| | |

চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত

৩০ সেপ্টেম্বর, ১৯৬১ তারিখে মহারাষ্ট্রের বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, প্রশাসক ও কোচ। মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

দর্শনীয় স্ট্রোক খেলতেন ও দক্ষ উইকেট-রক্ষক হিসেবে সুনাম ছিল তাঁর। ১৯৭৯-৮০ মৌসুম থেকে ২০০০-০১ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে আসাম, মধ্যপ্রদেশ ও বোম্বের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বোম্বে দলের পক্ষে ব্যাটসম্যান, উইকেট-রক্ষক ও অধিনায়ক-এ তিন দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল। তাঁর ব্যাটিং প্রতিভা সবিশেষ লক্ষ্যণীয় ছিল ও আক্রমণাত্মক ছিল। ফলশ্রুতিতে, কিরণ মোরেকে উইকেটের পিছনে রেখে তাঁকে মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবেও রাখা হয়েছিল।

১৯৮২-৮৩ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় ১৫৭ রান তুলে নিজেকে তুলে ধরেন। তাসত্ত্বেও, তাঁর দল পরাজিত হয়েছিল। দুইবার স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেছেন। ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে ৯৫.০০ গড়ে ৫৭০ রান ও ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে ৭৪.৪২ গড়ে ৫২১ রান তুলেছেন। ফলশ্রুতিতে, ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে তাঁকে বোম্বে দলের অধিনায়কত্ব করার সুযোগ এনে দেয়। পরবর্তী দুই মৌসুমেও এ দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সময়কালে ভারতের পক্ষে পাঁচটিমাত্র টেস্ট ও ৩৬টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১০ এপ্রিল, ১৯৮৬ তারিখে শারজায় অনুষ্ঠিত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে প্রবেশ করেন। একই বছর কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ১৯ জুন, ১৯৮৬ তারিখে লিডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংরেজ দলের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। কেবলমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। ২৩ ও ১৭ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, দিলীপ বেঙ্গসরকারের অপূর্ব ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে খেলায় স্বাগতিকরা ২৭৯ রানের জয় পায় ও তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে সৈয়দ কিরমানি’র কাছ থেকে গ্লাভসের দায়িত্ব পালনের জন্যে মনোনীত হয়েছিলেন। তবে, এ দায়িত্ব গ্রহণে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। অংশগ্রহণকৃত টেস্টগুলোর তিনটিতেই দলের মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁকে খেলতে হয়েছে।

১৯৯১-৯২ মৌসুমে মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া সফরে দলের নিয়মিত উইকেট-রক্ষক কিরণ মোরে’র অনুপস্থিতির সুযোগে কেবলমাত্র দুই টেস্টে স্ট্যাম্পের পিছনে অবস্থানের জন্যে তাঁকে দলে রাখা হয়। এগারোটি ক্যাচ নিয়ে স্বীয় দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। ২৫ জানুয়ারি, ১৯৯২ তারিখে অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অংশ নেন। চারটি ক্যাচসহ একটি স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজেকে জড়ান। এছাড়াও, ব্যাট হাতে নিয়ে ১৫ ও ৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তবে, স্বাগতিক দল ক্রেগ ম্যাকডারমটের অসামান্য বোলিংশৈলীর কারণে ৩৮ রানে জয় পায় ও পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।

আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের কারণে কিছু সময় ভারতের একদিনের আন্তর্জাতিক দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা এনে দেয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে উপেক্ষিত হবার পর মধ্যপ্রদেশ দলের পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে যুক্ত থাকেন। কয়েক মৌসুম ব্যাট হাতে বেশ ভালো খেলেন। এ দলের পক্ষে এক দশক খেলে ২০০০-০১ মৌসুমের পর অবসর গ্রহণ করেন। সব মিলিয়ে ১৩৮টি খেলা থেকে ৪৮.৫৭ গড়ে ৮২০৯ রান সংগ্রহ করেছেন ও ৩২২টি ডিসমিসাল ঘটিয়েছিল। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর মুম্বই দলের কোচের দায়িত্বে ছিলেন ও বেশ সফল ছিলেন। ২০০২-০৩ ও ২০০৩-০৪ মৌসুমে রঞ্জী ট্রফিতে দলের উপর্যুপরী শিরোপা বিজয়ে ভূমিকা রাখেন। এরপর, আগস্ট, ২০০৫ সালে মহারাষ্ট্র দলের কোচ হন। এছাড়াও, সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে কেনিয়ার জাতীয় দলের কোচ হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। ভারতের কিশোর পর্যায়ের ক্রিকেটের জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর প্রধান হিসেবে রয়েছেন। বিদর্ভের সফলতায় ভূমিকা রাখেন। ২৫ মার্চ, ২০২০ তারিখে বিদর্ভ থেকে মধ্যপ্রদেশের প্রধান কোচ হিসেবে তাঁর মনোনয়নের কথা ঘোষণা করা হয়।

Similar Posts