৮ ডিসেম্বর, ১৯৪২ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মহারাষ্ট্রের অমরাবতী এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৭০-এর দশকে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
ব্যাটিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন ও প্রয়োজনে স্ট্যাম্পের পিছনে অবস্থান করে সরব উপস্থিতি প্রদর্শন করতেন। ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। বেশ সাহসী ছিলেন। কখনো পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন না ও কখনো তাঁকে ভীতিকর অবস্থায় দেখা যায়নি। সুনীল গাভাস্কার তাঁকে ‘শান্ত, স্থির’ হিসেবে ডাকতেন।
জনৈক ভবন ঠিকাদারের সন্তান ছিলেন। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুম থেকে ১৯৭৭-৭৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মহারাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করতেন। ২১তম জন্মদিনের তিনদিন পূর্বে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ও তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলেন। সৌরাষ্ট্রের বিপক্ষে ১৫১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন। এরফলে খান্দু রংনেকরের পর দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে মহারাষ্ট্রের পক্ষে অভিষেকে শতক হাঁকানোর কৃতিত্বের অধিকারী হন। এছাড়াও, কৌশিক আফালে (১৫৮) ও বিজয় জোলের (২০০*) পর অদ্যাবধি অভিষেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে মহারাষ্ট্রের ব্যাটসম্যান হিসেবে রয়েছেন।
অবশ্য পরবর্তী কয়েক মৌসুমে তেমন সুবিধে করতে পারেননি। তাসত্ত্বেও, ১৯৭০-৭১ মৌসুমে রঞ্জী ট্রফির কোয়ার্টার-ফাইনালে দারুণ খেলেছেন। ২৫০ রান তুলেন। এ পর্যায়ে মধুকর গুপ্তের সাথে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩১৪ রান যুক্ত করেছিলেন। মহারাষ্ট্রের ব্যাটসম্যান বাসুদেব নিম্বলকরের ৪৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংসের পর এটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছিল। চূড়ান্ত খেলায় বোম্বের বিপক্ষে মহারাষ্ট্র দল পরাজিত হলেও ঐ মৌসুমে রঞ্জী ট্রফিতে ২ শতক সহযোগে ৯৮.১৪ গড়ে ৬৮৭ রান তুলেছিলেন। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমেও একই অর্জনের পুণরাবৃত্তি ঘটিয়েছিলেন। আবারও দুই শতক নিয়ে ৬৯.৮৮ গড়ে ৬২৯ রান তুলেন। ১৯৭৩ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন।
১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতের ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে অন্যতম সেরা উদীয়মান উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। মহারাষ্ট্র দলের প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত করলেও সুনীল গাভাস্কার, গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথ প্রমূখ ব্যাটসম্যানদের প্রাধান্যতায় কখনো নিজেকে শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে মেলে ধরতে পারেননি। এমনকি, উইকেট-রক্ষণে ফারুক ইঞ্জিনিয়ারের কর্তৃত্বভাব বজায়ের কারণেও উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলার সুযোগ পাননি। তাসত্ত্বেও, প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চমৎকারভাবে অতিবাহিত করেছিলেন। ১৩ শতক সহযোগে ৪২.৭৮ গড়ে ৫০০৬ রান তুলেছেন। মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষণে এগিয়ে আসতেন। ৭০ ক্যাচ ও ২০ স্ট্যাম্পিং করেছেন।
১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে ভারত সফরে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান একাদশের বিপক্ষে দারুণ খেলেন। পশ্চিমাঞ্চলের সদস্যরূপে অ্যান্ডি রবার্টস ও কিথ বয়েসের ন্যায় বোলারদের রুখে দিয়ে অপরাজিত ৭০ রানের সাহসী ইনিংস উপহার দেন। ফলশ্রুতিতে, চিন্নাস্বামীতে সিরিজের প্রথম টেস্টে দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভূক্ত হন।
১৯৭৪ সালে ভারতের পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। উভয় টেস্টই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছিলেন। ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে নিজ দেশে ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২২ নভেম্বর, ১৯৭৪ তারিখে ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিত প্রতিপক্ষীয় ভিভ রিচার্ডস ও গর্ডন গ্রীনিজের সাথে সিরিজের প্রথম টেস্টে তাঁরও একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। সফরকারীরা ২৬৭ রানের ব্যবধানে জয় পেয়ে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। খেলায় তিনি ৬৫ ও ১৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
এরপর, একই সফরের ১১ ডিসেম্বর, ১৯৭৪ তারিখে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ টেস্ট খেলেন। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটিতে তিনি ৮ ও ২০ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। এ টেস্টেও সফরকারীরা ইনিংস ও ১৭ রানে জয় তুলে নেয়।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। রাধিকা তুলপুলে নাম্নী টেনিস খেলোয়াড় ও কোচকে বিয়ে করেন। এ দম্পতির সন্তান ঋষিকেশ কানিতকর ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছে। অপর সন্তান আদিত্য পেশাদার গল্ফার ও গল্ফ কোচ। ১০ জুন, ২০১৫ তারিখে পুনেতে ৭২ বছর ১৮৩ দিন বয়সে বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
