৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। শ্রীলঙ্কার পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
দীর্ঘদেহী, লিকলিকে ও উন্মুক্ত বক্ষের অধিকারী ডানহাতি ফাস্ট বোলার। অফ-স্ট্যাম্প বরাবর বল ফেলাসহ বলকে বাঁক খাওয়ানোর কারণে নিজেকে বিপজ্জ্বনক বোলারে পরিণত করেছিলেন। ছন্দোবদ্ধ দৌঁড়ে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। পপিং ক্রিজে ডান পা সমানে ফেলে নিখুঁত নিশানা বরাবর উইকেট লক্ষ্য করে বল সম্মুখ পানে ছুঁড়তেন। ডানহাতে ব্যাটিং কৌশল রপ্ত করেছেন। ফলশ্রুতিতে, বিভিন্ন অবস্থানে ব্যাটিংয়ের জন্যে আমন্ত্রিত হয়ে থাকেন। ‘ফারা’ ডাকনামে পরিচিত ফারভিজ মাহারুফ নিচেরসারিতে মারকূটে ভঙ্গীমায় ব্যাটিং করে দ্রুতলয়ে রান তুলে থাকেন। কঠোর পরিশ্রম করে অল-রাউন্ডার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। শ্রীলঙ্কার অন্যতম করিৎকর্মা অল-রাউন্ডার হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। নেপালের এভারেস্ট প্রিমিয়ার লীগে কাঠমান্ডু কিংস ইলাভেনের পক্ষে খেলেছেন।
২০০১-০২ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে ব্লুমফিল্ড ক্রিকেট ও অ্যাথলেটিক ক্লাব, কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব, নন্দেস্ক্রিপ্টস ক্রিকেট ক্লাব ও ওয়েয়াম্বা এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, এশিয়া একাদশ, ক্রিকেট কোচিং স্কুল, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ও সাউদার্ন এক্সপ্রেসের পক্ষে খেলেছেন।
শুরুতে উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। তবে, এক খেলায় ছয় উইকেট লাভের ফলে ফাস্ট-বোলিংয়ের দিকেই মনোনিবেশ ঘটাতে থাকেন। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো নিজের পরিচিতি ঘটান। এরপর, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়কত্ব করে শ্রীলঙ্কার জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীকে বিমোহিত করেন। ফলশ্রুতিতে, জিম্বাবুয়ে সফরে জাতীয় দলের সদস্যরূপে সম্মুখসারিতে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করেন। এভাবেই তাঁর সামনের দিকে এগিয়ে চলা।
আট বছর বয়সে ব্যাট হাতে নেয়ার সুযোগ পান। অধিকাংশ শ্রীলঙ্কান শিশুর ন্যায় তিনিও ভিন্ন ভিন্ন ক্রীড়ার সাথে জড়িত ছিলেন। ফুটবল ও রাগবির সাথে শুরুরদিকের বছরগুলোয় যুক্ত হন। ওয়েসলি কলেজে ভর্তি হন। এখানে অধ্যয়নকালেই ক্রিকেটে মনোনিবেশ ঘটাতে থাকেন। শুরুতে উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও মাঝে-মধ্যে বোলিং করতেন। কেবলমাত্র একদিনের ঘটনাই তাঁর জীবন পাল্টে ক্রিকেট পিচের দিকে নিয়ে যায়। কলেজের খেলায় পাঁচজন দলীয় সঙ্গী সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হলে তাঁদের শূন্যতা পূরণে বল হাতে নেন। খেলায় তিনি হ্যাট্রিক লাভ করেন ও বোলিংয়ে মনোনিবেশ ঘটানোর লক্ষ্য উইকেট-রক্ষণের দায়িত্ব ছেঁড়ে দেন।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পক্ষে খেলেছেন। এছাড়াও, অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে নিয়ে চারবার বিদেশ সফরে নেতৃত্ব দেন। তন্মধ্যে, ২০০৩-০৪ মৌসুমে ভারতে ত্রি-দেশীয় সিরিজে অংশ নেন। ঐ প্রতিযোগিতায় ১১.৭৭ গড়ে নয় উইকেট দখল করেন। ফলশ্রুতিতে, ২০০৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত যুবদের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়। দল বিশ্বকাপে বেশীদূর এগুতে না পারলেও অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বোলারে পরিণত হন। ছয় খেলায় ১৬.৬৪ গড়ে ১৪ উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯.৩ ওভারে ৪/২৮ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। এছাড়াও, উইলো হাতে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯০ বলে অমূল্য ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন।
২০০৪ থেকে ২০১৬ সময়কালে শ্রীলঙ্কার পক্ষে সর্বমোট ২২ টেস্ট, ১০৯টি ওডিআই ও আটটিমাত্র টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ২০০৪ সালে মারভান আতাপাত্তু’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের সাথে জিম্বাবুয়ে গমন করেন। ২৫ এপ্রিল, ২০০৪ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। স্বপ্নীল অভিষেক ঘটে। এ পর্যায়ে তাঁর বোলিং বিশ্লেষণ ছিল ৩-১-৩-৩। ফলশ্রুতিতে, স্বাগতিক দল ওডিআইয়ের ইতিহাসে নিজেদের সর্বনিম্ন ৩৫ রানে গুটিয়ে যায়। দুই খেলা নিয়ে গঠিত সিরিজে সব মিলিয়ে ৫ উইকেট দখল করেন।
দশ দিন পর একই সফরের ৬ মে, ২০০৪ তারিখে হারারেতে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ২ উইকেট ও ৪০ রান সংগ্রহ করেন। তবে, মুত্তিয়া মুরালিধরনের অনবদ্য অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্যে সফরকারীরা ইনিংস ও ২৪০ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। ২০০৪ সালে অভিষেকের পর থেকে ২০০৯ সালের শুরুরদিক পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা দলে স্বীয় স্থান পাকাপোক্ত করে ফেলেন ও একদিনের দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন।
২০০৪ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতিযোগিতায় অসাধারণ বোলিং করেন। উপযুক্ত পিচে বলকে সুইং করানোয় দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। সিমারদের উপযোগী পিচে দুই খেলা থেকে ৪ উইকেট দখল করেন। তিন খেলা থেকে ৬ উইকেট ও ৯৬ রান তুলে স্বীয় অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনে অগ্রসর হন। তন্মধ্যে, একটি খেলায় ৬৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
২০০৪-০৫ মৌসুমে নিজ দেশে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ৪ আগস্ট, ২০০৪ তারিখে গলেতে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৬* ও ৩* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৪২ ও ০/৪ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। মাহেলা জয়াবর্ধনে’র অসাধারণ দ্বি-শতক সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
একই মৌসুমে মারভান আতাপাত্তু’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ১১ এপ্রিল, ২০০৫ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ১২ ও ৩৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৯৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তবে, ল্যু ভিনসেন্টের অসাধারণ দ্বি-শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৩৮ রানে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।
২০০৫ সালে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অংশগ্রহণে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়ান অয়েল কাপ ত্রি-দেশীয় সিরিজে চামিণ্ডা ভাস আঘাতপ্রাপ্ত হলে বোলিং উদ্বোধনে অংশ নেন। ডাম্বুলায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় ওডিআইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০-৫-৯-৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এ পরিসংখ্যানটি ওডিআইয়ে অন্যতম সেরা মিতব্যয়ী বোলিংয়ের মর্যাদা পায়।
ওডিআইয়ের সাথে তুলনান্তে দীর্ঘ সংস্করণের খেলায় তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। তাসত্ত্বেও ২০০৬ সালে কলম্বোয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্টে ব্যাট হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিজয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন। শ্বাসরুদ্ধকর খেলায় এক উইকেট জয় পায়। ৩৫২ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় নেমে সপ্তম উইকেটে মাহেলা জয়াবর্ধনে’র সাথে ৬২ রান যুক্ত করেন। লাসিথ মালিঙ্গাকে সাথে নিয়ে জয় এনে দেন ও সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা আনেন।
২০০৬ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাছাইপর্বের খেলায় নিজস্ব সেরা ওডিআই বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। পূর্বতন শিরোপাধারী ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। ৯-২-১৪-৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করালে প্রতিপক্ষকে ৮০ রানে গুটিয়ে ফেলতে বিরাটভাবে সহায়তা করেন। এরফলে, শ্রীলঙ্কা দল জয়লাভ করে। এ পরিসংখ্যানটি প্রতিযোগিতার ইতিহাসের সেরার মর্যাদা পায়। শহীদ আফ্রিদি’র গড়া ৫/১১ বোলিং পরিসংখ্যানের রেকর্ড ভেঙ্গে যায় ও ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। ব্রায়ান লারাকে স্ট্যাম্পের সামনে ফাঁদে ফেলার পর ওয়াভেল হাইন্ডস, ডোয়েন ব্র্যাভো, মারলন স্যামুয়েলস, ডোয়েন স্মিথ ও কার্লটন বাউকে বিদেয় করেন। খেলার পর প্রতিক্রিয়ায় এ সাফল্যটি সাধারণ ঘটনারূপে আখ্যায়িত করেন। সব মিলিয়ে ছয় খেলায় ১৫.৮৩ গড়ে ১২ উইকেট দখল করেন ও সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে যান। পাশাপাশি ২০০৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষেও দূর্দান্ত সিরিজ খেলেন। জুন, ২০০৬ সালে সাউদাম্পটনে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি২০আইয়ে অভিষেক হয়। খেলায় কোন উইকেটের সন্ধান পাননি ও ৪ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন।
টেস্ট ক্রিকেটে কেবলমাত্র মাঝে-মধ্যে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাসত্ত্বেও, মাহেলা জয়াবর্ধনে’র নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো অংশ নেন। বারমুডার বিপক্ষে ৪/২৩ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি ওডিআই থেকে ১০ উইকেট দখল করেন। একই বছরে নিজস্ব ৭৫তম ওডিআইয়ে ১০০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। বিখ্যাত স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরনের চেয়ে একটি খেলা কম খেলে এ কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছিলেন। সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওডিআইয়ে কেভিন পিটারসনকে বিদেয় করে শ্রীলঙ্কার দ্রুততম ১০০ ওডিআই উইকেট পান।
তবে, আঘাতের কারণে তাঁর খেলায় বিরূপ প্রভাব ফেলে ও খেলোয়াড়ী জীবন শেষ হবার আশঙ্কা দেখা দেয়। উদীয়মান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের উত্থানে দলে স্থান লাভ অনিশ্চয়তার দিকে এগুঁতে থাকে। ইতোমধ্যে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েছেন ও ২০০৮ সালে শারীরিক সক্ষমতা যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়লে ২০০৮ সালের এশিয়া কাপে অংশ নিতে পারেননি। ক্যাস্ট্রল এশিয়ান ক্রিকেট পুরস্কার প্রবর্তনের উদ্বোধনী বছরে সেরা ওডিআই বোলারের পুরস্কার লাভ করেন। তাসত্ত্বেও, কমপক্ষে আঠারো মাস মাঠের বাইরে অবস্থান করতে হয়। এ পর্যায়ে তাঁর পরিবর্তে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে স্থলাভিষিক্ত করা হলেও সফল হননি। ফলশ্রুতিতে, পুণরায় তাঁকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। ২০১০ সালের এশিয়া কাপে স্বীয় সাফল্য বয়ে আনেন। ডাম্বুলায় ভারতের বিপক্ষে হ্যাট্রিকসহ ৫/৪২ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। রবীন্দ্র জাদেজা, প্রবীণ কুমার ও জহির খানকে উপর্যুপরী বিদেয় করে এ সাফল্য পান।
২০০৮ সালের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের উদ্বোধনী আসরে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের সাথে $২২৫,০০০ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হন। অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করে স্বীয় সক্ষমতা তুলে ধরেন। ঐ প্রতিযোগিতায় ১৫ উইকেট দখল করেছিলেন। এক পর্যায়ে ব্যাট হাতে নিয়েও সফল হন। রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক শেন ওয়ার্নের এক ওভার থেকে ২৬ রান আদায় করে নেন।
আঘাতে জর্জরিত হলে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা দলে জায়গা পাননি। টেস্ট ক্রিকেট থেকে লাসিথ মালিঙ্গা’র অবসর গ্রহণ এবং দিলহারা ফার্নান্দো ও নুয়ান প্রদীপের আঘাতের কবলে পড়লে ইংল্যান্ড গমনার্থে তাঁকে পুণরায় দলে ফিরিয়ে আনা হয়। এক পর্যায়ে দলে ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণতর হতে থাকলে ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটের সাথে যুক্ত হবার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১১ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে ক্লাব ক্রিকেটে অংশ নিতে থাকেন। কাউন্টি অভিষেকেই শতরান করে রেকর্ড গড়েন। একই বছরে টেস্ট দলে খেলার জন্যে পুণরায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ছন্দ ফিরিয়ে আনতে হিমশিম খান ও তৃতীয় টেস্ট থেকে বাদ পড়েন।
২০১১ সালে তিলকরত্নে দিলশানের নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ৩ জুন, ২০১১ তারিখে লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। মোটেই সুবিধে করতে পারেননি। ০/৫৭ ও ০/৭০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, দলনেতার অনবদ্য ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
মুত্তিয়া মুরালিধরন ও চামিণ্ডা ভাসের অবসর গ্রহণের ফলে দলের শূন্যতা পূরণে তাঁর উপর অনেক আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। তবে, শারীরিক সুস্থতার প্রশ্ন দলের বাইরে থাকতে হয়। ওডিআইয়ে সফলতা পেলেও টেস্টে এ ধারার পুণরাবৃত্তি ঘটাতে পারেননি। ইংল্যান্ডের মাটিতে তিন টেস্টে অংশ নিয়ে মাত্র এক উইকেট দখল করেছিলেন। কলম্বোয় সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে একবার চার-উইকেটের সন্ধান পেলেও তেমন উল্লেখযোগ্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এক পর্যায়ে ওডিআইয়েও তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার কবলে পড়েন ও শ্রীলঙ্কা দল থেকে বাদ পড়েন।
২০০৮-০৯ মৌসুমে শোচনীয় পরাজয়ের কবলে পড়লে ওডিআই দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দলে আসা-যাওয়ার পালায় থাকেন। ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ব্যাংক ত্রি-দেশীয় সিরিজে পুণরায় অংশ নিলেও ব্যর্থ হন। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ প্রতিযোগিতা শেষে দল থেকে বাদ পড়েন। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও থিসারা পেরেরা অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দলকে সামাল দেয়ায় তাঁকে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরে যেতে হয়। ২০১৬ সালে বিস্ময়করভাবে তাঁকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ড গমনার্থে সীমিত-ওভারের দলে খেলার জন্যে মনোনীত করা হয়। জুন, ২০১০ সাল থেকে জুন, ২০১৬ সালের মধ্যে মাত্র ১৭টি ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন।
সব মিলিয়ে ওডিআইগুলো থেকে ১০৪২ রান ও ১৩৩ উইকেট পান। টেস্ট থেকে ৫৫৬ রান ও ২৫ উইকেট দখল করেন। বোলিংকালে গতির তুলনায় নিখুঁততার দিকেই অধিক মনোযোগী ছিলেন। ব্যাটিংকালে কৌশল গ্রহণের তুলনায় লম্বা হাতল ব্যবহার করতেন।
