৯ ডিসেম্বর, ১৯১৬ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্যাডিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও লেখক ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। এছাড়াও, স্লিপ অঞ্চলে দূর্দান্ত ফিল্ডিং করতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
১৯৩৯-৪০ মৌসুম থেকে ১৯৬০ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস ও কুইন্সল্যান্ড এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। যুদ্ধের পূর্বেকার বছরগুলোয় এনএসডব্লিউ’র পক্ষে খেলেছেন। তবে, কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে খেলাকালীন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার সুযোগ পান। শেষ কয়েক মৌসুম ইংল্যান্ডে লীগ ও কাউন্টি ক্রিকেটে অংশ নেন।
১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বমোট ১৪ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৪৫-৪৬ মৌসুমে বিল ব্রাউনের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের ইতিহাসে এটিই অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী খেলা ছিল। ২৯ মার্চ, ১৯৪৬ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। ডন টলন, আর্নি টোশ্যাক, ইয়ান জনসন, কিথ মিলার ও রে লিন্ডওয়ালের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। দলের একমাত্র ইনিংসে ৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। শেষদিকে বোলিং করতে নামেন। ০.২-০-০-১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। চার-দিন নিয়ে গড়া টেস্টটি দুই দিনে শেষ হয়ে যায়। স্বাগতিক দল ৪২ ও ৫৪ রানে গুটিয়ে গেলে প্রতিপক্ষের কাছে ইনিংস ও ১০৩ রানে পরাভূত হয়।
১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে ওয়ালি হ্যামন্ডের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের বিপক্ষে ষোল উইকেট দখল করেন। সিরিজের প্রথম টেস্টে বেশ সফল ছিলেন। ব্রিসবেনে দ্বিতীয় দিনের বিকেলে ইংরেজ বোলিং তুনোধুনো করে ৯২ রানে অপরাজিত ছিলেন। তবে, বিশ্রামের পরদিন খেলা শুরু হলে তিনি আর মাত্র ৩ রান যোগ করতে পেরেছিলেন। রাইটের বলে এলবিডব্লিউতে বিদেয় নেন। সিডনি টেস্টে আট উইকেট পান। তন্মধ্যে, ৫/১০৯ লাভ করেন। মেলবোর্নে আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান হয়ে হুক ও ড্রাইভে ১০৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। আবারও সিডনিতে চূড়ান্ত টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৫/৪৪ পান। এ সিরিজের ২৭.২৭ গড়ে ১৮ উইকেট পান। রে লিন্ডওয়ালের সাথে শীর্ষ উইকেট সংগ্রাহকে পরিণত হন। এছাড়াও, ৫৪.৫০ গড়ে ২৭২ রান তুলেন।
১৯৪৯-৫০ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে লিন্ডসে হ্যাসেটের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ২৪ ডিসেম্বর, ১৯৪৯ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ৩১ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/১৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সফরকারীরা ইনিংস ও ৮৫ রানে জয়লাভ করলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
একই সফরের ৩ মার্চ, ১৯৫০ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ব্যাট হাতে নিয়ে ৬ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ২/২৯ ও ২/৪৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সফরকারীরা ইনিংস ও ২৫৯ রানে জয়লাভ করলে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১২ জানুয়ারি, ১৯৪১ তারিখে তালিকাভূক্ত হন। ৩৮নং স্কোয়াড্রনে (আরএএএফ) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদবীধারী ছিলেন। বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রিকেটার হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন।
টেস্টগুলো থেকে ৩৫.৩০ গড়ে ৪৫৯ রান ও ২৭ গড়ে ৩৬ উইকেটের সন্ধান পান। তবে, প্রথম-শ্রেণীর বিস্ময়কর পরিসংখ্যান গড়েছেন। ৩২.৮৫ গড়ে আঠারো শতক সহযোগে ১২৪২১ রান ও ২৭.৪৭ গড়ে ৬০২ উইকেট পেয়েছেন। এছাড়াও, ২৬২টি ক্যাচ তালুবন্দীসহ দুইটি স্ট্যাম্পিং করেছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। আরজে ম্যাককুল নামীয় সন্তানের জনক। ৫ এপ্রিল, ১৯৮৬ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের কনকর্ড এলাকার হাসপাতালে ৬৯ বছর ১১৭ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
