২ নভেম্বর, ১৯০৮ তারিখে স্টাফোর্ডশায়ারের ওয়ালসল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। দলে মূলতঃ ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে নিয়োজিত থাকতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
১৯২৮ থেকে ১৯৩৬ সময়কাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অব্যাহত রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নর্দাম্পটনশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নিজের সেরা দিনগুলোয় অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ব্যাটসম্যানরূপে খেলতেন। দূর্বলতর নর্দাম্পটনশায়ারের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। যথেচ্ছ সংখ্যায় রান সংগ্রহ করতে না পারলেও আকর্ষণীয় ব্যাটিংয়ে দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসা কুড়াতেন।
ব্যতিক্রমী পায়ের কারুকাজের সাথে ক্রিজের সর্বত্র খেলতেন। কিছু অসাধারণ স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি ছোটাতেন। ডান কাঁধকে মিড-অফের দিকে নিয়ে দুই চোখা দৃষ্টিতে দাঁড়াতেন। হাতগুলো ব্যাটের হাতলের উপরে রাখতেন। পাশাপাশি এসেক্সের বিপক্ষে অভিষেক খেলায় ৫টি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। এরপর থেকেই কাছাকাছি এলাকায় দণ্ডায়মান থেকে ক্যাচ দর্শনীয়তার সাথে মুঠোয় পুড়তেন।
১৯৩১ থেকে ১৯৩৫ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে ছয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৩১ সালে নিজ দেশে টম লরি’র নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ২৭ জুন, ১৯৩১ তারিখে লর্ডসে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। এ টেস্টে নিজেকে উজার করে খেলেন। জন আর্নল্ডের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৯ ও ২৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
একই সফরের ২৯ জুলাই, ১৯৩১ তারিখে লন্ডনের কেনিংটন ওভালে অনুষ্ঠিত সফররত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ২৭ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ৪০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এ পর্যায়ে হার্বার্ট সাটক্লিফের (১১৭) সাথে ৮৪ রানের জুটি গড়েন। তবে, ভুল বোঝাবুঝির ফলে তাঁকে রান-আউটে বিদেয় নিতে হয়। সফরকারীরা ইনিংস ও ২৬ রানে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে। অস্ট্রেলিয়া সফরে তাঁকে দলে রাখা হয়নি।
১৯৩৩ সালে এক মৌসুমে ২১৪৯ রান সংগ্রহ করেন। উপর্যুপরী দুই খেলায় নর্দাম্পটনশায়ারের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভঙ্গ করেন। ফলশ্রুতিতে, নিজ দেশে জ্যাকি গ্র্যান্টের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় বিপক্ষে খেলার জন্যে তাঁকে পুণরায় দলে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ১২ আগস্ট, ১৯৩৩ তারিখে লন্ডনের ওভালে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ম্যানি মার্টিনডেলের বডিলাইন বরাবর বোলিংয়ের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ান ও দলের একমাত্র ইনিংসে ১০৭ রানের মনোরম ইনিংস উপহার দেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ইনিংস ও ১৭ রানে পরাভূত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।
১৯৩৩-৩৪ মৌসুমে ডগলাস জারডিনের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সদস্যরূপে ভারত গমন করেন। প্রস্তুতিমূলক খেলাগুলোয় তেমন রান না পেলেও টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে খেলেন। প্রথম ইনিংসে ৮৫ রান তুলে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন।
১৯৩৫ সালে নিজ দেশে হার্ভি ওয়েডের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে অংশ নিয়ে ৬৩ ও ৫৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
একই সফরের ১৭ আগস্ট, ১৯৩৫ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ২০ রান সংগ্রহ করেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
জ্যাক হবসের অবসর গ্রহণের পর দলে তাৎক্ষণিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালান। হার্বার্ট সাটক্লিফের সহজাত ও যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে তাঁকে চিত্রিত করা হয়েছিল। গাড়ী দূর্ঘটনায় কার্যতঃ তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। আগস্ট, ১৯৩৬ সালে তিনি তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের অন্যতম সেরা ইনিংস খেলেছিলেন। পরবর্তীতে শিরোপাধারী ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে ২৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। চেস্টারফিল্ডে ঐ খেলা থেকে ফেরার পথে দলীয়সঙ্গী রেজি নর্থওয়েকে নিয়ে ভ্রমণকালীন নিচে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে নর্থওয়ে নিহত হন ও তিনি ডানহাতে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হন। খেলার জগতে ফেরার জন্যে বিশেষভাবে চিকিৎসা নেন, বৈদ্যুতিক শকসহ বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালান। ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত চিকিৎসা করলেও আর ফিরতে পারেননি। এরপর তিনি ক্রিকেটের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ ঘটান ও স্বাভাবিক জীবনযাপনে অগ্রসর হন। ২৩ জানুয়ারি, ১৯৮৩ তারিখে ডরসেটে ওয়েস্টবোর্ন এলাকায় ৭৪ বছর ৮২ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
