২৭ নভেম্বর, ১৯৮৫ তারিখে মাতাবেলেল্যান্ডের প্লামট্রি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছেন। ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
২০০৩-০৪ মৌসুম থেকে ২০২০-২১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে ম্যাশোনাল্যান্ড, মাতাবেলেল্যান্ড, মাতাবেলেল্যান্ড তুস্কার্স ও ওয়েস্টার্নসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, আমখোসি ও ওয়ার্ল্ড জায়ান্টসের পক্ষে খেলেছেন। ১৯ মার্চ, ২০০৪ তারিখে বুলাওয়েতে মাতাবেলেল্যান্ড বনাম মনিকাল্যান্ডের মধ্যকার খেলায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান।
বিদ্রোহী খেলোয়াড়দের খেলায় অংশগ্রহণের অনীহা প্রকাশের ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রিকেটে আকস্মিক সুযোগ লাভকারী খেলোয়াড়দের অন্যতম ছিলেন। তবে, পূর্বেকার ক্রীড়াশৈলীকে পাশ কাটিয়ে ঠিকই নিজের যোগ্যতা প্রকাশে সচেষ্ট ছিলেন।
দীর্ঘদেহী সিম বোলার ছিলেন। পিচে বলকে জোড়ালোভাবে ফেলে ব্যাটের বাইরের দিকে নিয়ে যেতে পারঙ্গমতা প্রকাশ করেছেন। ওডিআইয়ে নতুন বল নিয়ে ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে সুইং করানোয় সবিশেষ দক্ষতা দেখিয়েছেন। তবে, অনেক উদীয়মান দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলারের ন্যায় তার মাঝেও ধারাবাহিকতার সমস্যা ছিল। চমৎকার বোলিং ভঙ্গীমা নিয়ে অগ্রসর হলেও ডেলিভারীকালীন সামনের পায়ে ত্রুটি লক্ষ্যণীয়।
২০০৪ সাল থেকে ২০২০ সময়কালে জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বমোট ১৫ টেস্ট, ৮৪টি ওডিআই ও ৩২টি টি২০আইয়ে অংশ নিয়েছেন। ২৮ নভেম্বর, ২০০৪ তারিখে হারারেতে সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআই অভিষেক ঘটে। ঐ খেলায় উইকেট শূন্য অবস্থায় মাঠ ত্যাগ করতে হয়। তবে, নিজের উচ্চতা ও বলে বাঁক আনয়ণের ফলে কিছু সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের শীর্ষসারির ব্যাটসম্যানদের সমীহের পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন। এরপর, টেস্ট দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ পান।
২০০৪-০৫ মৌসুমে টাটেন্ডা টাইবু’র নেতৃত্বে জিম্বাবুয়ে দলের সদস্যরূপে বাংলাদেশ গমন করেন। ৬ জানুয়ারি, ২০০৫ তারিখে চট্টগ্রামে স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। গ্রায়েম ক্রিমার ও বার্নি রজার্সের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ টেস্টে চার উইকেট পান। তবে, উইকেটগুলো লাভের জন্যে শতাধিক রান খরচ করতে হয়েছিল। স্বাগতিক দল ২২৬ রানে জয় তুলে নেয় ও দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
টেস্টের শুরুর দিনগুলোয় দৃষ্টিনন্দন খেলা উপহার দিতে পারেননি। চার খেলায় অংশ নিয়ে ৩৪৩ রান খরচায় মাত্র ৩ উইকেট পান। ফলশ্রুতিতে, দল থেকে বাদ পড়েন। তবে, নিজের প্রতিভার উন্মোচনে সাহসী ভূমিকায় অগ্রসর হওয়াসহ পরিচর্যার বিষয়টি জড়িত হয়ে পড়ে।
জিম্বাবুয়ের বোলিং কোচ হিসেবে হিথ স্ট্রিকের নিযুক্তি লাভের ফলে আশাতীত উপকৃত হন। বোলিং ভঙ্গীমায় মসৃণতা আনয়ণসহ আউট-সুইঙ্গারগুলো আরও ক্রমাগত ছুঁড়তে থাকেন এবং পেসের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ পর্যায়ে অবশ্য অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে ওয়াইড বল করতেন। তাসত্ত্বেও, পরবর্তী বছরগুলোয় জিম্বাবুয়ের প্রথম একাদশের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পান।
খুবই স্বল্প সময়ের জন্যে ক্রিজে অবস্থান করতেন। আগস্ট, ২০০৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক বিকেলে দুইবার স্ট্যাম্পিংয়ের শিকারে পরিণত হন। এরপর, দ্বিতীয় খেলায় ৩ রানে রান-আউট হন। তাসত্ত্বেও, দলীয় সঙ্গীর অর্ধ-শতরান হাঁকানোয় অভিনন্দন জানাতে পেরেছিলেন। এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বাপেক্ষা বাজে ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন।
২০০৮ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। নির্ধারিত ১০ ওভারে ৬/৫২ বোলিং পরিসংখ্যান গড়লেও দলের পরাজয় অবলোকন করতে হয়েছিল। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ে দলের অন্যতম প্রধান বোলার ছিলেন। চার খেলায় অংশ নিয়ে পরিমিত সফলতা পান।
স্বেচ্ছা নির্বাসন শেষে জিম্বাবুয়ে দল টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসার পর দারুণ খেলেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেট পান ও ২০০৪ সালের পর দলের প্রথম টেস্ট বিজয়ে বিরাট ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এ ধারা অব্যাহত রেখেছিলেন। এছাড়াও, ২০১২ সালের ত্রি-দেশীয় টি২০ সিরিজে রিচার্ড লেভি, হাশিম আমলা, জেপি ডুমিনি ও আলবি মরকেলসমৃদ্ধ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দারুণ খেলেন। নির্ধারিত ৪ ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে দলের বিজয়ে অবদান রাখেন।
তবে, পিঠের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়াসহ উদীয়মান টেন্ডাই চাতারা ও ব্রায়ান ভিটোরি’র উত্থানে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হন। টেস্টে অংশগ্রহণের জন্যে বিবেচিত না হলেও ওডিআইয়ে ঠিকই অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অগ্রসর হয়েছেন।
২০১১-১২ মৌসুমে নিজ দেশে রস টেলরের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ১ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে বুলাওয়েতে অনুষ্ঠিত সিরিজের একমাত্র টেস্টে সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বতন সেরা ছিল ৪/১০৯। খেলায় তিনি ৪/৯২ ও ১/৫৪ লাভ করেন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে উভয় ইনিংসে শূন্য রানে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি’র শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। ড্যানিয়েল ভেট্টোরি’র অসাধারণ অল-রাউন্ড সাফল্যে স্বাগতিকরা ৩৪ রানে পরাজয়বরণ করে।
২০১৭-১৮ মৌসুমে গ্রায়েম ক্রিমারের নেতৃত্বে জিম্বাবুয়ে দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ তারিখে জিকিবার্হায় অনুষ্ঠিত সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। স্বাগতিক দল ইনিংস ও ১২০ রানে জয় পায়। খেলায় তিনি ৩/৫৮ লাভ করেন। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে জোড়া শূন্য রানের সন্ধান পান। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
