২৮ জুলাই, ১৯২২ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভারতের প্রথম সেরা অফ-স্পিনার হিসেবে নিজের পরিচিতি ঘটিয়েছেন। বেশ দেরীতে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সাথে সংযুক্তি ঘটে। ১৯৩৯-৪০ মৌসুম থেকে ১৯৫৮-৫৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে হায়দ্রাবাদ ও মুসলিমের সদস্য ছিলেন।
১৯৪৫ সালে চিপকে সাউথ জোনের সদস্যরূপে অস্ট্রেলীয় সার্ভিসম্যানদের বিপক্ষে খেলায় ১১৫ রান খরচায় আট উইকেট কব্জায় নেন। পরবর্তীতে অবশ্য ইংল্যান্ড সফরে তিনি উপেক্ষিত হয়েছিলেন। দল নির্বাচকমণ্ডলী তিনজন লেগ-স্পিনারকে অন্তর্ভুক্তিতে বাদ সাধেন। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া গমনার্থে ডন ব্র্যাডম্যানের নেতৃত্বাধীন দলের বিপক্ষে খেলার জন্যে তাঁকে রাখা হয়নি। এ পর্যায়ে রঞ্জী ট্রফিতে মাদ্রাজ দলকে ৯/৫৩ ও ৫/২৮ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে ৮৮ ও ৯২ রানে গুটিয়ে দিতে যথার্থ ভূমিকা রাখেন।
১৯৪৮ থেকে ১৯৫৮ সময়কালে ভারতের পক্ষে সর্বমোট ২২ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে নিজ দেশে জন গডার্ডের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। মন্টু ব্যানার্জী’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এ শীতকালে এভারটন উইকস ভারত সফরে তাঁর স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। খেলায় জোড়া শতক হাঁকালেও উভয় ক্ষেত্রেই তাঁর বোলিংয়ের বিভ্রান্তির কবলে পড়ে ফিরতি ক্যাচে বিদেয় নেন। সব মিলিয়ে অভিষেক টেস্টে তিনি ছয় উইকেট দখল করেছিলেন। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে ক্লাইড ওয়ালকটের উইকেট নিয়ে ৪/৯৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ০-০ ব্যবধানে চলমান থাকে।
দুই টেস্ট পর ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামে দশ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে দাত্তু ফদকরের সাথে ৩৪ রানের নিরবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে প্রথম জয়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। তবে, উত্তপ্ত মুহূর্তে আম্পায়ার বাপু জোশী নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই স্ট্যাম্প ফেলে খেলা শেষ করে দেন। তিন বছর পর ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট জয়ের অন্যতম রূপকার ছিলেন তিনি। মাদ্রাজে বিনু মানকড়ের সাথে তিনিও চার উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষ ইংরেজদেরকে গুটিয়ে দেন। এরফলে, দুই দশক অপেক্ষা প্রহর কাটিয়ে ভারত দল ইনিংস ব্যবধানে জয় পায়।
ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে নিজেকে অধিক মেলে ধরেছিলেন। গ্রীষ্মে ভারত দল ইংল্যান্ড সফর করে। দলের বাদ-বাকী সঙ্গীরা যখন ফ্রেড ট্রুম্যানের বোলিং তোপে অসহায়ের মতো আত্মসমর্পণ করছিল, তখন তিনি তিন টেস্ট থেকে ১৫ উইকেট দখল করেছিলেন। সংখ্যার দিক দিয়ে ইংল্যান্ডের মোট উইকেট পতনের এক-তৃতীয়াংশের অধিক উইকেট পান। কিন্তু, ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করতে অস্বীকার করলে দল নির্বাচকমণ্ডলী পিছিয়ে যায়। ঐ বছরের শেষদিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪/৩৫ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে আরেকটি টেস্ট জয়ে ভূমিকা রাখেন।
তবে, ১০ বছরব্যাপী খেলোয়াড়ী জীবনে ভারতের অংশগ্রহণকৃত ৩৮ টেস্টের মধ্যে ২২ টেস্টে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে নিজ দেশে জেরি আলেকজান্ডারের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৫৯ তারিখে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। সফরকারীরা ইনিংস ও ৩৩৬ রানে জয় পেয়ে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ১/৫২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৪ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮০ সময়কালে ভারত ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২৮ অক্টোবর, ১৯৯৮ তারিখে অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদে ৭৬ বছর ১১৬ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
