১৮ ডিসেম্বর, ১৯১০ তারিখে নেলসনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার, আম্পায়ার, প্রশাসক ও দল নির্বাচক ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, বামহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের সাতজন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে ক্রিকেট ও রাগবি – উভয় ধরনের ক্রীড়ায় অংশগ্রহণ করেছেন।
‘স্নোয়ি’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তাঁর ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবন ব্যাহত হয়। খেলাধূলায় কি করেননি তিনি! অধিকাংশ সময়ই হাফব্যাক অবস্থানে থাকতেন। কখনোবা ফার্স্ট ফাইভ-এইটথ অবস্থানে খেলতেন। সব মিলিয়ে ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৮ সময়কালে অল ব্ল্যাকসের পক্ষে ১৭ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। তবে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশ নেন। জানুয়ারি, ১৯৩৬ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত খ্যাতনামা অবোলেনস্কি খেলায় স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলায় তাঁর দল ১৩-০ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। ১৮ মাস পর ক্রিকেটার হিসেবে পুণরায় ইংল্যান্ড গমন করেছিলেন।
১৯৩২-৩৩ মৌসুম থেকে ১৯৪৯-৫০ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ওয়েলিংটনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৩৭ সালে কার্লি পেজের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড অভিমুখে যাত্রা করেন। ২৬ জুন, ১৯৩৭ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। মার্ভ ওয়ালেস, সনি মলোনি, জ্যাক কাউয়ি, মার্টিন ডনেলি ও ওয়াল্টার হ্যাডলি’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ৮ ও ৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, তিনটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া ঐ সিরিজের সবকটিতেই তাঁর অংশগ্রহণ ছিল। এছাড়াও, দুইবার অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ১৯৩৭-৩৮ মৌসুমে ক্রিকেট দলের সাথে ও ছয় মাস পর ব্ল্যাক ক্যাপসের সদস্যরূপে যান। অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত টেস্টে বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তী ডন ব্র্যাডম্যানের ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন।
১৯৪৫-৪৬ মৌসুমে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্টে অংশ নেন। বিল ব্রাউনের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ২৯ মার্চ, ১৯৪৬ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র টেস্টটিতে খেলেন। খেলায় তিনি ১ ও ১৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। চার-দিন নিয়ে গড়া ঐ টেস্টটি দুই দিনে শেষ হয়ে যায়। ইনিংস ও ১৩৩ রানে পরাজিত হয় তাঁর দল।
১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে নিজ দেশে ওয়ালি হ্যামন্ডের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ২১ মার্চ, ১৯৪৭ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পরও খেলাধূলার সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ডের মধ্যকার খেলায় আম্পায়ার হিসেবে একটি টেস্ট পরিচালনা করেন। রাগবি টেস্ট রেফারি ও প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। ওয়েলিংটন ও নিউজিল্যান্ডের দল নির্বাচক হিসেবে মনোনীত হন। এছাড়াও, টেবিল টেনিসে ওয়েলিংটনের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সতীর্থ চার্লি অলিভারকে সাথে নিয়ে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুমে সফরকে ঘিরে ‘দ্য ট্যুর অব দ্য থার্ড অল ব্ল্যাকস’ প্রকাশ করেন ও ব্যাপকভাবে সর্বাধিক বিক্রিত গ্রন্থের মর্যাদা পায়। ১৯৯৫ সালে নিউজিল্যান্ড স্পোর্টস হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১ আগস্ট, ২০১০ তারিখে ওয়েলিংটনে ৯৯ বছর ২২৬ দিন বয়সে হাসপাতালে তাঁর দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুকালীন প্রবীণতম টেস্ট ক্রিকেটারের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। মৃত্যুর পূর্বে নিউজিল্যান্ডের বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত রাগবি টেস্ট খেলোয়াড় ও একমাত্র নিউজিল্যান্ডীয় হিসেবে রাগবি ও ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
