|

চার্লস ম্যারিয়ট

১৪ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৫ তারিখে ল্যাঙ্কাশায়ারের হিটন মুর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে খেলতেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৩০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

জন্ম নিবন্ধনে তিনি চার্লি স্টোওয়েল ম্যারিয়ট নামে পরিচিত। ‘ফাদার’ ডাকনামে পরিচিতি লাভ করেন। নিজের সময়কালে অন্যতম সেরা লেগ-ব্রেক ও গুগলি বোলার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। বলকে বিশাল বাঁক খাওয়াতে পারতেন। ঘরোয়া পর্যায়ের প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট ও ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় দলের পক্ষে খেলেছেন। ১৯১৯ থেকে ১৯৩৮ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। অসাধারণ লেগ স্পিনার ছিলেন। এক দশকের অধিক সময় কেন্টের পক্ষাবলম্বন করেছেন। যে-কোন পিচে বলকে বাঁক খাওয়ানোর সক্ষমতার কারণে কেন্ট দলের অমূল্য সম্পদে পরিণত হন। কিছুটা অপ্রত্যাশিতভাবে বাহু উপরে নিয়ে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। উইজডেনে তাঁর এ ধরনের বোলিং ভঙ্গীমার বিষয়ে মন্তব্য করে যে, ‘স্বাভাবিকভাবে বাহুতে উপরে নিয়ে নমনীয় ভঙ্গীমায় বোলিংয়ের পূর্বে পিছনে নিয়ে যেতেন। তাঁর খেলার ধরন অনেকাংশেই কলিন ব্লাইদের অনুরূপ ছিল।’

১৯৩১ সালের গ্রীষ্মে নিউজিল্যান্ড দল ইংল্যান্ড সফরে আসলে প্রায় একাকী দলটিকে বিপর্যস্ত করেন। ৫/১০২ ও ৭/৫৮ নিয়ে কেন্টের ৯ উইকেটের বিজয়ে বিরাট ভূমিকা রেখেছিলেন। পরের মৌসুমে সফররত ভারতীয় একাদশের বিপক্ষে খেলতে নেমে ফ্রিম্যানকে সাথে নিয়ে আরও একটি জয় এনে দেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ভূমিকা বেশ প্রশংসনীয় ছিল। ফ্রিম্যানের ৬/৬৯ লাভের পাশাপাশি তিনি ৩/৪৮ পান। ১৮০ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় ধাবিত দলটিকে ১২১ রানে থামিয়ে দেন।

১৯৩৩ সালে সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন। একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে এক টেস্টে সর্বাপেক্ষা সফল ও দূর্ভাগ্যজনক এক টেস্টের বিস্ময়কারীতে পরিণত হন। খেলায় দুইবার পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পেয়েছেন। ঐ বছর নিজ দেশে জ্যাকি গ্র্যান্টের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ১২ আগস্ট, ১৯৩৩ তারিখে লন্ডনের ওভালে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। চার্লি বার্নেটের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ টেস্টে স্বাগতিক দল ইনিংস ও ১৭ রানের ব্যবধানে জয়লাভ করলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

প্রথম ইনিংসে ১১.৫-২-৩৭-৫ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ভালো করেন। এবার তিনি ২৯.২-৬-৫৯-৬ পান। সব মিলিয়ে খেলায় ৯৬ রান খরচায় ১১ উইকেট দখল করেছিলেন। দলের একমাত্র ইনিংসে ম্যানি মার্টিনডেলের বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন।

২৫টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৪.৪১ গড়ে ৫৭৪ রান সংগ্রহ করেন। তবে, রান সংখ্যার তুলনায় উইকেট সংখ্যা অধিক ছিল ও ৭১১ উইকেট দখল করেছিলেন। অধিকাংশ উইকেটই কেন্টের পক্ষে ২০.১১ গড়ে পেয়েছিলেন। ৪৮বার পাঁচ-উইকেট ও দশবার দশ উইকেট লাভ করেছিলেন। আন্তঃবিশ্বযুদ্ধকালীন টিচ ফ্রিম্যানের সাথে কেন্টের অগ্রযাত্রায় বিরাট ভূমিকা রেখেছিলেন।

বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন। সোমের যুদ্ধে প্রাণে বেঁচে যান। ১৩ অক্টোবর, ১৯৬৬ তারিখে মিডলসেক্সের ডলিস হিল এলাকায় ৭১ বছর ২৯ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • | |

    নরেন্দ্র হিরবাণী

    ১৮ অক্টোবর, ১৯৬৮ তারিখে উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। গোরখপুরের সম্ভ্রান্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। পিতা ইটের ভাটার স্বত্ত্বাধিকারী ছিলেন। পারিবারিক ব্যবসা থেকে দূরে থেকে ক্রিকেটার হবার স্বপ্নে বিভোঁর ছিলেন। কৈশোরকালে ক্রিকেটে সাফল্য লাভের…

  • |

    পিটার কার্স্টেন

    ১৪ মে, ১৯৫৫ তারিখে নাটালের পিটারমারিৎজবার্গে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মাঝে-মধ্যে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। ১৯৯০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুম থেকে ১৯৯৬-৯৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন সরব রেখেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে বর্ডার ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স এবং…

  • |

    জাভেদ ওমর

    ২৫ নভেম্বর, ১৯৭৬ তারিখে ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। ‘গুল্লা’ ডাকনামে পরিচিত জাভেদ ওমর বেলিম কখনোবা ‘ওমর বেলিম’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুম থেকে ২০১১-১২ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর…

  • |

    আলবার্ট প্যাডমোর

    ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৪৬ তারিখে বার্বাডোসের হলস ভিলেজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ১৯৭০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। লিকলিকে গড়নের অধিকারী। তাঁর বোলিংয়ের ধরন অনেকাংশেই ল্যান্স গিবসের অনুরূপ ছিল। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে বার্বাডোসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৭২-৭৩…

  • |

    আকাশ দীপ

    ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৯৬ তারিখে বিহারের রোতাসের দেহরি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রাখছেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করেন। ভারতের পক্ষে টেস্টে অংশ নিচ্ছেন। ২০১৯-২০ মৌসুম থেকে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বাংলা ও বহিঃভারত দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, রয়েল চ্যালেঞ্জার্সের পক্ষে খেলেছেন। ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯…

  • |

    নাসির জামশেদ

    ৬ ডিসেম্বর, ১৯৮৯ তারিখে পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। বামহাতে ব্যাটিং করেন। পাকিস্তানের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। বামহাতি ধ্রুপদীশৈলীর অধিকারী আগ্রাসী উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের অবস্থান সুদৃঢ়করণে দীর্ঘদিনের আশাবাদ পূরণে প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখতে সচেষ্ট ছিলেন। সাঈদ আনোয়ার ও ম্যাথু হেইডেনকে পছন্দের তালিকার শীর্ষে রেখেছেন। ব্যাটিংয়ের ধরন অনেকাংশেই তাঁদের…