১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯০৫ তারিখে নাটালের ডারবানে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। ১৯৩০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নেন। অংশগ্রহণকৃত সবগুলো টেস্টেই দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে নেতৃত্ব দেন।
ছোটখাটো গড়নের অধিকারী ছিলেন। সহপাঠী এইচ. বি. জক ক্যামেরনকে সাথে নিয়ে হিল্টন কলেজ একাদশের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। কয়েক বছর ইংল্যান্ডে অবস্থান করেন। সেখানে ইয়র্কশায়ার লীগে ক্রিকেট খেলতেন ও রাগবিতে কাউন্টি দলটির অধিনায়কত্ব করেন। ১৯২৪-২৫ মৌসুম থেকে ১৯৩৬-৩৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নাটালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৯৩৫ থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ১০ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। সবগুলো টেস্টই নয় মাসের ব্যবধানে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুমে খেলেছিলেন ও দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ইংরেজ পরিবেশের টার্ফ উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা ও সহজাত নেতৃত্বের গুণাবলীর কারণে তাঁকে দলের অধিনায়কত্ব করার জন্যে মনোনীত করা হয়। এরফলে, প্রতিভাবান ক্যামেরনকে ব্যাটিং ও উইকেট-রক্ষণের দিকে মনোনিবেশ করার সুযোগ এনে দেয়।
১৯৩৫ সালে স্প্রিংবকের নেতৃত্বে থেকে ইংল্যান্ড গমন করেন। পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজ পরিচালনা করেন। এ সফরে মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ে নামেন। ১৫ জুন, ১৯৩৫ তারিখে নটিংহামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। চাদ ল্যাংটন, ডাডলি নোর্স, ডেনিস টমলিনসন, এরিক রোয়ান ও বব ক্রিস্পের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ টেস্টে ১১০ মিনিট ব্যয় করে ১৮ রান তুলেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি আমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
একই সফরের ২৯ জুন, ১৯৩৫ তারিখে লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় ২৩ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এ টেস্টে জক ক্যামেরনের ৯০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা দল ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো জয়লাভ করতে সমর্থ হয়। ১৫৭ রানে পরাজয়বরণ করলে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।
লিডসের পরবর্তী টেস্টে তাঁকে সাথে নিয়ে তিনি প্রতিরোধব্যূহ গড়ে তুলে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যান। এ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এরপর, ১৭ আগস্ট, ১৯৩৫ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৩২ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ০ ও ৪০* রান সংগ্রহ করেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়। এরফলে, সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ বিজয় করে। পুরো সিরিজে ব্যক্তিগত সেরা অপরাজিত ৪০ রান সংগ্রহ করলেও পুরো সফরে ২৮.৯৪ গড়ে ১০৪২ রান তুলেছিলেন। ৪০ খেলায় কেবলমাত্র আগস্টে গ্লুচেস্টারশায়ার ও এসেক্সের বিপক্ষে পরাজিত হয়েছিল তাঁর দল। কেমব্রিজ, ট্রেন্ট ব্রিজ ও কার্ডিফে শতক হাঁকান। তন্মধ্যে, ট্রেন্ট ব্রিজে লারউড ও ভোসের বল মোকাবেলায় এ সাফল্য পান।
১৯৩৫-৩৬ মৌসুমে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে ভিক রিচার্ডসনের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৩৫ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৩১ ও ১১ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে বিল ও’রিলি’র শিকারে পরিণত হন। ৯ উইকেটে পরাজয়বরণ করলে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
একই সফরের ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ২৬ ও ২৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৬ রানে পরাজিত হলে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
এ সিরিজে সুবিধে করতে পারেননি। চার টেস্টে তাঁর দল পরাজয়বরণ করে ও একটি টেস্ট ড্রয়ে পরিণত হয়। এ সিরিজে সর্বোচ্চ ৩৯ রান তুলেছিলেন। জোহানেসবার্গের দ্বিতীয় টেস্টে ফিল্ডারদের সমর্থনে আলোকস্বল্পতার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে ইতিহাস গড়েন। এ পর্যায়ে স্ট্যান ম্যাককাবে ১৮৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। টেস্টগুলো থেকে ২০.৪৩ গড়ে ৩২৭ রান তুলেছিলেন। দৃঢ়প্রত্যয়ী মনোভাবের অধিকারী ছিলেন ও সকল খেলোয়াড়ের সমীহের পাত্রে পরিণত হন। দীর্ঘদিন অসুস্থতার কবলে পড়েন। অতঃপর, ২৩ নভেম্বর, ১৯৮০ তারিখে ট্রান্সভালের ইনান্ডা এলাকায় ৭৫ বছর ৭০ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতা বিলি ওয়েড দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে খেলেছেন।
