১৫ এপ্রিল, ১৮৪৫ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের ফেইরি মিডো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও আম্পায়ার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হতেন। ১৮৭০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নেয়াসহ অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের জনক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এডওয়ার্ড উইলিয়াম গ্রিগরি ও মেরি অ্যান দম্পতির সন্তান ছিলেন। সেন্ট জেমস মডেল স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ১৮৬১ সালে অডিটর-জেনারেলস বিভাগে যোগ দেন। ক্রিকেটপ্রেমী পরিবারে তাঁর জন্ম। খুব সম্ভবতঃ অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের অন্যতম জনপ্রিয় পরিবারের পরিচিতি পেয়েছে তাঁর পরিবারটি। আট ভাইয়ের পাঁচজন নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিংবা আন্তঃঔপনিবেশিক খেলায় অংশ নিয়েছিল। এছাড়াও বিশজন উত্তরসূরী নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে ক্রিকেট কিংবা অন্যান্য খেলাধূলার সাথে সম্পৃক্ত ছিল।
সিডনিভিত্তিক ন্যাশনাল ক্রিকেট ক্লাবে যোগ দেন। ১৮৬৬ সালে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে প্রথম আন্তঃঔপনিবেশিক খেলায় অংশ নেন। ১৮৬৭ থেকে ১৮৭৫ সময়কালে ওয়ারউইক ক্লাবের সদস্য ছিলেন। দুই মৌসুম ব্যাটসম্যান ও বোলার হিসেবে গড়ের দিক দিয়ে শীর্ষে ছিলেন। স্বীয় ভ্রাতৃদ্বয় এডওয়ার্ড জেমস ও চার্লস স্মিথকে নিয়ে ভিক্টোরীয় খেলোয়াড়দের বিপক্ষে এক উইকেটের সিরিজ খেলা উদযাপনে অংশ নেন।
১৮৬৬-৬৭ মৌসুম থেকে ১৮৮২-৮৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নিউ সাউথ ওয়েলসের অধিনায়কত্ব করেন। মার্চ, ১৮৭৭ সালে নিউ সাউথ ওয়েলস ও ভিক্টোরিয়া দলকে নিয়ে গড়া সম্মিলিত দল সফররত জে. লিলিহোয়াইটের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলকে পরাজিত করেছিল। পরবর্তীতে এটি অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম টেস্ট খেলা হিসেবে ক্রিকেট ইতিহাসের পর্দায় ঠাঁই পায়।
১৮৭৭ থেকে ১৮৭৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে তিনটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম অধিনায়কের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছেন। ১৮৭৬-৭৭ মৌসুমে নিজ দেশে জেমস লিলিহোয়াইট জুনিয়রের নেতৃত্বাধীন দলের মুখোমুখি হন। ১৫ মার্চ, ১৮৭৭ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে ক্রিকেটের ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার গৌরব অর্জন করেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ১ ও ৩ রান তুলেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৯ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ৪৫ রানে জয়লাভ করলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
১৮৭৮ সালে ইংল্যান্ড গমনার্থে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সফরে যুক্ত হন। এছাড়াও, ফেব্রুয়ারি, ১৮৭৯ সালে সিডনিতে পূর্ব-নির্ধারিত চতুর্থ টেস্টের সদস্য ছিলেন। কিন্তু, পিচ দখল, মারামারি ও পর্দার অন্তরালে জুয়াখেলার কারণে ক্রিকেটের চতুর্থ টেস্টটি বাতিল ঘোষিত হয়। ১৮৭৮-৭৯ মৌসুমে নিজ দেশে লর্ড হ্যারিসের নেতৃত্বাধীন দলের মুখোমুখি হন। ২ জানুয়ারি, ১৮৭৯ তারিখে মেলবোর্নে সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ১২* রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ১০ উইকেটে জয়লাভ করেছিল। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
খেলোয়াড়ী জীবন শেষে আম্পায়ারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। একটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা পরিচালনা করেছিলেন। এক পর্যায়ে প্রশাসনে জড়িয়ে পড়েন। ১৮৮০-এর দশকে এনএসডব্লিউ’র দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এছাড়াও, ১৮৮৩ থেকে ১৮৯১ সময়কালে এনএসডব্লিউ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৮৬১ সালে সিডনিতে এলেন নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির তিন পুত্র ও পাঁচ কন্যা ছিল। ৪ আগস্ট, ১৯১৯ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের টুরামুরা এলাকায় ৭৪ বছর ১১১ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। ওয়াভার্লি সিমেট্রির অ্যাংলিকান অংশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
