৬ নভেম্বর, ১৮৭৬ তারিখে লন্ডনের পেকহাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। দলে মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। স্লিপ অঞ্চলে দূর্দান্ত ফিল্ডিং করতেন।
ঘরোয়া পর্যায়ের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ার ও সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, লন্ডন কাউন্টির পক্ষে খেলেছেন। নিজের দিনগুলোয় সেরা ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। ১৮৯৬ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। সচরাচর তিন নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নামতেন। শক্তিধর ড্রাইভের পাশাপাশি নির্ভীকচিত্তে পুল মারতেন। এগুলো দেখতে সর্বদাই আকর্ষণীয় ছিল। ১৮৯৬ সালে সারে দলের পক্ষে প্রথমবারের মতো খেলতে নামেন। এরপর থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পূর্বেকার ১৫ বছর দলের নিয়মিত খেলোয়াড়ের মর্যাদা পান।
১৮৯৯ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত প্রত্যেক মৌসুমে সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। ১৯০৬ সালে নিজস্ব স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেছেন। ঐ বছর ৪৫ ঊর্ধ্ব গড়ে ২৩০৯ রান তুলেছিলেন। ১৯০৯ সালে ওভালে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৭৬ রান তুলেছিলেন। এ পর্যায়ে জ্যাক হবসের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৩৭১ রানের জুটি গড়েন। অদ্যাবধি সারে দলের পক্ষে তাঁদের এ রেকর্ড বহাল তবিয়তে টিকে আছে।
১৯০৫-০৬ মৌসুম থেকে ১৯১২-১৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯০৫-০৬ মৌসুমে পেলহাম ওয়ার্নারের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ২ জানুয়ারি, ১৯০৬ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ফ্রেডরিক ফেন, জ্যাক ক্রফোর্ড ও ওয়াল্টার লিসের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ২০ ও ৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ১/২৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ১ উইকেটের নাটকীয় জয় পেয়ে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের সবকটিতেই অংশ নেন ও মাত্র ৬৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। দ্বিতীয় টেস্টে ৩৫ রান তুলেন ও কেপটাউনের তৃতীয় টেস্টে জোড়া শূন্য রান সংগ্রহ করেন। ঐ সিরিজে স্বাগতিক দল প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় করে।
এছাড়াও, ১৯০৭-০৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। তবে, খেলার মান বেশ নিম্নমূখী থাকায় তাঁকে কোন টেস্টে খেলানো হয়নি। আগস্ট, ১৯০৯ সালে নিজ দেশে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওভাল টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ঐ খেলায় স্বাগতিকরা জয় পেলেও উভয় ইনিংস থেকে তিনি মাত্র ১৩ রান যুক্ত করতে পেরেছিলেন। এরপর, ১৯১২ সালের ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতার একটি খেলায় তাঁকে ইংল্যান্ড দলে রাখা হয়। একমাত্র ইনিংস থেকে মাত্র চার রান তুলেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে নিয়ে বার্ট ভগলারকে বোল্ড করে একমাত্র উইকেটের সন্ধান পান। ১২ আগস্ট, ১৯১২ তারিখে ওভালে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলেন।
টেস্টগুলো থেকে তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখেননি। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সবগুলো খেলা থেকে ৬০৮টি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। ১৯০৭ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। ১৯২৬ সালে লিচেস্টারশায়ার দলকে প্রশিক্ষণ দেন। ৪৯ বছর বয়সে এসেও দলটির পক্ষে ৫ খেলায় অংশ নেন ও কাউন্টির ব্যাটিং গড়ে শীর্ষে অবস্থান করেন। ওভালে ১৯২৯ সাল থেকে ১৯৩৪ সালে অবসর গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত সারের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। ২ ডিসেম্বর, ১৯৫৩ তারিখে লন্ডনের ডালউইচ এলাকায় ৭৭ বছর ২৬ দিন বয়সে নিজ গৃহে তাঁর দেহাবসান ঘটে। ঐ দিন কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ী সারের দলের নৈশভোজনে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন।
