২৭ অক্টোবর, ১৮৭৭ তারিখে নর্দাম্পটনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ও পেশাদার ক্রিকেটার, আম্পায়ার এবং কোচ ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করতেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৩ বছর বয়সে ওয়েলিংবোরা স্কুলের প্রথম একাদশে খেলেন। ১৮৯৫ সালে নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে প্রথমবারের মতো খেলায় অংশ নেন। পরের বছর থেকে স্বরূপ ধারণ করেন। বছরের পর বছর নিজেকে দলের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি ঘটাতে সচেষ্ট ছিলেন। দারুণ খেলা প্রদর্শন সত্ত্বেও ১৯০২ সাল পর্যন্ত দলটি তেমন উল্লেখযোগ্য সাড়া জাগাতে পারেনি। ডিসেম্বর, ১৯০৪ সালে লর্ডসে কাউন্টি দলগুলোর সম্পাদকদের সভায় দলটিকে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় যুক্ত করা হয়। ১৯০১ ও ১৯০২ সালে নিজের সেরা সময় অতিবাহিত করেন। উভয় মৌসুমেই শত উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শসহ ৩৬ গড়ে রান পেয়েছিলেন।
পেশাদার ক্রিকেটারদের আদর্শরূপ ছিলেন। ১৯০০ সালে স্কারবোরা উৎসবে জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের মধ্যকার খেলায় ১২৫ রানের ইনিংস খেলে বেশ সুনাম কুড়ান। ১৯০২ মৌসুমের শেষদিকে ওয়ারউইকশায়ারের হারগ্রিভের সাথে একত্রে নিউজিল্যান্ড গমনার্থে লর্ড হক ও পি. এফ. ওয়ার্নারের অধিনায়কত্বে দলে রাখা হয়। ১৮ খেলার সবকটিতেই তাঁর দল জয়লাভ করে। সাড়ে ছয় গড়ে ১৭৭ উইকেট পেয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভিক্টোরিয়া, নিউ সাউথ ওয়েলস ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার মধ্য দিয়ে এ সফর শেষ হয়। তিন খেলার দুইটিতে দল পরাজিত হয় ও একটি ড্রয়ে পরিণত হয়। তবে, এবারও তিনি দলের সর্বাপেক্ষা কার্যকর বোলার ছিলেন। এছাড়াও, ১৯০৪-০৫ মৌসুমের শীতকালে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে লর্ড ব্রাকলি’র দলের সদস্যরূপে বেশ সফল ছিলেন। তবে, শেষ গ্রীষ্মে তিনি কিছুটা নিষ্প্রভ ছিলেন। শুধুমাত্র তিনিই যে ব্যর্থ ছিলেন তা নয়; নর্দাম্পটনশায়ার কেবলমাত্র দুইটি খেলায় জয় পেয়েছিল।
ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নর্দাম্পটনশায়ার ও নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে অকল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯০৫ থেকে ১৯২২ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন।
১৯০৯ থেকে ১৯১০ সাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে ছয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯০৯ সালে নিজ দেশে মন্টি নোবেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২৭ মে, ১৯০৯ তারিখে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে তাঁর টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, ০/১৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ১০ উইকেটে জয়লাভ করে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
পরবর্তী পাঁচ টেস্ট ১৯০৯-১০ মৌসুমের পরবর্তী শীতকালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে খেলেন। ঐ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। হেনরি লেভসন গাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ১ জানুয়ারি, ১৯১০ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১৬ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ১৬ ও ৬৩ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, ০/২৫ ও ১/১০০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ১৯ রানে জয়লাভ করলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
একই সফরের ১১ মার্চ, ১৯১০ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ৫১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/২৮ ও ৩/৯৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ৯ উইকেটে জয়লাভ করলেও সফরকারীরা ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
১৯০৬ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর আম্পায়ার ও কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। দুইটি টেস্ট পরিচালনা করেছিলেন। রাগবি স্কুল, ক্লিফটন কলেজ ও স্টো স্কুলে কোচ হিসেবে যুক্ত ছিলেন। ৩ মার্চ, ১৯৪৩ তারিখে ব্রিস্টলের ক্লিফটন এলাকায় ৬৫ বছর বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
