২৫ ডিসেম্বর, ১৯৪৩ তারিখে অকল্যান্ডের গ্রে লিন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। ১৯৭০-এর দশকের সূচনালগ্নে নিউজিল্যান্ডের শীর্ষসারির ধীরগতিসম্পন্ন বোলার ও নিচেরসারিতে বামহাতে ব্যাটিং করতেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
সুনিয়ন্ত্রিত পন্থায় বোলিং কর্মে অগ্রসর হয়েছিলেন। তবে, তাঁর বোলিং তেমন দৃষ্টিনন্দন ছিল না। সব মিলিয়ে মাত্র দুইবার ইনিংসে পাঁচ-উইকেট লাভ করেছিলেন। রানের ধারা রোধকল্পে প্রায়শঃই দীর্ঘ সময় ধরে বোলিং করতেন।
১৯৬৯ থেকে ১৯৭৭ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ৩০ টেস্ট ও নয়টিমাত্র ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালে গ্রাহাম ডাউলিংয়ের অধিনায়কত্বে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২৪ জুলাই, ১৯৬৯ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। ডেল হ্যাডলি ও কেন ওয়াডসওয়ার্থের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ২/২৪ ও ৩/১০২ লাভ করেন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে ০* ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিক দল ঐ টেস্টে ২৩০ রানে জয়লাভ করলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
১৯৬৯-৭০ মৌসুমে উপমহাদেশে নিউজিল্যান্ডের প্রথম টেস্ট বিজয়ে অন্যতম ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। ১৯৭৩ সালে লর্ডসে নিউজিল্যান্ড দল ইংল্যান্ডকে পরাজিত করার প্রকৃত সুযোগ পায়। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭০ ওভার বোলিং করে ৪/১৪৪ লাভ করেন। ফলাফল আনয়ণে ব্যাট হাতে নামতেই অধিক পছন্দ করতেন। তবে, প্রয়োজনের তাগিদে মাঝে-মধ্যেই বাঁধার প্রাচীর গড়ে তুলতেন।
১৯৭০-৭১ মৌসুমে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে রে ইলিংওয়ার্থের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১৭ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ০ ও ২৫ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে ডেরেক আন্ডারউডের শিকারে পরিণত হন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ৪/৪৬ ও ০/১৭ বোলিং বিশ্লেষণসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে নিজ দেশে ইয়ান চ্যাপেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১ মার্চ, ১৯৭৪ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে পৌঁছানোকালে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ২৯* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ০/১১৩ ও ২/৯৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। পাশাপাশি, তিনটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে নিজ দেশে গ্রেগ চ্যাপেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিক দল ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ৬১ রান সংগ্রহ করে টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের সন্ধান পান। এ পর্যায়ে মাত্র এক উইকেট হাতে রেখে তাঁর দল ফলো-অন এড়াতে সক্ষম হয়েছিল। তাঁর পূর্বতন সর্বোচ্চ রান ছিল ২৯। অবশ্য, দ্বিতীয় ইনিংসে ডেনিস লিলি’র বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। এছাড়াও, ১/৯৪ ও ১/৩৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। পাশাপাশি, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
একই সফরের ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় ব্যাট হাতে তিনি ৫ ও ৬ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। এছাড়াও, ১৬ রান খরচ করলেও কোন উইকেটের সন্ধান পাননি। ঐ টেস্টে সফরকারীরা ১০ উইকেটে জয় পায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
তাঁর অপর ভ্রাতা জিওফ হাওয়ার্থ নিউজিল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন। ৭ নভেম্বর, ২০০৮ তারিখে অকল্যান্ডে ৬৪ বছর ৩১৮ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।