১৩ জুলাই, ১৯৪৪ তারিখে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার সেমাফোর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ, প্রশাসক ও ধারাভাষ্যকার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে কার্যকর ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
‘ফ্রিটজ’ ডাকনামে ভূষিত হয়েছিলেন। ১৯৬৪-৬৫ মৌসুম থেকে ১৯৭৩-৭৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ব্যাট ও বল হাতে দলে বিরাট ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯৭১ সালে এসসিজিতে এনএসডব্লিউ’র বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সেরা খেলা উপহার দিয়েছিলেন। আঘাতের সমস্যা সত্ত্বেও তিনি ৮/৬৪ লাভ করেন ও খেলায় ১৩ উইকেট দখল করেছিলেন।
১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বমোট ১১ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে নিজ দেশে মনসুর আলী খান পতৌদি’র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ১৯ জানুয়ারি, ১৯৬৮ তারিখে ব্রিসবেনের গাব্বায় অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তাঁর টেস্ট পর্ব সম্পন্ন হয়। প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলতে নেমে ছক্কা মেরে রানের ধারা শুরু করেন। এরফলে, টেস্টের ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এ সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। খেলায় তিনি ১৮ ও ৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ভারতের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদ্বয়কে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করে বিদেয় করেছিলেন। বল হাতে নিয়ে ৩/৫৬ ও ০/২৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ৩৯ রানে জয়লাভ করে স্বাগতিকরা চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেরা সিরিজ খেলেন। সাত নম্বর অবস্থানে নেমে সিডনিতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন। দুইটি অর্ধ-শতকসহ ৩০.৫০ গড়ে ১৮৩ রান তুলেন। এছাড়াও, ৩০.০৭ গড়ে ১৩ উইকেট পেয়েছিলেন।
১৯৬৮ সালের অ্যাশেজ সিরিজে অংশ নিতে ইংল্যান্ড গমন করেন।
১৯৬৯-৭০ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে বিল লরি’র নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭০ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৫ ও ১৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/১২০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ইনিংস ও ১২৯ রানে পরাজয়বরণ করলে সফরকারীরা চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।
একই সফরের ১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭০ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্ট খেলেন। খেলায় তিনি ১০ ও ১৮ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৬০ ও ১/৭৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সফরকারীরা ৩০৭ রানে পরাভূত হলে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। টেস্টগুলো থেকে ১৯.১৬ গড়ে ৩৪৫ রান ও ৩৩.১৭ গড়ে ৩৪ উইকেট দখল করেছিলেন।
ক্রিকেটের বাইরে মৌসুম বহির্ভূত সময়ে অসাধারণ ফুটবলার ছিলেন। শীর্ষস্থানীয় অস্ট্রেলীয় রুলস খেলোয়াড় হিসেবে এসএএনএফএলে পোর্ট অ্যাডিলেডের পক্ষে ১১৬ খেলায় অংশ নিয়েছেন। ১৯৬৫ সালে প্রিমিয়ারশীপের শিরোপা জয়ে ভূমিকা রাখেন। এছাড়াও, ১৯৬৭ সালে লীগে সর্বাধিক ৮১ গোল করে কেন ফারমার পদক লাভ করেছিলেন। ১৯৬৮ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমনের ফলে এএফএলের অধিকাংশ খেলায় অংশ নিতে পারেননি। তাসত্ত্বেও, দেশে ফিরে সেমি-ফাইনালে পোর্ট অ্যাডিলেড ক্লাবের সদস্যরূপে স্টার্টের বিপক্ষে খেলেছিলেন। এছাড়াও, ছয়বার সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলেছেন।
২০০২ সালে ক্রীড়া অসামান্য ভূমিকা বিশেষতঃ ক্রিকেটার, প্রশাসক ও ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ ওএ পদক লাভ করেন। দীর্ঘদিন এবিসিতে ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব পালনসহ ওয়েস্ট টরেন্সের কিশোর খেলোয়াড়দের উন্নয়নে কাজ করতেন। ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন।
সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অতঃপর, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে ৭৬ বছর ১৫৪ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
