য করোনার’ ডাকনামে পরিচিত ই. এম. গ্রেস ১৮৬০-এর দশকে ইংল্যান্ডের সেরা ক্রিকেটারদের অন্যতম হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন। ক্রিকেটপ্রিয় পরিবারের সন্তান ছিলেন। ড. হেনরি মিলস গ্রেস ও…

  • |

    মনোহর হর্দিকর

    ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের গুজরাতের বরোদায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম কিংবা ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। ১৯৫০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুম থেকে ১৯৬৭-৬৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর…

  • | | |

    রশীদ লতিফ

    ১৪ অক্টোবর, ১৯৬৮ তারিখে সিন্ধু প্রদেশের করাচীতে মুহাজির পরিবারে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। পাশাপাশি, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে দক্ষ ছিলেন। পাকিস্তান দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। উইকেট-রক্ষণ ও ডানহাতে ব্যাটিং করে উভয় বিভাগেই সমান দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। ১৯৯২ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে এক দশকের অধিক সময় পাকিস্তান…

  • | |

    এহসানুল হক

    ১ ডিসেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ২০০০-এর দশকে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ‘সিজান’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। ২০০০-০১ মৌসুম থেকে ২০০৭-০৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।…