Skip to content

২৩ মার্চ, ১৯৪০ তারিখে ওয়েলিংটনের আইল্যান্ড বে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও রেফারি। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে দক্ষ ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

১৯৫৭-৫৮ মৌসুম থেকে ১৯৭৬-৭৭ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারি, সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টস ও ওয়েলিংটনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৭ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। স্বপ্নলোকের ন্যায় তাঁর জীবন চলমান ছিল। কিন্তু, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নেয়ার জন্যে তাঁকে ১১ বছরের অধিক সময় অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়েছিল। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বল মোকাবেলা করতেন। স্ট্রোকপ্লের ফুলঝুঁড়ি ছোটাতেন। সচরাচর স্কয়ার অঞ্চল দিয়ে উভয় দিকেই বলকে ঠেলে পাঠাতেন। তাঁর যোগ্যতা সম্পর্কে কোন সন্দেহ ছিল না। কিন্তু, শীর্ষসারিতে কখনোই তিনি ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেননি।

১৯৬৯ থেকে ১৯৭৬ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সব মিলিয়ে ৩১ টেস্ট ও ১১টি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে নিজ দেশে গ্যারি সোবার্সের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের মুখোমুখি হন। ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত নিউজিল্যান্ডের সদস্যরূপে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলার জন্যে মনোনীত হন। ব্যারি মিলবার্ন ও গ্লেন টার্নারের সাথে একযোগে তাঁর টেস্ট অভিষেক ঘটে। অভিষেকের পর থেকে ১৯৭০-এর দশকে দলের মাঝারিসারিতে ভিত আনেন। খেলায় তিনি ২১ ও ৩১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ৫ উইকেটে জয়লাভ করলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই সফরের ১৩ মার্চ, ১৯৬৯ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। কয়েকটি ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৬২ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে টেস্টে নিজস্ব প্রথম শতক হাঁকান। খেলায় তিনি ০ ও ১১৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে ১-১ ব্যবধানে সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় শেষ হয়।

১৯৬৯ সালে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ বছর গ্রাহাম ডাউলিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২৪ জুলাই, ১৯৬৯ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ২৩ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ২৩০ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৬৯-৭০ মৌসুমে গ্রাহাম ডাউলিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে পাকিস্তান সফরে যান। ৩০ অক্টোবর, ১৯৬৯ লাহোরে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ১ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ৮০* ও ১৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৫ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

১৯৭২-৭৩ মৌসুমে নিজ দেশে ইন্তিখাব আলমের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৩ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ৭৩ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১১০ ও ৪* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে দশম উইকেটে রিচার্ড কলিঞ্জের (৬৮*) সাথে জুটি গড়ে ১৫৫ মিনিটে ১৫১ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েন। পরিসংখ্যানগতভাবে সর্বকালের সেরা তালিকায় তাঁদের এ জুটি ৩য় অবস্থানে রয়েছে। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়লাভ করে।

১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে বেভান কংডনের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৭৩ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ১ ও ২২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দল ইনিংস ও ২৫ রানের ব্যবধানে জয় তুলে নিলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

একই মৌসুমে নিজ দেশে ফিরতি সফরে ইয়ান চ্যাপেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১ মার্চ, ১৯৭৪ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেন। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১০১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ০/৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে নিজ দেশে মাইক ডেনিসের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের মুখোমুখি হন। ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। প্রথম ইনিংসে ১২ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ১৩ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। সফরকারীরা ইনিংস ও ৮৩ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে নিজ দেশে সুনীল গাভাস্কারের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ২৪ জানুয়ারি, ১৯৭৬ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যাট হাতে নিয়ে ৮ ও ১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

চার নম্বর অবস্থানে খেলতেন। তবে বড় অঙ্কের রানের সন্ধান না পাওয়া সত্ত্বেও ধারাবাহিকতা রক্ষা করতেন। ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে তারকা খেলোয়াড় ছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবন শেষে আইসিসি’র ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১০টি টেস্ট ও ১৮টি ওডিআই পরিচালনা করেছেন।