২৪ অক্টোবর, ১৮৬৯ তারিখে ভিক্টোরিয়ার স্যান্ডব্রিজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
ব্যাটিংয়ে অসম্ভব ধৈর্য্যশীলতার পরিচয় দিতে ও নিখুঁতমানের বোলার হিসেবে সবিশেষ পরিচিতি লাভ করেন। তবে, শ্রবণেন্দ্রিয়ের সমস্যার কারণে ফিল্ডিং ও উইকেটের প্রান্ত বদলে বিরূপ প্রভাব ফেলতেন। ১৮৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ১৯০৫ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
১৮৯৪ থেকে ১৯০৫ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বমোট ১৭ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৯৪-৯৫ মৌসুমে নিজ দেশে অ্যান্ড্রু স্টডার্টের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১৪ ডিসেম্বর, ১৮৯৪ তারিখে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। আর্নি জোন্স, ফ্রাঙ্ক ইরিডেল, জো ডার্লিং ও জন রিডম্যানের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ১৫ ও ২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/২৫ ও ২/৬৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ঐ খেলায় স্বাগতিক দল নাটকীয়ভাবে ১০ রানে পরাজয়বরণ করলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
১৮৯৭-৯৮ মৌসুমে নিজ দেশে আর্চি ম্যাকলারিনের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে নো-বলে বোল্ড হন। তবে, আম্পায়ারের আওয়াজ বুঝতে না পারায় উইকেট ত্যাগ করেন ও উইকেট-রক্ষক বিল স্টোরার তাঁকে রান-আউটে বিদেয় করেন। এ সিরিজে সেরা সময় অতিবাহিত করেন। ৫৮.৬৬ গড়ে ৩৫২ রান তুলেন।
১৮৯৮ সালের নববর্ষের দিনে সিরিজের মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। নিজস্ব প্রথম ও একমাত্র টেস্ট শতক হাঁকান। ২৪৫ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে ১১২ রান তুলে দলের একমাত্র শতরানের ইনিংস খেলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। বল হাতে নিয়ে ০/৪৪ ও ০/১৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ঐ খেলায় তাঁর দল ইনিংস ও ৫৫ রানে জয় পেলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সমতায় ফেরে।
এছাড়াও, ১৮৯৯ ও ১৯০৫ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেছিলেন। ১৮৯৯ সালের সফরে অনেক সেরা ব্যাটসম্যানের সাফল্যে ম্রিয়মান হয়ে পড়লেও ১৭ গড়ে ৫৪৫ রান তুলেছিলেন। দলটি অত্যন্ত শক্তিধর খেলোয়াড়ের প্রাচুর্য্য থাকায় পাঁচ টেস্ট থেকে কেবলমাত্র একটি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ওভালে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে অপরাজিত ৩১ ও ৭৭ রান তুলেছিলেন।
১৯০৫ সালে জো ডার্লিংয়ের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ১৪ আগস্ট, ১৯০৫ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০/৪৭ ও ০/২৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ওয়াল্টার ব্রিয়ার্লি’র বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। তবে, খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও সফরকারীরা ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।
অস্ট্রেলিয়া দলে তেমন বড় ধরনের শক্তি হিসেবে চিত্রিত করতে না পারলেও দূর্দান্ত অল-রাউন্ডার হিসেবে যে-কোন একাদশে খেলার উপযোগী ছিলেন। ক্রিকেটের স্বর্ণযুগে অন্যতম সেরা অল-রাউন্ডার হিসেবে চিত্রিত হয়েছিলেন। ২৪.২৫ গড়ে ৩৩৫ উইকেট সংগ্রহের পাশাপাশি ২১.২৮ গড়ে ৩৩২১ রান তুলে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের পরিচিতি ঘটান।
২৬ নভেম্বর, ১৯১৮ তারিখে ভিক্টোরিয়ার টুরাক এলাকায় মাত্র ৪৯ বছর ৩৩ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বব ম্যাকলিওড ১৮৯০-এর দশকের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলেছেন।
