১ ডিসেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ২০০০-এর দশকে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
‘সিজান’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। ২০০০-০১ মৌসুম থেকে ২০০৭-০৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর বাংলাদেশী ক্রিকেটে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে অন্যতম তারকা ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচিত হন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রায় ৪০ গড়ে রান সংগ্রহ করেছিলেন। এমন এক সময়ে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন যখন দলটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখতে বেশ হিমশিম খাচ্ছিল। তবে, ক্লাব ক্রিকেট ও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যাপক রান সংগ্রহ করলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একই ধারা প্রবাহিত করতে পারেননি।
১৯৯৮ সালে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। সাতটি খেলায় অংশ নিয়ে কেবলমাত্র একটিতে অর্ধ-শতরানের সন্ধান পেয়েছিলেন। পরের বছর লিস্ট-এ ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো খেলতে নামেন। আরও এক বছর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার জন্যে তাঁকে অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়। ২০০০ সালে নিজস্ব প্রথম প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নেন। প্রথম মৌসুমেই পাঁচ শতাধিক রান তুলেন। তবে, পরবর্তী মৌসুমগুলোয় একই ধারায় রান সংগ্রহ করতে পারেননি। তাসত্ত্বেও, দল নির্বাচকমণ্ডলী তাঁর উপর আস্থা রেখে জাতীয় দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করে।
২০০২ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত সময়কালে বাংলাদেশের পক্ষে একটিমাত্র টেস্ট, ছয়টিমাত্র ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে, একটিমাত্র ওডিআইয়ে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ২০০২ সালে দলের সাথে খালেদ মাসুদের অধিনায়কত্বে শ্রীলঙ্কা সফর করেন। ২১ জুলাই, ২০০২ তারিখে কলম্বোর পিএসএসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। আলমগীর কবির, হান্নান সরকার ও তালহা জুবায়েরের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। সংক্ষিপ্ত টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে তাঁকে একদিনে দুইবার তিন নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়। সব মিলিয়ে সাত রান করতে পেরেছিলেন। প্রথম ইনিংসে ২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ রান তুলতে সক্ষম হন। উভয়ক্ষেত্রেই দিলহারা ফার্নান্দো’র শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। সফরকারীরা ইনিংস ও ১৯৬ রানের ব্যবধানে পরাভূত হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। এরপর আর তাঁকে টেস্ট দলে রাখা হয়নি।
টেস্টের তুলনায় কিছুটা দীর্ঘসময় ওডিআই দলে খেলেছেন। ২০০২ সালে নিজ দেশে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হন। ২ ডিসেম্বর, ২০০২ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সফররত ওয়েস্টে ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওডিআইয়ে অংশ নেন। ৯ ও ২০ রান তুলেছিলেন। পরবর্তীতে ২০ রানই তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংসে পরিণত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপণ ঘটে। চার খেলা থেকে সব মিলিয়ে মাত্র ২৮ রান সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছিলেন। বেনোনিতে পরিত্যক্ত খেলায় ব্রায়ান লারা’র উইকেট পেয়েছিলেন। এছাড়াও, বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে ফলাফলের সাথেও নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলাকালীন চামিণ্ডা ভাসের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন ও তাঁর হ্যাট্রিকের সাথে যুক্ত হন। ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০০৩ তারিখে ব্লোমফন্তেইনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাখ্যাত হলেও ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরে চট্টগ্রাম বিভাগের পক্ষে ৪৯টি খেলায় অংশ নিয়ে ১০টি শতরানের ইনিংস হাঁকান। তন্মধ্যে, ২০০৬ ও ২০০৭ সালে তিনটি করে শতরান করেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে অন্যতম সেরা অধিনায়ক ছিলেন। ২০০৭-০৮ মৌসুম শেষে খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেন। এরপর, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলের সদস্য মনোনয়নে অন্যতম নির্বাচক হিসেবে মনোনীত হন।
