৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ তারিখে গুজরাতের ভাবনগর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৯৪-৯৫ মৌসুম থেকে ২০০৫-০৬ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, এসেক্স ক্রিকেট বোর্ড ও কিংস ইলাভেন পাঞ্জাবের পক্ষে খেলেছেন।
১৯৯৯ থেকে ২০০০ সময়কালে ভারতের পক্ষে চারটিমাত্র টেস্ট ও তিনটিমাত্র ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে নিজ দেশে স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১০ অক্টোবর, ১৯৯৯ তারিখে মোহালিতে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। এমএসকে প্রসাদ ও বিজয় ভরদ্বাজের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। টেস্ট অভিষেকে দ্বিতীয় দিন শেষে ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে বিদেয় নেন। জনৈক সাংবাদিক তখন গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথের সাথে তুলনা করতে শুরু করেন। অভিষেকে অবশ্য শতকটি লাভ করতে পারেননি। নাথান অ্যাসলে’র মিডিয়াম পেসে ৭৫ রানে তাঁকে বিদেয় নিতে হয়েছিল। সদাগোপান রমেশের সাথে ইনিংস উদ্বোধনে নেমে ১৩৭ রানের জুটি গড়েছিলেন। অভিষেক পর্বটি বেশ প্রতিশ্রুতিশীলতার দাবীদার ছিল। তবে, জবাগল শ্রীনাথের অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ০-০ ব্যবধানে অগ্রসর হতে থাকে। দ্বিতীয় টেস্টেও তাঁর খেলার ধারা চমৎকার ছিল।
পরের টেস্টে ৮৮ ও ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। তন্মধ্যে, ৮৮ রানের ইনিংসটি দলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। খেলায় তাঁর দল ৮ উইকেটে জয় পায়। একই সফরের ১৭ নভেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে দিল্লিতে প্রথমবারের মতো ওডিআইয়ে অংশ নেন।
এ সময়ে তিনি রানের ফল্গুধারায় প্রবাহমান ছিলেন। এক বছরের কম সময় পূর্বে আসামের বিপক্ষে ৩২৩ রান তুলেন। এ সংগ্রহটি বাংলা দলের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ত্রি-শতরানের ইনিংস ছিল।
ভারত দল তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া ঐ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে জয়ী হয় ও তিনি প্রায় ৫০ গড়ে রান পেয়েছিলেন। অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকই তাঁকে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাপক সম্ভাবনার কথা ভাবতে শুরু করেন। এরপর, ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে শচীন তেন্ডুলকরের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্যে মনোনীত হন। কিন্তু, এ সফরে তাঁর অবদান সুখকর ছিল না। শর্ট বল মোকাবেলায় তাঁর দূর্বলতা ধরে পড়ে।
১০ ডিসেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। মাত্র দুই ইনিংস খেলার সুযোগ পান। ১৮ বল থেকে মাত্র ৪ রান সংগ্রহ করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে শূন্য রানে বিদেয় নেন। চকচকে বলে কখনো তাঁকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে দেখা যায়নি ও গ্লেন ম্যাকগ্রা তাঁর দূর্বলতা লক্ষ্য করে শুরুতেই ভারত দলকে চাপের মধ্যে ফেলে দেন। একটি ডিসমিসাল ঘটাতে সক্ষম হন। স্বাগতিকরা ২৮৫ রানে জয় পায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
সর্বোপরী ফাস্ট বোলিংয়ের উপযোগী পিচে নিজেকে মোটেই মানিয়ে নিতে পারেননি। তুলনান্তে প্রস্তুতিমূলক খেলাগুলোয় কিছুটা সাফল্য পেয়েছিলেন। টেস্টের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ত্রি-দেশীয় সিরিজে দুইটি ওডিআইয়ে অংশ নেন। ৬ ও ১৩ রান করেন। এরপর, আর তাঁকে দলে রাখা হয়নি।
পরবর্তী দুই মৌসুমে ঘরোয়া আসরে রানের ফুলঝুড়ি ছুটিয়েছিলেন। তবে, তা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁকে আমন্ত্রণের জন্যে যথেষ্ট ছিল না। তাসত্ত্বেও, ২০০২-০৩ মৌসুমে ১৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংসসহ ২০০৩-০৪ মৌসুমে ১৫১ রান তুলেছিলেন। উভয় ইনিংসই আসামের বিপক্ষে করেন। লিস্ট-এ ক্রিকেটে এটিই বাংলা দলের প্রথম দেড় শতাধিক রানের ইনিংস ছিল। আরও কয়েক মৌসুম খেলার পর ক্রিকেট জগৎকে বিদেয় জানান। সবমিলিয়ে ৯৫টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৪২.৭৩ গড়ে ৬১১১ রান পেয়েছিলেন।
ভারতের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছেন ও বাংলার ব্যাটসম্যান ছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচনায় নেমে তাঁর মাঝে বেশ প্রতিশ্রুতিশীলতা লক্ষ্য করা যায়। তবে, শর্ট পিচ বোলিংয়ের বিপক্ষে তাঁর সামলে নেয়ার অক্ষমতা তাঁর অংশগ্রহণকে স্তিমিত করে ফেলে।
২৭ এপ্রিল, ২০০৬ তারিখে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। ২০১৬ সালে এমএসকে প্রসাদের নেতৃত্বে পাঁচ-সদস্যবিশিষ্ট দল নির্বাচকমণ্ডলীকে অন্তর্ভুক্ত হন ও পূর্বাঞ্চলের দল নির্বাচক হন। লোধা প্যানেলের পরিচালনায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে পরামর্শক্রমে তিন সদস্যে কমিয়ে আনা হলে তিনি এতে ছিলেন ও ২০২০ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন।
