১২ জুন, ১৯৩৯ তারিখে নাটালের গ্রেটাউন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৬০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ডারবান হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। দীর্ঘকায় গড়নের অধিকারী ছিলেন। বিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থায় আঘাত পেলে কনুঁই সঠিকভাবে বাঁকাতে পারতেন না। এক পর্যায়ে খেলতেই পারতেন না। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে রোডেশিয়া ও নাটালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৫৭-৫৮ মৌসুম থেকে ১৯৬২-৬৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে ১২.২৩ গড়ে ৩৫ উইকেট পান ও বোলিং গড়ে শীর্ষে ছিলেন। তবে, তাঁর বোলিংয়ের ধরন নিয়ে কিছু সময় দক্ষিণ আফ্রিকায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
১৯৬০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ঐ বছর জ্যাকি ম্যাকগ্লিউ’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। উভয় টেস্টই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন। ৯ জুন, ১৯৬০ তারিখে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। সিড ও’লিন ও পম পম ফেলোজ-স্মিথের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১/৬১ ও ৩/৪৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ৬ ও ১৪ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে ফ্রেড ট্রুম্যানের শিকারে পরিণত হন। সফরকারীরা ১০০ রানে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
এরপর, ২৩ জুন, ১৯৬০ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে নিজস্ব দ্বিতীয় ও সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। কয়েকবার ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে এফএস ট্রুম্যানকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৩/৪৪। এ পর্যায়ে মাইক স্মিথ, পিটার ওয়াকার ও ফ্রেড ট্রুম্যানকে উপর্যুপরী বিদেয় করে হ্যাট্রিক করেন। এরফলে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান বোলার হিসেবে হ্যাট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন। পরবর্তীতে, দীর্ঘ ৬০ বছর পর কেশব মহারাজ দ্বিতীয় দক্ষিণ আফ্রিকান বোলার হিসেবে তাঁর এ সাফল্যের অংশীদার হন। খেলায় তিনি ৪/৮৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ৫ ও ০ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে ব্রায়ান স্ট্যাদামের শিকারে পরিণত হন। সফরকারীরা ইনিংস ও ৭৩ রানে পরাভূত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
তবে, একই খেলায় বল ছুঁড়ে মারার অভিযোগে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে। আম্পায়ার এফএস লি এগারোবার বল ঢিলাকৃতিভাবে নিক্ষেপের দায়ে নো-বল ডাকেন। ঐ খেলাসহ একই মাঠে প্রদর্শনী খেলায়ও পুণঃপুণ বল ছুঁড়ে মারলে তাঁর এ সাফল্য ম্লান হয়ে পড়ে। ওভার শেষ করতে আন্ডারআর্ম বোলিং করলে আবারও আম্পায়ারের বোলিং ভঙ্গীমা পরিবর্তনে দৃষ্টিগোচর না করায় নো-বলের মুখোমুখি হন। সফরের বাদ-বাকী খেলাগুলোয় কেবলই ব্যাটসম্যান হিসেবে ভূমিকা রেখেছিলেন।
আল্ফ গোভারের প্রতিষ্ঠানে সংশোধনে অগ্রসর হন। বোলিং সোজাভাবে করার চেষ্টা চালালেও কর্তৃপক্ষের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেননি। দেশে ফিরে নাটাল থেকে রোডেশিয়ায় চলে যান। তবে, দুই বছরের মধ্যে মাত্র ২৩ বছর বয়সেই খেলোয়াড়ী জীবন শেষ হয়ে যায়। সলসবারিতে নর্থ-ইস্টার্ন ট্রান্সভালের খেলায় আবারও পুণঃপুণঃ নো-বল করেছিলেন। ক্রিকেটের বাইরে সকল ধরনের খেলায় অংশ নিতেন। রোডেশিয়ার পক্ষে হকি খেলায় অংশগ্রহণসহ নাটালের পক্ষে উচ্চ লম্ফ, দীর্ঘ লম্ফ, ত্রি-লম্ফ ও পোল ভল্টে শিরোপা লাভ করেছিলেন। এছাড়াও, নাটালের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পক্ষে রাগবি খেলেছেন। ১৬ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখে নাটালের ডারবানে হৃদযন্ত্রক্রীয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৬৭ বছর ১৫৭ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
