১৯ নভেম্বর, ১৮৪১ তারিখে সারের ডর্কিং এলাকায় জন্মগ্রহণকারী পেশাদার ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষণ কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। এছাড়াও, ডানহাতে শীর্ষসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৮৭০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
মূলতঃ রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। খুব দ্রুত ক্রিকেটে সহজাত দক্ষতার বিকাশে তৎপর হন। ১৮৬১ সালে সারে কোল্টসের পক্ষে খেলেন। ১৮৬২ সালেও তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখেননি। ১৮৬২-৬৩ মৌসুমে টুইকেনহামের ওয়েসলি হাউজে থাকাকালে প্রথমবারের মতো পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আবির্ভূত হন। বল মোকাবেলায় তাঁর যথেষ্ট জ্ঞান ছিল ও সঠিকমানের কৌশল অবলম্বন করে অ্যালেক ব্যানারম্যানের ন্যায় তাঁরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্রিজে কাটিয়ে দেয়ার বাতিক ছিল। এ কারণে তিনি ‘ইয়ং স্টোনওয়ালার’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। তবে, প্রায়শঃই বাজে বলগুলোর উচিৎ শিক্ষা দিতেন।
১৮৬২ থেকে ১৮৮১ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৮৬২ সালে সারের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড নর্থের বিপক্ষে প্রথম খেলেন। ১৮৮১ সালে অবসর গ্রহণের পূর্ব-পর্যন্ত সারে দলের পক্ষে ১৯ বছর খেলেন। সব মিলিয়ে ৩৭৮টি প্রথম-শ্রেণীর খেলার ২৫২টি সারের সদস্যরূপে খেলেন। খেলাগুলো থেকে সব মিলিয়ে ২৩.৭৮ গড়ে ১৫৩১৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
১৮৭৭ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে সব মিলিয়ে মাত্র দুই টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। চার ইনিংস থেকে ৬৮ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। ১৮৭৬-৭৭ মৌসুমে জেমস লিলিহোয়াইটের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। এ সফরেই ক্রিকেটের ইতিহাসে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেয়ার কৃতিত্বের অধিকারী হন। পুলি অবৈধ জুয়াখেলায় জড়িত হলে ক্রাইস্টচার্চের কারাগারে অবস্থান করেন। এরফলে, তাঁর খেলার পথ সুগম হয়। ১৫ মার্চ, ১৮৭৭ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ইংল্যান্ডের পক্ষে প্রথম বল মোকাবেলা করাসহ প্রথম রান ও প্রথম অর্ধ-শতক হাঁকানোর গৌরব অর্জন করেন। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ৬৩ ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৪৫ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
একই সফরের ৩১ মার্চ, ১৮৭৭ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ঐ টেস্টে সফরকারীরা জয় পেলেও খুব কমই ভূমিকা রেখেছিলেন। তবে, জন সেলবি’র সাথে যৌথভাবে উইকেট-রক্ষণের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। উভয় ইনিংসেই ০ ও ১ রান তুলে টম কেন্ডলের বলে বোল্ড হন। ঐ খেলায় সফরকারীরা ৪ উইকেটে জয় পেলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
১৮৬৬ সালে বাকিংহামশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। ১৮৮৩ সালে পেশাদারী পর্যায়ে লিমিংটন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলেছেন। ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর আম্পায়ারিং জগতে প্রবেশ করেন। একটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা পরিচালনা করেছেন। ১৮৬৮ সালে উত্তর আমেরিকা এবং দুইবার – ১৮৭৩-৭৪ ও ১৮৭৬-৭৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে তাঁর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। ১৮৭৫ সালে লোয়ার নরউডের হর্নস ট্যাভার্নের ভূমিপতি হন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৮৭৫ সালে প্রথম পত্নীর মৃত্যু হলে রোজ ই. নাম্নী অপর রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। ১৮৮০ সালে ওয়েস্টনের সান হোটেল ক্রয় করেন। ৮ এপ্রিল, ১৮৮৯ তারিখে লন্ডনের বার্মন্ডসি এলাকায় মাত্র ৪৭ বছর ১৪০ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। অতঃপর, নানহেড এলাকায় তাঁকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালীন ৭, ক্যাটলিন স্ট্রিট, রদারহিদ নিউরোড, লন্ডনে স্বীয় ভগ্নী মিসেস থম্পসনের ঠিকানায় অবস্থান করছিলেন।
