Skip to content

হারিস সোহেল

1 min read

৯ জানুয়ারি, ১৯৮৯ তারিখে পাঞ্জাবের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। বামহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী। পাকিস্তানের পক্ষে সকল স্তরের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

বেশ ধৈর্য্যশীলতা নিয়ে ব্যাটিং করে থাকেন। তেমন উইকেট না পেলেও দারুণ বোলিং করে থাকেন। বলকে তেমন বাঁক খাওয়াতে না পারলেও প্রতিপক্ষের ব্যাটিংয়ে স্থবিরতা আনতে সচেষ্ট হন। ২০০৭-০৮ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে বালুচিস্তান, ফাটা রিজিওন, পাঞ্জাব, শিয়ালকোট ও জারাই তারাকিয়াতি ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, করাচী হোয়াইটস, লাহোর কালান্দার্স, পাকিস্তান ব্লুজ, পেশাওয়ার জালমি, পাঞ্জাব বাদশাহ ও শিয়ালকোট স্ট্যালিয়ন্সের পক্ষে খেলেছেন।

তরুণ অবস্থায় নিজ শহরের দল শিয়ালকোটের পক্ষে খেলতে থাকেন। ক্রিকেটের সূচনা পর্বটি স্বপ্নীল ছিল। ২০০৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ প্রতিযোগিতার শিয়ালকোটের পক্ষে চূড়ান্ত খেলায় শতক হাঁকানোর পর বিমানে চড়ে করাচী যাবার কথা জানেন। পরদিনই বড়দের দলে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। ৭ নভেম্বর, ২০০৭ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত করাচী হোয়াইটস বনাম শিয়ালকোটের মধ্যকার খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে প্রবেশ করেন। এরপর, জেডটিবিএলে চলে যান।

২০১০-১১ মৌসুমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সচেষ্ট হন। ১২টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৬৫৪ রান তুলেন। তন্মধ্যে, ব্যক্তিগত সেরা ২১১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। পরের মৌসুমে সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এরফলে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক খেলায় মুখোমুখি হবার ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। এর কয়েক মাস পর ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কায় টি২০ ক্রিকেট খেলার জন্যে পাকিস্তান দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন।

২০১৩ সাল থেকে পাকিস্তানের পক্ষে টেস্ট, ওডিআই ও টি২০আইয়ে অংশ নিচ্ছেন। ১৯ জুলাই, ২০১৩ তারিখে গ্রোস আইলেটে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওডিআইয়ে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। তেমন উল্লেখযোগ্য সফলতার স্বাক্ষর রাখেননি। শীর্ষসারির ব্যাটসম্যানেরা ব্যর্থ হলে নিয়মিত অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হকের সাথে জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালান। ৩৭ বল মোকাবেলা করে ২৬ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। নির্ধারিত ৫০-ওভারে ২২৯ রান তুললে খেলাটি টাইয়ের দিকে গড়ায়। পরের দুই খেলায় অংশ নিয়ে পাকিস্তান দলের বিজয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন। একই সফরে ২৮ জুলাই, ২০১৩ তারিখে কিংসটাউনে অনুষ্ঠিত টি২০আইয়ে অভিষেক ঘটে। ঐ খেলায় তিনি মাত্র এক রান তুলতে পেরেছিলেন।

নিজেকে তেমন সংবাদ শিরোনামে পরিণত করতে পারেননি। ১৮ মাস দলের বাইরে অবস্থানের পর ডিসেম্বর, ২০১৪ সালে পুণরায় পাকিস্তানের একদিনের আন্তর্জাতিক দলে ফিরে আসেন। দলে ফিরেই স্বরূপ ধারন করেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম ওডিআইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৯ বলে ৮৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। এ পর্যায়ে শহীদ আফ্রিদি’র সাথে জুটি গড়ে দলকে নাটকীয়ভাবে জয় এনে দেন। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেছিলেন। এরফলে, ২০১৫ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় পাকিস্তান দলের ব্যাটিং শক্তিমত্তায় নিজেকে অন্যতম দাবীদাররূপে চিত্রিত করতে সক্ষম হন।

পাকিস্তানের ‘এ’ দলের সদস্যরূপে দূর্দান্ত খেলার স্বীকৃতিস্বরূপ ওডিআই দলে পুণরায় খেলার জন্যে আমন্ত্রণ বার্তা পান। এ পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ১০৩ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ৪০ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন। ২০১৫ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শেষে পাঁচ খেলা থেকে চারটিতে অর্ধ-শতকের সন্ধান পেয়েছেন। তাসত্ত্বেও ধারাবাহিকতা না থাকায় দুই বছর দলের বাইরে অবস্থান করেন। উমর আকমলের শারীরিক সুস্থতায় অস্বাভাবিকতা থাকায় পুণরায় তাঁকে জাতীয় দলে ফিরিয়ে আনা হয়।

২০১৭-১৮ মৌসুমে সরফরাজ আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। সেখানে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হন। ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ তারিখে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ১/৫১ ও ১/৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ৭৬ ও ৩৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, রঙ্গনা হেরাথের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে শ্রীলঙ্কানরা ২১ রানে জয় পেয়ে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

২০১৮-১৯ মৌসুমে সরফরাজ আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত গমন করেন। ১৬ নভেম্বর, ২০১৮ তারিখে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। প্রথম ইনিংসে ৬ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ৩৮ ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/১১ ও ০/১২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এজাজ প্যাটেলের অসাধারণ বোলিং সাফল্যে পাকিস্তান দল ৪ রানে নাটকীয়ভাবে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

২০২০-২১ মৌসুমে মোহাম্মদ রিজওয়ানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ৩ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ১ ও ১৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, কাইল জেমিসনের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর বদৌলতে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৭৬ রানে জয় পেয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।