৩০ নভেম্বর, ১৯৭১ তারিখে ওয়েলিংটনের লোয়ার হাটে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৯০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৯১-৯২ মৌসুম থেকে ২০০৩-০৪ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে অকল্যান্ড ও ওয়েলিংটনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। মহৎ হৃদয়ের অধিকারী ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে ওয়েলিংটনের পক্ষে খেলেছেন। খেয়ালী বোলিং করলেও বেশ চিত্তাকর্ষক ভূমিকা নিয়ে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরু থেকেই তিনি সমস্যায় জর্জড়িত ছিল। কোনরূপ পরিবর্তন ব্যতিরেকে দীর্ঘদিন চলে গেলেও প্রকৃত অর্থে কোন উত্তরণই ঘটেনি। নিয়মিতভাবে উইকেট পেতেন, চমৎকার স্ট্রাইক রেটের অধিকারী হলেও ছন্দোবদ্ধ দৌঁড়ের সমস্যার সমাধান হয়নি। ডেনিস লিলি ও ডেল হ্যাডলি’র ছত্রচ্ছায়ায় এসে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে ওয়েলিংটনের পক্ষে বেশ ভালোমানের বোলিং করেন। এ পর্যায়ে অবশ্য কিঞ্চিৎ পেস কমিয়ে দেন।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত পাঁচটিমাত্র টেস্ট ও ১১টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৮ এপ্রিল, ১৯৯৪ তারিখে শারজায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যাত্রা শুরু করেন। দৃশ্যতঃ বড় ধরনের বোলিং কৌশল গ্রহণের সমস্যায় ছিলেন। ১৯৯৪ সালে ইংল্যান্ড গমনার্থে তাঁকে কেন রাদারফোর্ডের নেতৃত্বাধীন নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দাগের বাইরে পা ফেলার কারণে পরিচিত ছিলেন। ঐ সফরে একটিমাত্র টেস্ট খেলার সুযোগ পান। প্রথম বল সম্পন্নের পূর্বেই চারটি ওয়াইড করেন। শুরুতেই একটি উইকেট লাভ করেন ও এটিই তাঁর একমাত্র সফলতা ছিল। খেলায় তিনি ১/৯৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ২ জুন, ১৯৯৪ তারিখে নটিংহামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। গেভিন লারসেনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এছাড়াও, উভয় ইনিংসেই শূন্য রানে অপরাজিত অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করেছিলন। গ্রাহাম গুচের দ্বি-শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ইনিংস ও ৯০ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
পরবর্তী প্রায় তিন বছর নিউজিল্যান্ড দলের বাইরে অবস্থান করেন। ১৯৯৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন। সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে অংশগ্রহণকৃত তিন টেস্টে তাঁকে সমস্যার উত্তরণ ঘটতে দেখা যায়। বলে সুইং আনতে না পারলেও মূলতঃ বাউন্স ও কিঞ্চিৎ সিম আনয়ণে অগ্রসর হতেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো তিনি ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন।
১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। এ সিরিজের অধিকাংশ সময়ই হাঁটু ও গোড়ালীর সমস্যায় পড়লে খুঁড়িয়ে চলতেন। তাসত্ত্বেও, তিনি বোলিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। দারুণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করে দলের উজ্জ্বীবনী শক্তিতে পরিণত হন। ১৪ মার্চ, ১৯৯৭ তারিখে হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। কয়েকটি ব্যক্তিগত সফলতার সাথে নিজেকে জড়ান। শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে এইচডিপিকে ধর্মসেনাকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৩/৩৪। এ পর্যায়ে টেস্টে নিজস্ব প্রথম পাঁচ-উইকেট লাভ করেন। ৫/৬৩ ও ১/৩৫ পান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৮* ও ২* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, ড্যানিয়েল ভেট্টোরি’র অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ১২০ রানে জয় পেয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে নেয়।
১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে জিম্বাবুয়ে সফরে যান। ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৩/৫৭ ও ২/৪৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ারের অপরূপ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
বর্ণাঢ্যময় চরিত্রের পাশাপাশি পরিপাটি কেশবিন্যাস করতেন। পরবর্তীতে ওয়েলিংটন ত্যাগ করে অকল্যান্ডের সদস্য হন। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে গ্রীষ্মে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নেন। এরপর, নভেম্বর, ২০০২ সালে গিসবোর্নে নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টসের বিপক্ষে খেলায় ফিরে আসেন। অংশগ্রহণকৃত পাঁচ টেস্ট থেকে ২৯.৩৫ গড়ে মাত্র ১৭ উইকেট দখল করেছিলেন।
