Skip to content

২ মে, ১৯৬৯ তারিখে ত্রিনিদাদের কান্টারো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি, দলের অধিনায়কত্ব করেছেন।

আধুনিক যুগে বিশ্বের অন্যতম সেরা বামহাতি ব্যাটসম্যান। বীর, যাদুকর, বিনোদনকারী, খেলা বিজয়ী, নেতা প্রভূতঃ অভিধায় আবির্ভূত হয়েছিলেন। ব্যাট হাতে নিয়ে যাদুকরের ভঙ্গীমায় নিজেকে চিত্রিত করেছিলেন। পিচকে অনেকাংশে যাদুদণ্ডের ন্যায় দেখতেন। সহজাত প্রতিভাবান, অপরিসীম শক্তির অধিকারী হিসেবে আধুনিক যুগের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের মর্যাদা লাভ করেন। তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরন শুধুমাত্র সাধারণ দর্শকদেরই নজর কাড়েনি, বরঞ্চ পেশাদার ক্রিকেটারদেরও মনোরঞ্জনে ব্যস্ত রেখেছিল। অগণিত রেকর্ড ভেঙ্গে নিজের করে নিয়েছেন ও বিশাল বিশাল ইনিংস খেলে রান ক্ষুধা নিবারণে তাঁর নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকেই তাঁর মাঝে ভিভ রিচার্ডস, গর্ডন গ্রীনিজ ও ডেসমন্ড হেইন্সের ন্যায় ব্যাটিং দক্ষতা লক্ষ্য করা যায়। খেলোয়াড়ী জীবনের অধিকাংশ সময়ই সফল ছিলেন। তবে, মাঝামাঝি সময়ে এসে তাঁর খেলার মান পড়তির দিকে চলে যেতে থাকে। স্বর্ণালী সময়ে বেপরোয়া মনোভাব ও দুঃসাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। আকস্মিকভাবে ছন্দপতন ঘটে। নতুন সহস্রাব্দে এসে কৌশলগতভাব পরিলক্ষিত হয় ও ২১ বছর বয়সীদের ন্যায় বোলিং আক্রমণকে তুচ্ছ জ্ঞানে নিয়ে যেতে থাকেন।

পরিবারের ১১ সন্তানের মধ্যে দশম স্থানে রয়েছেন। আল্ফ গোভারের পরিচালনাধীন হার্ভার্ড কোচিং ক্লিনিকে ক্রিকেট খেলা শিখতে শুরু করেন। এ সময়ে তাঁর বয়স ছিল ছয় বছর। আল্ফ গোভার এক সময় তাঁর সম্পর্কে দ্য ক্রিকেটারে লিখেছিলেন যে, ‘তাঁর মাঝে সহজাত অপার সম্ভাবনা বিরাজমান। আমরা তাঁর স্ট্রোক প্লের বিশালতা পর্যবেক্ষণ করেছি।’ এছাড়াও, বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন ত্রিনিদাদের অনূর্ধ্ব-১৪ কিশোর দলে ফুটবল ও টেবিল টেনিসে অংশ নিয়েছিলেন। তবে, ক্রিকেটের দিকেই অধিক মনোনিবেশ ঘটান।

৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী। ১৫ বছর বয়সে পোর্ট অব স্পেনভিত্তিক ফাতিমা কলেজে পড়াশুনো করেছেন। এ পর্যায়ে আন্তঃবিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় এক মৌসুমে সাতবার তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শ করেছিলেন। ১৪ বছর বয়সে ১২৬.১৬ গড়ে ৭৪৫ রান সংগ্রহ করেন। ফলশ্রুতিতে, ত্রিনিদাদের অনূর্ধ্ব-১৬ দলের পক্ষে খেলার সুযোগ পান। এক বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন।

১৯৮৭-৮৮ মৌসুম থেকে ২০০৭-০৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ার এবং দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নর্দার্ন ট্রান্সভালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, আইসিসি বিশ্ব একাদশ, মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব, মুম্বই চ্যাম্পস ও সাউদার্ন রক্সের পক্ষে খেলেছেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজস্ব দ্বিতীয় খেলায় ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্বাডোসের বিপক্ষে তিন শতাধিক মিনিট ব্যয় করে ৯২ রান তুলেছিলেন। এ পর্যায়ে জোয়েল গার্নার ও ম্যালকম মার্শালের ন্যায় বোলারদের মোকাবেলা করেছিলেন। এরপর থেকে তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০ বছর বয়সে ১৯৯০ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়কের মর্যাদা লাভ করেন। দলকে গেডেস গ্র্যান্ট শীল্ডের শিরোপা বিজয়ে নেতৃত্ব দেন।

১৯৯০ থেকে ২০০৭ সময়কালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বমোট ১৩১ টেস্ট ও ২৯৯টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছেন। ১৯৯০-৯১ মৌসুমে ডেসমন্ড হেইন্সের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সদস্যরূপে পাকিস্তান সফরে যান। ৯ নভেম্বর, ১৯৯০ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জগতে প্রবেশ করেন। ১১ রান তুলতে পেরেছিলেন। ভিভ রিচার্ডসের অনুপস্থিতিতে টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রশস্ত হয়। একই সফরের ৬ ডিসেম্বর, ১৯৯০ তারিখে লাহোরে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অংশ নেন। প্রতিপক্ষীয় মাসুদ আনোয়ারের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ৪৪ ও ৬ রান সংগ্রহ করলেও পরবর্তীকালে বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। তবে, কার্ল হুপারের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায় ও অমিমাংসিত অবস্থায় সিরিজটি শেষ হয়।

১৯৯২ সালে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ বছর কেপলার ওয়েসেলসের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ১৮ এপ্রিল, ১৯৯২ তারিখে বার্বাডোসের ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৪৪ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ১৭ ও ৬৪ রান সংগ্রহসহ পাঁচটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। কার্টলি অ্যামব্রোসের অনবদ্য বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ৫২ রানে জয়লাভ করে।

১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে দলের বাদ-বাকী সদস্যরা যখন নিজেদের সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন তখন তিনি ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে ৩৩৩ রান তুলেন। জানুয়ারি, ১৯৯৩ সালে নিজের প্রতিভার উন্মোচন ঘটান। সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৭৭ রানের মনোমুগ্ধকর শতক হাঁকান। এ ইনিংসের কল্যাণে সিরিজের বাঁক ঘুরে যায় ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করতে সমর্থ হয়। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম শতক হাঁকানোর ক্ষেত্রে এ ইনিংসটি চতুর্থ সর্বোচ্চ। ক্রিকেট বিশ্লেষকদের অনেকের সাথে তিনিও এ ইনিংসকে তাঁর সেরা হিসেবে বিবেচনা করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। লিজেল রোভডাস নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালে কন্যা সন্তানের জনক হন ও ঐ ইনিংসকে স্মরণীয় করে রাখতে কন্যার নাম ‘সিডনি’ রাখেন।

ডন ব্র্যাডম্যানের পর থেকে ক্রমাগত ও দ্রুতলয়ে তাঁর ন্যায় অন্য কেউ জাকজমকভাবে রান সংগ্রহে তৎপরতা দেখাতে পারেননি। উইকেটে দাঁড়ানোর ভঙ্গীমাও বেশ দর্শনীয় ছিল। ব্যাটকে উঁচুতে তুলে ধরতেন, সামনের হাঁটু বাঁকিয়ে ওজনকে তুলে ধরতেন, চোখগুলো নীচু ও সমান রেখে ব্যাটিং কর্মে মনোনিবেশ ঘটাতেন। বল মাটিতে পড়া মাত্র সীমানা বরাবর প্রেরণে তৎপর হতেন। তিন অঙ্কের রান সংগ্রহকালে কয়েকটি রেকর্ডের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। ১৯৯৪ সালে দুই মাসের ব্যবধানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৭৫ এবং ওয়ারউইকশায়ারের সদস্যরূপে ডারহামের বিপক্ষে অপরাজিত ৫০১ রান তুলে টেস্ট ও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের বিশ্বরেকর্ডগুলো ভেঙ্গে ফেলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে হানিফ মোহাম্মদের ৪৯৯ রানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডকে নিজের করে নেন।

২৪ বছর বয়সে অ্যান্টিগুয়ায় ৩৭৫ রান তুলে স্বদেশী গ্যারি সোবার্সের অপরাজিত ৩৬৫ রানের দীর্ঘদিনের রেকর্ড ভঙ্গ করেন। প্রায় এক দশক পর একই মাঠে এ সংখ্যাকে ছাঁপিয়ে যান। প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টেস্টে ৪০০ রান তোলার অনন্য গৌরবের অধিকারী হন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ সাফল্য পান। এরফলে, ডন ব্র্যাডম্যানের পর দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে দুইবার টেস্টে ত্রি-শতক হাঁকান। ব্রায়ান লারা মন্তব্য করেন যে, প্রকৃতই তিনি ক্রিকেটকে উপভোগ করেছেন। ‘আমি এখন পিছনের দিকে ফিরে তাকাচ্ছি। দশ বছর পর শুরু করি ও টি২০ খেলছি। কিন্তু, আমি যদি দশ বছর পূর্বে জন্মগ্রহণ করতাম তাহলে হয়তোবা ঐ সময়ের প্রভাববিস্তারকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সদস্য হতাম। খেলা শুরুর পর থেকে আমি ভীষণ সুখী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট নিচেরদিকে থাকলেও আমি আমার ভূমিকা পালনে সচেষ্ট … চেষ্টা চালাচ্ছি ও পতাকা উড়াচ্ছি। আমার ১৭ বছরের খেলোয়াড়ী জীবনে টেস্ট, ওডিআই ও বিশ্বকাপের প্রত্যেকটি মিনিট কাজে লাগিয়েছি। কেবলমাত্র আমি কখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দিতে পারিনি।’ কিন্তু, তাৎক্ষণিক সুনামের বিপক্ষে বিভ্রান্তিকর ও স্ব-বিরোধী চরিত্রে পরিণত হন।

১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে কোর্টনি ওয়ালশের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সদস্যরূপে নিউজিল্যান্ড সফরে যান। ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি দলের একমাত্র ইনিংসে ১৪৭ রান সংগ্রহ করেন। জিমি অ্যাডামস ও জুনিয়র মারে’র শতকের সাথে তিনিও টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগৃহীত ৬৬০/৫ডি. রানের চতুর্থ দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহের সাথে নিজেকে জড়ান। এছাড়াও, এটিই নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ খরুচে রান ছিল। পাশাপাশি, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। দলীয় অধিনায়কের অসাধারণ বোলিং কৃতিত্বে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ৩২২ রানে পরাভূত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে নিজ দেশে লি জার্মনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের মুখোমুখি হন। ২৭ এপ্রিল, ১৯৯৬ তারিখে সেন্ট জোন্সে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৪০ ও ৭৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তন্মধ্যে, চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে চাবিরতির পর ব্যক্তিগত ১৩ রানে থাকাকালে কেনেডি’র বলে স্টিফেন ফ্লেমিং ও স্বল্পবিরতির পর হ্যারিসের বলে লি জার্মনের মুঠো ফস্কে জীবন ফিরে পান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালেও স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে বিজয়ী হয়।

১৯৯৭ সালে নিজ দেশে অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান দলের মুখোমুখি হন। ২০ জুন, ১৯৯৭ তারিখে কিংস্টনে অনুষ্ঠিত সফররত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। চমৎকার ক্রীড়াশৈলীর স্বাক্ষর রাখেন। ১ ও ১১৫ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, কার্ল হুপারের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন স্বত্ত্বেও খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।

তিন মেয়াদে অধিনায়কত্ব করেছেন। তবে তেমন সফলতা পাননি। ১৯৯৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ইংল্যান্ডের কাছে দল পরাজিত হয়। এরপর তাঁর নেতৃত্বে দলটি প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ধবল ধোলাইয়ের শিকার হয়। দলীয় সঙ্গীদের ব্যর্থতায় দলটি মূলতঃ তাঁর উপর নির্ভরশীল ছিল। দূর্ভাগ্যজনকভাবে বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবনের পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখ থুবড়ে পড়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেছিলেন। তবে, অর্থ ছাড়ে খেলোয়াড়দের আন্দোলনে যুক্ত থাকার কারণে একই বছরে তাঁকে অধিনায়কত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এরপর, ১৯৯৯ সালে পুণরায় তাঁকে এ দায়িত্বে নিয়োজিত রাখা হয়। উদ্ভাবনী কৌশল অবলম্বনের পাশাপাশি অধিনায়ক হিসেবে ম্লান হয়ে পড়া দলে অনেকাংশেই নিষ্ফল ভূমিকা রাখেন।

১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে সফররত অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে প্রায় একাকী খেলে স্বীয় প্রতিভার বহিঃপ্রকাশ ঘটান। সিরিজে উপর্যুপরী তিনবার শতরানের ইনিংস খেলাসহ ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পান। ২১৩, ৮, অপরাজিত ১৫৩ ও ১০০ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। তন্মধ্যে, ১৫৩ রানের ইনিংসের কল্যাণে তাঁর দল ১ উইকেটে বিজয়ী হয়। ঐ সিরিজটি ২-২ ব্যবধানে ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল। অতিরিক্ত ওজন ও মাংসপেশীর টানজনিত সমস্যায় একদা পায়ের কারুকাজে মোহিত করা পদযুগল কিছু সময়ের জন্যে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। খুব কম সময়ই রানের গতিধারা বহমান রেখেছিলেন। মাঝে-মধ্যে শতকের সন্ধান পেতেন। কিন্তু, গ্যারি সোবার্সের পরামর্শক্রমে ব্যাটিংকে পুণঃজাগ্রত করে।

একই মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে ক্যারিবীয় দলের নেতৃত্বে থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। স্মর্তব্য যে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ – দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার এটিই প্রথম টেস্ট ছিল। ২৬ নভেম্বর, ১৯৯৮ তারিখে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ব্যাট হাতে নিয়ে ১১ ও ৭ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। শন পোলকের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে সফরকারীরা ৪ উইকেটে পরাজিত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে ক্যারিবীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। ২৬ ডিসেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ২ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৬৭ ও ৭৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে চতুর্থ উইকেটে এএফজি গ্রিফিথের সাথে ১৬৬ মিনিটে ২৬৮ রানের জুটি দাঁড় করান। ম্যাথু সিনক্লেয়ারের অসাধারণ ব্যাটিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১০৫ রানে জয়লাভ করলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ এগিয়ে যায়।

২০০০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। চার মাস ক্রিকেট জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন। ২০০৩ সালে পুণরায় অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। সম্ভবতঃ একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে মুত্তিয়া মুরালিধরনের ন্যায় বিশ্বমানের বোলারের বিপক্ষে সফলতা পেয়েছেন।

২০০০-০১ মৌসুমে নিজ দেশে শন পোলকের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের মুখোমুখি হন। ১৯ এপ্রিল, ২০০১ তারিখে কিংস্টনে অনুষ্ঠিত সফররত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের ছাঁপ রাখেন। খেলার প্রথম দিন প্রথম ইনিংসে ৬২ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৬৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৮১ ও ১৪ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪১ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দলীয় সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড গড়ে। রিডলি জ্যাকবসের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ইনিংস ও ১৩০ রানে জয় পেলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়।

একই মৌসুমে শ্রীলঙ্কা সফরে নিজেকে সেরা খেলায় ফিরিয়ে আনেন। কার্ল হুপারের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সাথে শ্রীলঙ্কা গমন করেন। পুরো সিরিজে অসাধারণত্বের পরিচয় দেন। ১৩ নভেম্বর, ২০০১ তারিখে গলেতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ১৭৮ ও ৪০ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, মুত্তিয়া মুরালীধরনের অসাধারণ বোলিংশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ১০ উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ২৯ নভেম্বর, ২০০১ তারিখে কলম্বোয় অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ২২১ ও ১৩০ রান তুলেন। তবে, চামিণ্ডা ভাসের অসাধারণ অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলীর কল্যাণে স্বাগতিকরা ১০ উইকেটে জয় পেলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে। খেলায় তিনি চামিণ্ডা ভাসের সাথে যৌথভাবে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে সর্বমোট ৬৮৮ রান তুলেন। এরফলে, ম্যান অব দ্য সিরিজ পুরস্কার পান। সমগ্র সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগৃহীত রানের ৪২% তুলে রেকর্ড গড়েন। এ সিরিজে তাঁর দ্রুত পদসঞ্চালনা লক্ষ্য করা যায়।

একই বছরে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত কার্লটন সিরিজের ম্যান অব দ্য সিরিজ পুরস্কারে ভূষিত হন। ঐ সিরিজে ৪৬.৫০ গড়ে রান তুলে যে-কোন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানের চেয়ে নিজেকে এগিয়ে রাখলে ৩-০ ব্যবধানে ধবল ধোলাইয়ের কবলে পড়ে তাঁর দল। পরের বছরেও অধিনায়কত্ব ধরে রাখেন।

দ্বিতীয় পর্যায়ে তাঁকে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। নিজেকে দলের সেরা খেলোয়াড়ের মর্যাদা থেকে বেশ দূরে সড়িয়ে আনেন ও দলের শৃঙ্খলা ক্রমাগত দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দ্বিতীয়বারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকায় পরাজিত হওয়া দলকে নেতৃত্ব দেন। এরপর, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ইংল্যান্ডের কাছেও পরাজিত হয় তাঁর দল। পরবর্তীতে, নিজ দেশে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের দৃশ্যতঃ ভরাডুবি হবার শঙ্কা জেগে উঠলে ধবল ধোলাই এড়াতে নিজেকে জেগে তুলেন।

অ্যান্টিগুয়ায় সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে অপরাজিত ৪০০ রানের বিস্ময়কর ইনিংস উপহার দেন। এরফলে, প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৪০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন ও বিশ্ব টেস্ট ব্যাটিং রেকর্ডে নিজের অবস্থান অক্ষুণ্ন রাখেন। এ পর্যায়ে অস্ট্রেলীয় তারকা ক্রিকেটার ম্যাথু হেইডেনের ৩৮০ রানের বিশ্বরেকর্ড মাত্র ছয় মাসের মধ্যে ভেঙ্গে ফেলে নিজের করে নেন। আধুনিক যুগে শেন ওয়ার্নের বর্ণাঢ্যময় ক্রিকেট কীর্তির পাশে অবিশ্বাস্য এ অর্জনে নিজেকে শামিল করেন। সব মিলিয়ে নয়বার টেস্টে দ্বি-শতরানের ইনিংস খেলেন। এরফলে, ডন ব্র্যাডম্যানের ১২টি ও কুমার সাঙ্গাকারা’র ১১টি দ্বি-শতকের পর নিজেকে তালিকায় তৃতীয় স্থানে নিয়ে যান। প্রত্যেক টেস্টখেলুড়ে দেশের বিপক্ষে শতক হাঁকিয়েছেন।

এরপর, তাঁর খেলার মান আরও নিচেরদিকে চলে যেতে থাকে। সফররত বাংলাদেশের বিপক্ষে একদিনের সিরিজ ও প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল বেশ হিমশিম খায়। দলের ব্যাটসম্যানের খেলাকে ধরে রাখতে না পারলে পদত্যাগের হুমকি দেন। পরের খেলায় এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। ইংল্যান্ড গমনার্থে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পেলেও প্রত্যেক টেস্টেই দল পরাজয়ের সম্মুখীন হয়। তাসত্ত্বেও বিস্ময়করভাবে স্বীয় দায়িত্ব চালিয়ে যেতে থাকেন। সেপ্টেম্বর, ২০০৪ সালে একদিনের দলের দায়িত্বে থেকে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বিজয়ে নেতৃত্ব দেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের উত্থানে আশার আলো জাগান। এটিই অবশ্য তাঁর একমাত্র সফলতা ছিল।

মার্চ, ২০০৫ সালে খেলায় বাণিজ্যিকীকরণের প্রশ্নে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে তাঁকে খেলার জন্যে মনোনীত করা হয়নি। তবে দলে ফিরেই ১৯৬ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন। পুণরায় শিবনারায়ণ চন্দরপলের কাছে অধিনায়কত্ব হারান। শিবনারায়ণ চন্দরপলের নেতৃত্বে পরবর্তী বড় ধরনের মুহূর্তের সাথে নিজেকে জড়ান। নভেম্বর, ২০০৫ সালে অ্যাডিলেড টেস্টে অ্যালান বর্ডারের ১১১৭৪ রান টপকে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন। পরবর্তীতে শচীন তেন্ডুলকর তাঁর রেকর্ডকে অতিক্রম করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন।

এপ্রিল, ২০০৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড ও খেলোয়াড়দের ইউনিয়ন ডব্লিউআইপিএ’র সাথে আর্থিক সংঘাতের সৃষ্টি হয়। এ পর্যায়ে তৃতীয়বারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক হিসেবে পুণরায় তাঁকে মনোনয়ন দেয়া হয় ও তেরো মাস অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা শিবনারায়ণ চন্দরপলের পদত্যাগের কারণে স্থলাভিষিক্ত হন। নিজ দেশে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে পাঁচ-ওডিআই নিয়ে গড়া সিরিজে নেতৃত্ব দিয়ে সকলের প্রশংসা কুড়ান ও ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। কিন্তু এর পরপরই টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল বেশ নাকানি-চুবানির কবলে পড়ে। তাঁর অধিনায়কত্ব বেশ স্থবির ছিল। অনেকাংশে উজ্জ্বীবনী শক্তির পরিবেশ গড়লেও অনেকক্ষেত্রেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। পরবর্তীতে তিনি মন্তব্য করেন যে, দল নির্বাচনে তাঁর কোন হাত ছিল না।

পাকিস্তান সফরে ব্যাট হাতে বিরাট দৃষ্টান্ত গড়েন। তবে, কাঙ্খিত ফলাফল দল বয়ে আনতে পারেনি। ২০০৬-০৭ মৌসুমে ক্যারিবীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে পাকিস্তান সফরে যান। ২৭ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ০ ও ৪৯ রান সংগ্রহ করে উভয় ক্ষেত্রেই উমর গুলের শিকারে পরিণত হন। পুরো সিরিজে দূর্দান্ত খেলা মোহাম্মদ ইউসুফের জোড়া শতকের কল্যাণে সফরকারীরা ১৯৯ রানে পরাভূত হলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

মাঠ ও মাঠের বাইরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়। উত্তরোত্তর দলকে বড় ধরনের উদ্দীপনা আনয়ণে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। দলের অনেক সঙ্গীর সাথেও তাঁর মতবিরোধ ঘটতে থাকে। ২০০৭ সালে নিজ দেশে বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় নিজেকে ফিরিয়ে আনার সুযোগ পান। কিন্তু, তিনি তা করতে পারেননি। নিজের যোগ্যতা প্রদর্শনে অগ্রসর হলেও সাত ইনিংস থেকে মাত্র একটিতে অর্ধ-শতরানের সন্ধান পান। সুপার-এইট রাউন্ডে দলের উত্তরণ ঘটে। তবে, পাঁচটি পরাজয় ও চার জয়লাভের ফলে প্রতিযোগিতা থেকে স্বাগতিক দল বিদেয় নেয়। ৩০০তম ওডিআইয়ের একটিতে কম নিয়েই খেলার জগৎকে বিদেয় জানান। ২১ এপ্রিল, ২০০৭ তারিখে বিশ্বকাপের খেলায় ইংল্যান্ডের সাথে সর্বশেষ আন্তর্জাতিকে অংশ নেন। ১৮ রান তুলে মারলন স্যামুয়েলসের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান-আউটের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। গুঞ্জন রয়েছে যে, প্রশাসনের সাথে তাঁর তিক্ততাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

অবসর গ্রহণের পর টি২০ ক্রিকেটের আসরের সাথে যুক্ত হন। অনুমোদনবিহীন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লীগে যোগ দেন ও মুম্বই চ্যাম্পসের অধিনায়কের দায়িত্ব লাভ করেন। পরবর্তীতে, ২০১০-১১ মৌসুমের স্টানবিক ব্যাংক ২০ প্রতিযোগিতায় জিম্বাবুয়ের বিশেষ প্রাধিকারপ্রাপ্ত দল সাউদার্ন রক্সের পক্ষে খেলেন।

তাঁর টেস্ট ব্যাটিং গড় প্রায় ৫৩ হলেও অজিদের বিপক্ষে ৫১ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৪১ ছিল। ওডিআইয়ে দশ সহস্রাধিক রান প্রায় ৪১ গড়ে তুললেও বিস্ময়কর টেস্ট ইনিংসের কল্যাণে এ গড়কে অনেক দূরে এগিয়ে নিয়ে যান। শচীন তেন্ডুলকরের পর দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে উভয় স্তরের ক্রিকেটে দশ সহস্রাধিক রান পেয়েছেন। ওডিআইয়ে দশ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শকালীন শ্রীলঙ্কান বোলিং আক্রমণ প্রতিহত করে ১২৯ বলে ১৬৯ রান তুলেন। ফলশ্রুতিতে, শারজায় তাঁর দল ৪ রানের ব্যবধানে নাটকীয় জয় পায়। অবসর গ্রহণকালীন স্বল্পসংখ্যক ক্রিকেটারদের অন্যতম হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের তুলনায় তাঁর টেস্ট গড় অধিক ছিল। টেস্ট ও ওডিআইয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী মুত্তিয়া মুরালিধরন তাঁর সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, শচীন তেন্ডুলকর নয়; তাঁর বিপক্ষেই বোলিং করতে তাঁকে বেগ পেতে হতো। ১৯৯৫ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননা পান। এরপর, নভেম্বর, ২০০৯ সালে সম্মানসূচক মেম্বার অব দি অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া পদবীতে ভূষিত হন। ২০১২ সালে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন। অবসর গ্রহণের পর নৈশভোজন পরবর্তী বক্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।