Skip to content

গ্যারি বার্টলেট

1 min read

৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪১ তারিখে মার্লবোরার ব্লেনহেইমে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৬০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেললেও সন্দেহজনক বোলিং ভঙ্গীমার কারণে তাঁর স্বাভাবিক খেলোয়াড়ী জীবন বাঁধাগ্রস্ত হয়। ১৯৫৮-৫৯ মৌসুম থেকে ১৯৬৯-৭০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারি ও সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের পক্ষে খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান।

১৯৬১ থেকে ১৯৬৮ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ১০ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৬০ সালে অস্ট্রেলিয়া গমনার্থে তাঁকে নিউজিল্যান্ড দলে ঠাঁই দেয়া হয়। চারটি অনানুষ্ঠানিক টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। অজি অধিনায়ক ইয়ান ক্রেগ তাঁকে তাঁর দেখা সেরা গতিসম্পন্ন বোলাররূপে আখ্যায়িত করেন। পরের বছর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট সিরিজে অংশ নেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে জন রিডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া ঐ সিরিজের সবকটিতেই তাঁর অংশগ্রহণ ছিল। ৮ ডিসেম্বর, ১৯৬১ তারিখে ডারবানে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ফ্রাঙ্ক ক্যামেরন, আর্টি ডিক, পল বার্টন ও ডিক মৎজের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে ৪০ ও ৩০ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৩৯ ও ০/১১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ৩০ রানে জয় পেলে সিরিজে এগিয়ে যায়।

ঐ সিরিজে সবমিলিয়ে মাত্র ৮ উইকেটের সন্ধান পেয়েছিলেন। তবে, নিচেরসারিতে ব্যাট হাতে নিয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। ২৩.৮৮ গড়ে ২১৫ রান তুলেছিলেন তিনি। এ সিরিজের পর থেকে দলের অনিয়মিত সদস্যে পরিণত হন।

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে প্রথমবারের মতো নিজ দেশে টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নেন। ঐ মৌসুমে হানিফ মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৫ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ঐ খেলায় তিনি ০/৪৭ ও ০/৪৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ১ ও ৪* রান তুলেছিলেন। পাশাপাশি, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় শেষ হয়।

১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে নিজ দেশে মাইক স্মিথের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড দলকে নেতৃত্ব দেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে আইজে জোন্সকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ২/১০। খেলায় তিনি ৩/৬৩ ও ১/৪৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে উভয় ইনিংসে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে নিজ দেশে মনসুর আলী খান পতৌদি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৮ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ইএএস প্রসন্নকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা সাফল্য ছিল ৩/৬৩। এ পর্যায়ে টেস্টে প্রথমবারের মতো পাঁচ-উইকেট লাভ করেন। নিজস্ব সেরা ৬/৩৮ বোলিং করেন। এটিই যে-কোন কিউই বোলারের সেরা সাফল্য ছিল। তাঁর এ সাফল্যে উজ্জ্বীবিত হয়ে নিউজিল্যান্ড দল প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে জয়লাভে সক্ষমতা দেখায়। একই খেলায় ভারতের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সৈয়দ আবিদ আলী তাঁর বোলিংয়ে সন্দেহপোষণ করে প্রতিবাদ জানান। এছাড়াও, প্রথম ইনিংসে তিনি ০/৫২ লাভ করেন। পাশাপাশি, প্রথম ইনিংসে একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ২২ রান সংগ্রহ করেন। স্বাগতিক দল ৬ উইকেটে জয় পেলে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ৭ মার্চ, ১৯৬৮ তারিখে অকল্যান্ডে সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ এ টেস্ট চলাকালে ভারতের দলীয় ব্যবস্থাপক গুলাম আহমেদ আবারও তাঁর বোলিংয়ের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেন। তবে, সকল ধরনের বাঁধার মুখোমুখি হলেও তাঁর বিপক্ষে কখনও বল ছুঁড়ে মারার অভিযোগ আসেনি। খেলায় তিনি ৩/৬৬ ও ১/৪০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ০ ও ১১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পাশাপাশি, একটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেন। সফরকারীরা ২৭২ রানে জয় পেলে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

ভারতের বিপক্ষে এ সিরিজটিই তাঁর সর্বশেষ ছিল। এরপর আর তাঁকে নিউজিল্যান্ড দলের পক্ষে খেলতে দেখা যায়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে উপেক্ষিত হলেও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট চলমান রাখেন। ১৯৬৯-৭০ মৌসুম শেষে ক্রিকেট জগতকে বিদেয় জানান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।