২৭ মে, ১৯২৬ তারিখে ওয়েলিংটনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৫০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৪৪-৪৫ মৌসুম থেকে ১৯৫৫-৫৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে ক্যান্টারবারির পক্ষে দুই শতক সহযোগে ২৯০ রান তুলেন। এ রান সংগ্রহে তিনি সাড়ে চৌদ্দ ঘণ্টাকাল ক্রিজে অবস্থান করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে, জাতীয় দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ বার্তা লাভ করেন।
১৯৫২ থেকে ১৯৫৬ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে নয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৫১-৫২ মৌসুমে নিজ দেশে জন গডার্ডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ তারিখে অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। অভিষেক খেলায় তেমন সুবিধে করতে পারেননি। ব্যাট হাতে নিয়ে ০ ও ৬* রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।
নিউজিল্যান্ডের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্যে তাঁকে দলে ঠাঁই দেয়া হয়। কিন্তু, অতিরিক্ত ওজনের কারণে পরবর্তীতে দল থেকে বাদ পড়েন। তবে, তিন খেলায় অংশগ্রহণ শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে অস্ট্রেলিয়ায় যাত্রাবিরতিকালে তাঁকে পুণরায় দলে ফিরিয়ে আনা হয়। এ সফরে ৪৫, ৬৭, ৬২ ও ১২১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। এ পর্যায়ে ব্ল্যাক ক্যাপসের সদস্যরূপে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্ল্যাক ক্যাপসদের জয়ে ভূমিকা রাখেন।
১৯৫২-৫৩ মৌসুমে নিজ দেশে জ্যাক চিদামের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ৬ মার্চ, ১৯৫৩ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ২২ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ২২ ও ৪৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৮০ রানে পরাজিত হলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
১৯৫৫ সালে অকল্যান্ডে স্মরণীয় খেলায় অংশ নেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড দল স্বাগতিকদেরকে মাত্র ২৬ রানে গুটিয়ে দেয়। অথচ, এর পূর্বে ক্যান্টারবারির সদস্যরূপে সফরকারীদের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশ নিয়ে ৯৯ রানে রান-আউটের শিকার হয়েছিলেন।
১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে পাকিস্তান ও ভারত সফরে যান। এ মৌসুমে হ্যারি কেভের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ভারত গমন করেন। রান গড়ের দিক দিয়ে বার্ট সাটক্লিফ ও জন আর. রিডের পর অবস্থান করেন। চার টেস্টের দুইটিতে অর্ধ-শতরানের সন্ধান পান। মাদ্রাজে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৬১ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
৬ জানুয়ারি, ১৯৫৬ তারিখে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৫০ রান অতিক্রম করেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ৩১ ও ৬১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১০৯ রানে জয় পেলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।
একই মৌসুমে নিজ দেশে ডেনিস অ্যাটকিনসনের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৬ তারিখে ডুনেডিনে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৩ ও ১৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটি উদ্বোধনে নেমে বার্ট সাটক্লিফের সাথে ৬১ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৭১ রানে পরাভূত হলে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্ট ও প্রথম-শ্রেণীর খেলায় পরিণত হয়।
ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ধাবিত হন। ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৫ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের টেস্ট দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। এছাড়াও, ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকায় দলকে নিয়ে সফলতার সাথে ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেন। এ পর্যায়ে গুরুত্বহীন একটি খেলায় অংশ নিয়ে ৯১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন।
ক্রিকেটের বাইরে পেশাগত জীবনে ব্যারিস্টার ছিলেন। ৯ মার্চ, ১৯৭৩ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে মাত্র ৪৬ বছর ২৮৬ দিন বয়সে আকস্মিকভাবে তাঁর দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুর ছয়দিন পূর্বে ইংল্যান্ড গমনার্থে ১৫-সদস্যের দল গঠন করেছিলেন।
