১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৬ তারিখে কো ডারহামের ঈগলসক্লিফ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯২০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
পিতা রেলওয়েতে চাকুরী করতেন। নর্টন থেকে টিসাইডে তাঁর পরিবারের সাথে চলে যান। এ পর্যায়ে পার্কিন সিনিয়র স্টেশন মাস্টারের দায়িত্ব পালন করতেন। বারো বছর বয়সে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নর্টন ক্রিকেটার দলকে সুসংগঠিত করেন। তিনি বোলিং করতেন না। এগারো নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নামতে। তবে, সীমানা বরাবর ফিল্ডিং করে প্রত্যেক বলকেই খরগোশের ন্যায় দ্রুততার সাথে কুড়িয়ে ফেরৎ পাঠাতেন। এ অবস্থানে থাকাকালীন চার্লি টাউনসেন্ডের নজর কাড়েন। ১৬ বছর বয়সে শিক্ষানবীস ছাঁচাইশিল্পী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। একই বয়সে নর্থ ইয়র্কশায়ার ও সাউথ ডারহাম লীগের নর্থ অর্মেসবি থেকে আমন্ত্রিত হন।
ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার ও ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯০৬ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। প্রকৃত যাদুকরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। একগুচ্ছ কৌশল প্রয়োগে বোলিং করতেন। সচরাচর তিনি অফ-ব্রেক বোলার হিসেবে খেলতেন। শুরুরদিকে বলে পেস আনয়ণ করতেন। মিডিয়াম বোলিংয়ের চেয়েও গতিসম্পন্ন ছিল। বলে বৈচিত্র্যতা আনয়ণ করতেন। কয়েকটি তাঁর নিজস্ব উদ্ভাবনী শক্তিতে ভরপুর ছিল। প্রায়শঃই এক ওভারে সবগুলো প্রয়োগ করতেন। বল ডেলিভারির মাঝে দর্শকদের মাতিয়ে রাখতেন। প্যাভিলিয়নে ফেরৎ আসার পর তাঁর পেশাদার সহকর্মীদের সাথে কৌতুক, গল্পে মত্ত থাকতেন ও কার্ড খেলতেন।
১৯২০ থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের পক্ষে সব মিলিয়ে ১০ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ৩৫.২৫ গড়ে ৩২ উইকেট দখল করেছিলেন। ১৯২০-২১ মৌসুমে জনি ডগলাসের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ১৭ ডিসেম্বর, ১৯২০ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অ্যাব ওয়াডিংটন, জ্যাক রাসেল ও প্যাটসি হেনড্রেনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১/৫৮ ও ৩/১০২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ৪* ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৩৭৭ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়ে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।
১৯২৪ সালে নিজ দেশে হার্বি টেলরের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ১৪ জুন, ১৯২৪ তারিখে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ৮* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৩৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ইনিংস ও ১৮ রানে জয়লাভ করলে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
গণমাধ্যমের কিছু নেতিবাচক প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে খেলোয়াড়ী জীবন সংক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। সব মিলিয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে ১৭.৫৮ গড়ে ১০৪৮ উইকেট দখল করেছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। রেগ পার্কিন নামীয় সন্তানের জনক। ১৫ জুন, ১৯৪৩ তারিখে ল্যাঙ্কাশায়ারের চিদাম হিল এলাকায় ৫৭ বছর ১১৭ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। কণ্ঠনালীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ম্যানচেস্টার ক্রিমাটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত শবানুষ্ঠানে হার্স্ট, রোডস ও হ্যারি ম্যাকপিস উপস্থিত ছিলেন। ওল্ড ট্রাফোর্ডের উইকেটে তাঁর দেহভষ্ম ছিটিয়ে দেয়া হয়।
