২৯ অক্টোবর, ১৯১৫ তারিখে ইয়র্কশায়ারের কিপাক্স এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও প্রশাসক ছিলেন। দলে মূলতঃ ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৪০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৩৩ সালে কিশোর অবস্থায় নর্দাম্পটনশায়ারে যোগ দেন। ১৯৩৪ থেকে ১৯৫৯ সময়কালে ২৫ বছর প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নর্দাম্পটনশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নর্দান্টসের তারকা খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। ব্রাডফোর্ডে চ্যাম্পিয়নশীপে তিনি তাঁর প্রথম খেলায় হ্যাডলি ভেরিটি’র বলে এক রান সংগ্রহকালীন ফাঁদে ফেলে বিদেয় করেন। এরপর থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে ৪৯২টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৬৭ শতক সহযোগে ২৮৯৮০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৭ মৌসুমে সহস্র রানের মাইলফলক ও ছয় মৌসুম দুই হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। এগুলো কাউন্টি রেকর্ডে পরিণত হয়। ১৯৫২ সালে নর্দাম্পটনশায়ারের অনুপযোগী পিচে কেন্টের ডগ রাইটের বোলিংয়ের বিপক্ষে খেলে দলের ১৮৫ রানের মধ্যে নিজে ১০২ রানের অপূর্ব ইনিংস খেলেছিলেন।
১৯৪৮ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেছিলেন। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে গাবি অ্যালেনের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সাথে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ২১ জানুয়ারি, ১৯৪৮ তারিখে ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। জেরাল্ড স্মিথসন, জিম লেকার, মরিস ট্রেমলেট ও উইনস্টন প্লেসের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ খেলায় তিনি মাত্র ১০ ও ৭ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। প্রস্তুতিমূলক খেলায় বার্বাডোসের বিপক্ষে ১০৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। ঐ টেস্টে তিনি যে কেবলমাত্র অল্প রানই সংগ্রহ করেছিলেন তা নয়; বরঞ্চ, হাতের আঙ্গুলও ভেঙ্গে ফেলেন। তবে, আরসি রবার্টসন-গ্লাসগো’র অভিমত, ‘ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানের ন্যায়ই তিনি খেলেছিলেন; শুধুমাত্র ইংল্যান্ড দলে খেলার উদ্দেশ্যে নয়।’
ইংল্যান্ডের অন্যতম উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ও পরবর্তীতে সিরিল ওয়াশব্রুক অপর প্রান্তে খেলেন। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে কঠিন সময় অতিবাহিত করেন। তবে, তাঁর উদ্বোধনী সঙ্গী পিটার আর্নল্ড মন্তব্য করেছিলেন যে, ‘অনেকেই টেস্ট দলে খেলার চেষ্টা চালালেও তাঁর ন্যায় ভালোমানের ছিলেন না। যে-কোন স্থানে সেরা ও দৃষ্টিনন্দন খেলোয়াড়ে পরিণত হতেন।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অনেকগুলো বছর নিজের সেরা ছন্দ হারিয়ে ফেলার পরও দলে অন্তর্ভূক্তির দাবীদার ছিলেন। ১৯৪৬ সালে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টে দ্বাদশ খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। অধিনায়ক ওয়ালি হ্যামন্ড আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সফরে তাঁকে দলে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, ঐ সফরে তাঁকে যুক্ত করা হয়নি। এমনকি, ১৯৫১-৫২ মৌসুমে ভারত সফরেও তাঁকে রাখার চিন্তা করা হয়েছিল। ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে খেলেন। মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত ক্লাবের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। প্রথম যাচাই-বাছাইয়ের খেলায় অংশ নেয়ার ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে জুলাই, ২০০২ সালে নর্দাম্পটনের নবপ্রতিষ্ঠিত ইনডোর স্কুলে বিশেষ নৈশভোজনের আয়োজন করা হয়। আমন্ত্রিত অতিথিরা তাঁর নামে অ্যাবিংটন অ্যাভিনিউ গেট দিয়ে প্রবেশ করেন। ৯ মার্চ, ২০০৬ তারিখে নর্দাম্পটনে ৯০ বছর ১৩১ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
