| | |

গ্যারি ব্যালেন্স

২২ নভেম্বর, ১৯৮৯ তারিখে হারারেতে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। বামহাতে মাঝারিসারিতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হন। পাশাপাশি, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী। ইংল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে – উভয় দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

‘গাজ্জা’ ডাকনামে পরিচিত গ্যারি ব্যালেন্স জিম্বাবুয়ের ম্যারোন্ডেরাভিত্তিক পিটারহাউজে অধ্যয়নের পর হ্যারো স্কুলে পড়াশুনো করেন। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের পক্ষে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। তবে, আরও সুযোগ লাভের প্রত্যাশা নিয়ে ইংল্যান্ডে চলে আসেন। হ্যারো থেকে বৃত্তি নিয়ে একই বছর তাঁর কাকা ডেভিড হটনের তত্ত্বাবধানে থেকে ডার্বিশায়ারের পক্ষে খেলার সুযোগ পান। মাত্র ১৬ বছর বয়সে প্রো৪০ খেলায় ৭৩ রানের মনোমুগ্ধকর ইনিংস খেলেন।

২০০৮ সাল থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার এবং জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে মিড ওয়েস্ট রাইনোসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, ডার্বিশায়ার ও সাউদার্ন রক্সের পক্ষে খেলেছেন। ২০০৯ সালে ইয়র্কশায়ার দ্বিতীয় একাদশ ও ২০১২ সালে ইয়র্কশায়ারের ক্যাপ লাভ করেন। ২০১৭ সালে ইয়র্কশায়ারের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। ১১ জুলাই, ২০০৮ তারিখে ক্যান্টারবারিতে অনুষ্ঠিত কেন্ট বনাম ইয়র্কশায়ারের মধ্যকার খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান।

২০১৩ থেকে ২০১৭ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ২৩ টেস্ট ও ১৬টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ২০১৩-১৪ মৌসুমে  দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ৩ জানুয়ারি, ২০১৪ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাঁর টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। টেস্ট অভিষেকের পূর্বে ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে ডাবলিনের মালাহাইডে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করেন।

২০১৪ সালে সফররত শ্রীলঙ্কা দলের মুখোমুখি হন। লর্ডস টেস্টে ১০৪ রানের অপরাজিত শতক হাঁকিয়ে লর্ডস অনার্স বোর্ডে ঠাঁই করে নেন। এ পর্যায়ে এটিই তাঁর প্রথম শতরানের ইনিংস ছিল। তাঁর শতকের পূর্বেই অবশ্য এ খেলায় জো রুট, কুমার সাঙ্গাকারাঅ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ শতরানের ইনিংস খেলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তিন নম্বর অবস্থানে নেমে এ সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। এটি তাঁর নিজস্ব দ্বিতীয় টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।

ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যাটসম্যানের এ ইনিংসটি ২৫২ মিনিটব্যাপী স্থায়ী ছিল। ১২টি চার ও একটি ছক্কার মারে ইনিংসটি সাজান। স্বাগতিক ইংল্যান্ড দল শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় খেলাটি ড্রয়ে পরিণত করতে সমর্থ হয়। এ পর্যায়ে শ্রীলঙ্কা দল এক উইকেট পতন ঘটাতে পারেনি।

২০১৪ সালে এক পঞ্জিকাবর্ষে দ্বিতীয়বারের মতো লর্ডসে দ্বিতীয়বারের মতো শতরানের সন্ধান পান। সফরকারী ভারতের বিপক্ষে ১১০ রানের ইনিংস খেলে এ সফলতার দাবীদার হন। তিন নম্বর অবস্থানে মাঠে নামেন। শুরুতেই উইকেট হারালে ২০৩ বল মোকাবেলায় ১৫টি চারে এ রান তুলেন। তাসত্ত্বেও তাঁর দল পঞ্চম দিনে সফরকারীদের কাছে ৯৫ রানে পরাভূত হয়।

এক পর্যায়ে মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন। ২০২২-২৩ মৌসুম থেকে জিম্বাবুয়ের পক্ষে একটি টেস্ট, ৫টি ওডিআই ও একটি টি২০আইয়ে অংশ নেন। ঐ মৌসুমে ক্রেগ ব্রাদওয়েটের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখে বুলাওয়েতে অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। মনোমুগ্ধকর শতক হাঁকান। এরফলে, কেপলার ওয়েসেলসের পর দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে দুই ভিন্ন দেশের প্রতিনিধিত্ব করে শতরান করার গৌরব অর্জন করেন। খেলায় তিনি ১৩৭* ও ১৮ রান সংগ্রহ করেন। তবে, তেজনারায়ণের চন্দরপলের অসাধারণ দ্বি-শতক সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

সব মিলিয়ে ইংল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের সদস্যরূপে সর্বমোট ২৪ টেস্ট ও ২১টি ওডিআই ও একটিমাত্র টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯ এপ্রিল, ২০২৩ তারিখে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন।

২০১৪ সালে আইসিসি এমার্জিং বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন। এরপর, ২০১৫ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেন।

Similar Posts

  • | |

    কার্ল রেকেম্যান

    ৩ জুন, ১৯৬০ তারিখে কুইন্সল্যান্ডের ওন্ডাই এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও রাজনীতিবিদ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। দলীয় সঙ্গীদের কাছে ‘মক্কা’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। শক্ত মজবুত গড়নের অধিকারী ছিলেন। নিজের সময়কালে অন্যতম কার্যকর ফাস্ট বোলার হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন। ব্যাটসম্যানদের…

  • |

    ম্যাথু নিকোলসন

    ২ অক্টোবর, ১৯৭৪ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের সেন্ট লিওনার্ডস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারির কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করতেন। ১৯৯০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ‘নিকো’ ডাকনামে ভূষিত ম্যাথু নিকোলসন ১.৯৭ মিটার উচ্চতার অধিকারী। নিউ সাউথ ওয়েলসে খেলা শিখতে শুরু করেন। বিদ্যালয়ের তারকা খেলোয়াড়…

  • | | |

    কেন রাদারফোর্ড

    ২৬ অক্টোবর, ১৯৬৫ তারিখে ওতাগোর ডুনেডিনে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও কোচ। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৮২-৮৩ মৌসুম থেকে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ওতাগো এবং দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে গটেংয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তন্মধ্যে, গটেং…

  • |

    ফ্রেড মার্টিন

    ১২ অক্টোবর, ১৮৬১ তারিখে কেন্টের ডার্টফোর্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন। ১৮৯০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ‘নাটি’ ডাকনামে পরিচিত ফ্রেডরিক মার্টিনকে ‘নাটি মার্টিন’রূপে পরিচিতি ঘটানো হয়েছে। ১৮৮৫ থেকে ১৯০০ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি…

  • | |

    কলিন ক্রফ্ট

    ১৫ মার্চ, ১৯৫৩ তারিখে ব্রিটিশ গায়ানার ল্যাঙ্কাস্টার ভিলেজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘ক্রফ্টি’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চির লিকলিকে গড়নের অধিকারী ছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে গায়ানা এবং ইংরেজ…

  • | |

    রবিন পিটারসন

    ৪ আগস্ট, ১৯৭৯ তারিখে কেপ প্রভিন্সের পোর্ট এলিজাবেথে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেছেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংশৈলীর স্বাক্ষর রেখেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। কোন স্পিন কোচের শরণাপন্ন হওয়া ব্যতিরেকে খেলার জগতে প্রবেশ করেন। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার…