১৭ মার্চ, ১৮৭২ তারিখে কেন্টের ক্রানব্রুক এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯০০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
বার্নার্ড বোসানকুয়েতকে যদি ‘গুগলির রূপকার’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, তাহলে তাঁকে ‘বাস্তবায়ক’ হিসেবে পরিগণিত করা হবে। সাটন ভ্যালেন্সের পর অক্সফোর্ডের অধীন ব্রাসনোজ কলেজে অধ্যয়ন করেন। ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবল খেলায়ও দক্ষ ছিলেন। গ্রামীণ পরিবেশের ক্রিকেটে কাটার সহযোগে বোলিংয়ের মাধ্যমে খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান। গুগলিতে দক্ষ হবার পূর্বে মাঝে-মধ্যে লেগ-ব্রেক বোলিং করতেন। গুগলিতে এতোটাই সিদ্ধ হস্তের অধিকারী হন যে, এক পর্যায়ে লেগ-ব্রেক বোলিং করা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলেন।
১৯০৯ থেকে ১৯১৪ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলের সূচনালগ্নে গুগলি বোলিং করে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখেন। বেশ দেরীতে ৩৭ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট জীবনে প্রবেশ করেন। মাত্র ৫৮টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিলেও ৩১বার পাঁচ-উইকেট লাভ করেছিলেন। ১৬.৭২ গড়ে ৩৩৪ উইকেট পান। ১৯০৯ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ী কেন্ট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। কলিন ব্লাইদ, আর্থার ফিল্ডার ও ফ্রাঙ্ক ওলিকে সাথে নিয়ে কেন্টের পাঁচ মৌসুমের মধ্যে তৃতীয় শিরোপা লাভে ভূমিকা রাখেন। তবে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে তাঁর খেলোয়াড়ী জীবন থমকে যায়।
এক মৌসুমে সবচেয়ে বাজে ১৮.৩৬ গড়ের সাথে জড়িত করেন। তবে, ১৯০৯ সালে নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন। ১৮.২৭ গড়ে ৯৫ উইকেট লাভ করেছিলেন। ১৯১২ সালে ১২.০১ গড়ে ৬১ উইকেট পান। ঐ মৌসুমের এক পর্যায়ে চার খেলা থেকে ৪১ উইকেট দখল করেছিলেন। তন্মধ্যে, গ্লুচেস্টারশায়ার দলকে ৬৭ ও ৯৫ রানে গুটিয়ে দেয়া খেলায় ১৩ উইকেট পেয়েছিলেন। এছাড়াও, ঐ মৌসুমে সফররত অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে ৭/৪৬ পেয়েছিলেন।
১৯০৯ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে ৩৭ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর অভিষেক মৌসুমে সাতটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেয়ার পর টেস্ট খেলার সুযোগ পান। ঐ বছর নিজ দেশে মন্টি নোবেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ৯ আগস্ট, ১৯০৯ তারিখে ওভালে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্ট খেলেন। ফ্রাঙ্ক ওলি’র সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এরপর তাঁকে আর কোন টেস্টে রাখা হয়নি। ঐ টেস্টে পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। এরফলে, টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের চতুর্থ বোলার হিসেবে একমাত্র টেস্ট থেকে পাঁচ-উইকেট লাভ করেছিলেন। কেবলমাত্র চার্লি ম্যারিয়টের (১১) পর এক টেস্টের বিস্ময়কারী হিসেবে অধিকতর উইকেট দখল করেছিলেন। খেলায় তিনি ৫/১৪৬ ও ২/১৩৬ লাভ করেন। তন্মধ্যে, ভিক্টর ট্রাম্পার, মন্টি নোবেল ও ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং দুইবার তাঁর শিকারে পরিণত হন। এছাড়াও, খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে টিবি কটারের বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে ক্রিকেট খেলা শুরু হলে ৪৮ বছর বয়সে এসে আর কোন খেলায় অংশ নেননি। ২৩ মার্চ, ১৯৫০ তারিখে ডেভনের সালকম্ব হিল এলাকায় ৭৮ বছর ৬ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
