কার্লি পেজ
৮ মে, ১৯০২ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চের লিটলটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে স্লো বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাশাপাশি, স্লিপ কিংবা গালি অঞ্চলে ফিল্ডিং করতেন। ১৯৩০-এর দশকে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় অধিনায়কের মর্যাদা লাভ করেন।
খেলাধূলায় বেশ ভালো ফলাফল করেন। ক্রিকেট ও রাগবি খেলায় তাঁর অনুরাগ ছিল। ১৯২৮ সালে অল ব্ল্যাকের পক্ষে স্ক্রাম-হাফ অবস্থানে খেলতেন। ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত ক্রাইস্টচার্চ বয়েজ হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। ১৯২০-২১ মৌসুম থেকে ১৯৪২-৪৩ মৌসুম পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারির প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৯২১ সালে ক্যান্টারবারির সদস্যরূপে শক্তিধর অস্ট্রেলীয় দলের বিপক্ষে খেলার জন্যে মনোনীত হন। ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত ঐ রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। এ পর্যায়ে প্লাঙ্কেট শীল্ড প্রতিযোগিতায় প্রত্যেক দল মাত্র তিনটি খেলায় অংশ নেয়ার সুযোগ পেলেও তিনি ৩৩.২০ গড়ে ২৪২৪ রান তুলেছিলেন। ১৯৩১-৩২ মৌসুমে ওয়েলিংটনের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২০৬ রানের ইনিংস খেলেন। ১৯২৭ সালে ইংল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের প্রথম সফরে অংশ নিয়ে সহস্র রানের কোটা স্পর্শ করেন।
১৯৩০ থেকে ১৯৩৭ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ১৪ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯২৯-৩০ মৌসুমে নিজ দেশে হ্যারল্ড জিলিগানের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১০ জানুয়ারি, ১৯৩০ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। স্মর্তব্য যে, এটিই নিউজিল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম খেলা ছিল। অ্যাল্বি রবার্টস, স্টুই ডেম্পস্টার, টেড ব্যাডকক, জর্জ ডিকিনসন, হেনরি ফোলি, ম্যাট হেন্ডারসন, রজার ব্লান্ট, টম লরি ও বিল মেরিটের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১ ও ২১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সফরকারীরা ৮ উইকেটে জয় পেলে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
একই সফরের ২৪ জানুয়ারি, ১৯৩০ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ২২ রানে পৌঁছানোকালে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। ৬৭ ও ৩২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।
১৯৩১ সালে টম লরি’র নেতৃত্বাধীন নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড গমন করেন। এটিই নিউজিল্যান্ড দলের প্রথম বিদেশ সফর ছিল। ২৭ জুন, ১৯৩১ তারিখে লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। কয়েকটি ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৮ রানে পৌঁছানোকালে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে ব্যক্তিগত একমাত্র টেস্ট শতকের সন্ধান পান। খেলায় তিনি ২৩ ও ১০৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এরফলে, প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ড দলকে নাটকীয়ভাবে খেলায় ফিরিয়ে আনতে ভূমিকা রাখেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দীসহ ০/১৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
১৯৩৭ সালে কিউই দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ইংল্যান্ড সফরে যান। ১৪ আগস্ট, ১৯৩৭ তারিখে লন্ডনের কেনসিংটন ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ৫৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে আঘাতের কারণে মাঠে নামতে পারেননি। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৭ তারিখে ক্যান্টারবারির ক্রাইস্টচার্চে ৮৪ বছর ২৮১ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।