৪ মার্চ, ১৯৬৭ তারিখে কেপ প্রভিন্সের কিম্বার্লিতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও কোচ। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
৫ ফুট ৩ ইঞ্চি (১.৬০ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। বিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় তাঁর সহজাত দক্ষতা লক্ষ্য করা যায়। রান সংগ্রহের দিকেই অধিক মনোনিবেশ ঘটাতেন। ১৯৮৩-৮৪ মৌসুম থেকে ২০০৪-০৫ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে বর্ডার, ইস্টার্নস, গটেং, টাইটান্স ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ার ও কেন্টের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে শতক হাঁকিয়ে সংবাদ শিরোনামে চলে আসেন। কিংবদন্তীতূল্য গ্রায়েম পোলকের রেকর্ড ভেঙ্গে নিজের করে নেন। এছাড়াও, ১৯৯৩ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড দাঁড় করান। নর্দার্ন ট্রান্সভালের বিপক্ষে ৩৩৭ রানের মনোজ্ঞ ইনিংস উপহার দেন।
১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ৭০ টেস্ট ও ১৩৮টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে নিজ দেশে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ২ জানুয়ারি, ১৯৯৩ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ও চূড়ান্ত টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ৪৬ ও ২৮ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। জবাগল শ্রীনাথের অসাধারণ বোলিংশৈলী প্রদর্শন সত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়।
১৯৯৩ সালে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ বছর কেপলার ওয়েসেলসের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ২৫ আগস্ট, ১৯৯৩ তারিখে মোরাতুয়ায় অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে পূর্বেকার সর্বোচ্চ রানের সমকক্ষ হন। খেলায় তিনি ৩৩ ও ৪৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, প্রতিপক্ষীয় অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
এ সফরেই নিজস্ব প্রথম টেস্ট শতরানের সন্ধান পান। ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে কলম্বোর পিএসএসে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ১০২ রান তুলেন। এছাড়াও, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁর অসাধারণ শতকের কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।
তবে, এর পরপরই রান খরায় ভুগতে থাকেন। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে কেপলার ওয়েসেলসের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে ডাউন আন্ডারে প্রথমবারের মতো মাটিতে টেস্ট খেলেন। এ সফরে সর্বোচ্চ মাত্র ১০ রান তুলতে পেরেছিলেন। ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ক্রেগ ম্যাকডারমটের বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। আলোকস্বল্পতা ও বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৯৪ সালের গ্রীষ্মে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ বছর কেপলার ওয়েসেলসের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। সিরিজের তৃতীয় টেস্টের পূর্ব পর্যন্ত আর কোন টেস্ট খেলার সুযোগ পাননি। ১৮ আগস্ট, ১৯৯৪ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ডেভন ম্যালকমের বোলিং উপেক্ষা করে দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৪ রান তুলেন ও ঐ ইনিংসে তিনিই একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর শিকারে পরিণত হননি। প্রথম ইনিংসে অবশ্য ৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ডেভন ম্যালকমের অনবদ্য বোলিংশৈলী প্রদর্শনের সুবাদে সফরকারীরা ৮ উইকেটে পরাজয়বরণ করলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতা অনেকাংশেই তাঁর বড় ধরনের রান সংগ্রহের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তাঁর শতকের পর কেবলমাত্র একবারই দলটি পরাজয়ের কবলে পড়েছিল। অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৭৫ রানের ইনিংস খেলেন। এ পর্যায়ে গ্রায়েম পোলকের গড়া ২৭৪ রানের রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলেন ও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে কুক্ষিগত করেন। দেশে ফিরে তিনি ‘পরবর্তী গ্রায়েম পোলক’ নামে পরিচিতি পান।
১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে নিজ দেশে কেন রাদারফোর্ডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ২৫ নভেম্বর, ১৯৯৪ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৫৮ ও ১২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। সায়মন ডৌলের অল-রাউন্ড নৈপুণ্যে সফরকারীরা ১৩৭ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে নিজ দেশে মাইক অ্যাথার্টনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ৩০ নভেম্বর, ১৯৯৫ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টের প্রথম দিন ৫১ রানে থাকাকালে জ্যাক রাসেল তাঁর ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করতে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। এরপর, খেলার চতুর্থ দিন ৩৭ রানে থাকা অ্যালেক স্টুয়ার্টের (৩৮) ক্যাচ তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন। খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ৬৯ ও ৬১ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, জ্যাক রাসেলের অসাধারণ অল-রাউন্ড কৃতিত্বে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।
একই সফরের ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৫ তারিখে পোর্ট এলিজাবেথে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৭২ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৯১ ও ১৪ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হন। তবে, গ্যারি কার্স্টেনের ব্যাটিং বদান্যতায় খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে হান্সি ক্রোনিয়ে’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ভারত গমন করেন। ২৭ নভেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ১০২ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ৪৩ ও ১৫৩* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, গ্যারি কার্স্টেনের অসাধারণ জোড়া শতকের কল্যাণে স্বাগতিকরা ৩২৯ রানে পরাভূত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। পুরো সিরিজে দূর্দান্ত খেলেন। ১৯ মার্চ, ১৯৯৮ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টের প্রথম দিন দলনায়ক হান্সি ক্রোনিয়ে’র সাথে ৯৬ রানের জুটি গড়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪র্থ উইকেটে নতুন রেকর্ড গড়েন। এ পর্যায়ে নিজস্ব চতুর্থ টেস্ট শতক হাঁকান। খেলার তৃতীয় দিন জ্যাক ক্যালিসের সাথে ১১৬ রানের জুটি গড়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩য় উইকেটে নতুন রেকর্ড গড়েন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৬ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এরফলে, চতুর্দশ ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ৪র্থ দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে এ সাফল্যের সন্ধান পান। তবে, খেলার চতুর্থ দিন ২৬৪ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা দল তাদের সর্বনিম্ন রানের নজির গড়ে। ব্যাট হাতে নিয়ে ১১৩ ও ৬৮ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হন। শন পোলকের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৭০ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
২৭ মার্চ, ১৯৯৮ তারিখে সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টের তৃতীয় দিনে ১৪ রানে থাকা পিএ ডি সিলভার’র ক্যাচ ফাইন-লেগ অঞ্চলে অবস্থান করে মুঠোয় পুরতে পারেননি। ব্যাট হাতে নিয়ে ১০৩ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, অ্যালান ডোনাল্ডের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে জয় পেলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। এ সিরিজে ২৮৪ রান সংগ্রহ করে ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে হান্সি ক্রোনিয়ে’র নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ১৮ মার্চ, ১৯৯৯ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ৪৫ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৩০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ১৫২ ও ০* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, স্টিভ এলোয়ার্দি’র অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৮ উইকেটে জয় পেলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।
১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। শেন ওয়ার্নের শিকারে পরিণত হয়ে নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছেন। নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী সময়কালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রত্যাবর্তনের পর অন্যতম সেরা ক্রিকেটীয় প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে দলের উত্থানে অপূর্ব ভূমিকা পালন করেছিলেন।
২০০০ সালে শন পোলকের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। ২০ জুলাই, ২০০০ তারিখে গলেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ১১৪* ও ১২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ১/১০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করানোসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, মুত্তিয়া মুরালিধরনের অসাধারণ বোলিং সাফল্যে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৫ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
২০০০-০১ মৌসুমে নিজ দেশে ফিরতি সফরে সনাথ জয়সুরিয়া’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ২ জানুয়ারি, ২০০১ তারিখে কেপটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। খেলার দ্বিতীয় দিন প্রথম ইনিংসে ৬৫ রানে পৌঁছানোকালে দ্বিতীয় দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে টেস্টে ৪০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টে দলের একমাত্র ইনিংসে ১১২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এ পর্যায়ে ১২টি শতক হাঁকিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বাধিক টেস্ট শতকধারীর মর্যাদা লাভ করেন। ১৯৯১ সালে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তিলাভের পর দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার সর্বাধিক ৫০৪/৭ ডি. রানের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হন। শন পোলকের অসাধারণ বোলিং শৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ২২৯ রানে জয়লাভ করলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
একই মৌসুমে শন পোলকের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ গমন করেন। ১৯ এপ্রিল, ২০০১ তারিখে কিংস্টনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৬ ও ১৮ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হন। রিডলি জ্যাকবসের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৩০ রানে জয় পেলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
টেস্টগুলো থেকে ৪৪.২১ গড়ে ৪৫৫৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৯৮৯, ১৯৯৬ ও ১৯৯৯ সালে তিনবার সাউথ আফ্রিকান ক্রিকেট অ্যানুয়েল থেকে বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। এছাড়াও, ১৯৯৭ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এক পর্যায়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার্সের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লীগে কলকাতা টাইগার্সকে প্রশিক্ষণ দেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ভার্জিনিয়া নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে অবশ্য তাঁদের মধ্যকার সম্পর্ক বিচ্ছেদে পরিণত হয়।
