১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৮ তারিখে তাসমানের মতুয়েকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতি মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

অল-রাউন্ডারের ভূমিকা পালনসহ তুখোড় নেতৃত্ব দিয়ে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটিং কৌশল গ্রহণের অধিকারী ছিলেন। দলের প্রয়োজনে নিজেকে যথোচিত মেলে ধরতেন। বেশ কার্যকর, নিখুঁতভাব বজায় রাখা ও সেরা বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে ক্রিজে অবস্থান করতেন। কেবলমাত্র ব্যাট হাতে ছড়ি ঘোরানোতেই নিজেকে পুঞ্জীভূত রাখেননি; বরঞ্চ, নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটের সর্বাধিক সম্মানীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন। ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে নিউজিল্যান্ড দলের ব্যাটিং পরিচালনা শক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড দলের প্রথম টেস্ট বিজয়ে দলের অধিনায়কত্ব করেছিলেন। সামগ্রীকভাবে স্যার রিচার্ড হ্যাডলি’র সাথে তিনি সন্দেহাতীতভাবে নিজেকে যুক্ত রাখতে পেরেছেন।

১৯৬০-৬১ মৌসুম থেকে ১৯৭৭-৭৮ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারি, সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টস, ওতাগো ও ওয়েলিংটনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

১৯৬৫ থেকে ১৯৭৮ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বমোট ৬১ টেস্ট ও ১১টি ওডিআইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে নিজ দেশে হানিফ মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানী দলের মুখোমুখি হন। ২২ জানুয়ারি, ১৯৬৫ তারিখে ওয়েলিংটনে অনুষ্ঠিত সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনের সূত্রপাত ঘটান। সিরিজের প্রথম টেস্টে রিচার্ড কলিঞ্জের সাথে তাঁর একযোগে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ৪২ ও ৩০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই সফরের ২৯ জানুয়ারি, ১৯৬৫ তারিখে অকল্যান্ডে অনু্ষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৪২ রানের সমকক্ষ হন। খেলায় তিনি ৯ ও ৪২ রান সংগ্রহসহ দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

একই মৌসুমে জন রিডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে ফিরতি সফরে পাকিস্তান গমন করেন। ৯ এপ্রিল, ১৯৬৫ তারিখে করাচীতে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ১৭ ও ৫৭ রান সংগ্রহ করেন। এ পর্যায়ে দশম উইকেটে ফ্রাঙ্ক ক্যামেরনের সাথে ১০৮ মিনিটে ৬৩ রানের জুটি দাঁড় করিয়ে নিউজিল্যান্ডীয় রেকর্ড দাঁড় করান। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/১০ ও ০/২৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে।

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে জন রিডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সাথে প্রথমবারের মতো ভারত সফরে যান। ৫ মার্চ, ১৯৬৫ তারিখে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ৯ ও ০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/৪৯ ও ১/৩৩ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৬৫ সালে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ বছর জন রিডের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের অন্যতম সদস্যরূপে ইংল্যান্ড সফরে যান। ২৭ মে, ১৯৬৫ তারিখে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ঘটনাবহুল এ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আঘাতের কবলে পড়লে দলের সংগ্রহ ৬৩/০ থাকাকালে মাঠ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে, দলের সংগ্রহ ১০৫/২ থাকাকালে পুণরায় মাঠে ফিরে আসেন। খেলায় তিনি ২৪ ও ৪৭ রান সংগ্রহ করে উভয় ইনিংসে ফ্রেড টিটমাসের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/১৭ ও ০/৬ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করানোসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ৯ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে নিজ দেশে ফিরতি সফরে মাইক স্মিথের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড দলকে নেতৃত্ব দেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। কয়েকটি ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৫৭ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে ৮২ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এছাড়াও, টেস্টে নিজস্ব প্রথম টেস্ট শতক হাঁকান। খেলায় তিনি ১০৪ ও ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৬৯-৭০ মৌসুমে গ্রাহাম ডাউলিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের সদস্যরূপে পাকিস্তান সফরে যান। ৩০ অক্টোবর, ১৯৬৯ লাহোরে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ২০ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ১৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ২২ ও ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ২/১৫ ও ০/১৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। পাশাপাশি, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। স্বাগতিকরা ৫ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে নির্ধারিত কোন অবস্থানে তাঁকে খেলতে দেখা যায়নি। অভিষেক টেস্টে চার নম্বর অবস্থানে মাঠে নামেন। এছাড়াও, সময়ে সময়ে পরিবর্তিত উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তবে, তিন নম্বর অবস্থানে খেলতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। এ অবস্থানে থেকেই সাতটি শতকের ছয়টি হাঁকিয়েছিলেন। অল-রাউন্ডারের ভূমিকা পালনে এ অবস্থানই তাঁর জন্যে অধিক উপযোগী ছিল ও ইনিংসের নিয়ন্ত্রণ নিতেন।

এছাড়াও, ১৯৭২ সালে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দূর্দান্ত খেলেছিলেন। কুইন্স পার্ক ওভাল ও কেনসিংটন ওভালে উপর্যুপরী শতরানের সন্ধান পান। শেষের ইনিংসটি অধিনায়ক হিসেবে তাঁর প্রথম টেস্ট ছিল। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৩২.২২ গড়ে ৩৪৪৮ রান সংগ্রহ করলেও অধিনায়ক হিসেবে ৪১.০৩ গড়ে ১০৬৭ রান তুলেছিলেন।

১৯৭১-৭২ মৌসুমে গ্রাহাম ডাউলিংয়ের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের অন্যতম সদস্যরূপে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ সফরে যান। ৯ মার্চ, ১৯৭২ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের সাথে নিজেকে জড়ান। প্রথম ইনিংসে ১০৪ সংগ্রহকালীন পূর্বতন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানকে অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে বব কুনেছের অষ্টম উইকেটে সংগৃহীত ১৩৬ রান নিউজিল্যান্ডীয় রেকর্ডের মর্যাদা পাচ্ছে। ১৬৬* ও ৮২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ৩/৫৬ ও ০/০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৭৩ সালে কিউই দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ইংল্যান্ড সফরে যান। ৭ জুন, ১৯৭৩ তারিখে নটিংহামে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে খেলায় তিনি ৯ ও ১৭৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ১/১২ ও ০/২৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। স্বাগতিকরা ৩৮ রানে জয় পেলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে কিউই দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থেকে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। এটিই তাঁর প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া সফর ছিল। ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৭৩ তারিখে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ২/৩১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়া, ব্যাট হাতে নিয়ে ৩১ ও ১৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দল ইনিংস ও ২৫ রানের ব্যবধানে জয় তুলে নিলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও কোন অংশেই কম ভূমিকা রাখেননি। বলকে উভয় দিক দিয়ে ঘুরাতে পারতেন। নিখুঁত নিশানা বরাবর মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন। গ্লেন টার্নার অধিনায়ক হিসেবে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলে ১৯৭৫ সালে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ-উইকেট ও পূর্ববর্তী বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার-উইকেট নিয়ে নিজস্ব স্বর্ণালী মুহূর্ত অতিবাহিত করেন। উভয় ক্ষেত্রেই তিনি অকল্যান্ডে সফলতা পেয়েছিলেন। এটিই তাঁর একমাত্র পাঁচ-উইকেট লাভ করা ছিল। এছাড়াও, উভয় ইনিংসে ৫৪ রান করে সংগ্রহ করেছিলেন।

উইকেটের বাইরে থেকে সর্বদাই রান আটকাতে সতর্ক দৃষ্টি রাখতেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ব্যাট হাতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। উপর্যুপরী দুইবার দেড় শতাধিক রান তুলেছেন। তাঁর অধিনায়কত্বে নিউজিল্যান্ড দল শৌখিনতার খোলশ ছেড়ে আত্মবিশ্বাসী দলে রূপান্তরিত হয়। কিউই দল তাদের ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট জয়ের সন্ধান পায়। প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া দল। এরপর থেকে নিউজিল্যান্ড দলকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন।

১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৩ তারিখে ক্রাইস্টচার্চের ব্যাসিন রিজার্ভে অনুষ্ঠিত খেলায় নিউজিল্যান্ড দল তাদের ইতিহাসের প্রথম ওডিআইয়ে অংশ নেয় ও তিনি প্রথম নিউজিল্যান্ডীয় হিসেবে শতক হাঁকানো গৌরব অর্জন করেন। পরবর্তীতে, ২০১৮ সালে কেন উইলিয়ামসন অভিষেকে শতক হাঁকিয়ে তাঁর সাথে যুক্ত হন। তবে, ক্ষুদ্রতর সংস্করণের খেলা তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এরফলে, তাঁর খেলোয়াড়ী জীবন সংক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে ও আর উত্তরণ ঘটাতে পারেননি।

১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে নিজ দেশে মাইক ডেনিসের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার ছাঁপ রাখেন। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে এমএইচ ডেনিসের প্রথম উইকেট লাভ করে টেস্টে ৫০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন। খেলায় তিনি ২/১১৫ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। এছাড়াও, খেলায় তিনি ২ ও ১৮ রান সংগ্রহসহ একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। সফরকারীরা ইনিংস ও ৮৩ রানে জয় পেলে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে নিজ দেশে সুনীল গাভাস্কারের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের মুখোমুখি হন। ২৪ জানুয়ারি, ১৯৭৬ তারিখে অকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সফররত ভারতের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। বেশ কয়েকটি ব্যক্তিগত সফলতার সন্ধান পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৫ রানে পৌঁছানোকালে টেস্টে ৩০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ব্যাট হাতে নিয়ে উভয় ইনিংসে ৫৪ রান করে ইএএস প্রসন্নের বলে বিদেয় নেন। পাশাপাশি, একটি ক্যাচ তালুবন্দী করেন। এছাড়াও, ভারতের প্রথম ইনিংসে বিএস চন্দ্রশেখরকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৪/৪৬। এ পর্যায়ে টেস্টে নিজস্ব প্রথম পাঁচ-উইকেট লাভ করেন। খেলায় তিনি ৫/৬৫ পান। স্বাগতিকরা ৮ উইকেটে পরাজিত হলে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে নিজ দেশে গ্রেগ চ্যাপেলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের মুখোমুখি হন। ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সফররত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি ২৩ ও ১০৭* রান সংগ্রহ করেছিলেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৭ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে নিজস্ব সপ্তম ও সর্বশেষ টেস্ট শতক হাঁকান। দ্বিতীয় ইনিংসে ডেল হ্যাডলি’র সাথে নিরবচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলের নিশ্চিত পরাজয় ঠেকান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।

১৯৭৮ সালে মার্ক বার্জেসের নেতৃত্বাধীন কিউই দলের অন্যতম সদস্যরূপে ইংল্যান্ড সফরে যান। ২৪ আগস্ট, ১৯৭৮ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ২ ও ৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, দুইটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। তবে, জিওফ হাওয়ার্থের অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তা সত্ত্বেও সফরকারীরা ৭ উইকেটে পরাভূত হলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

শুরুতে ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। পরবর্তীতে অমূল্য অল-রাউন্ডারে পরিণত হন। এরপর, মহামূল্যবান নেতৃত্বের গুণাবলীর বিকাশ ঘটান। নিজের সেরাটা মেলে ধরে অধিনায়কত্বকে উপভোগ করেছেন ও পাশাপাশি দলে উজ্জ্বীবনী শক্তি যুগিয়েছেন। প্রায় ৪০-এর কাছাকাছি বয়সে এসে খেলায় ছন্দ হারিয়ে ফেলতে থাকেন ও ১৯৭৮ সাল শেষে অবসর গ্রহণ করেন। ব্যক্তিগতভাবে বিদায়ী সিরিজে কিছু বড় ধরনের রান সংগ্রহ করলেও তিনি নিউজিল্যান্ড দলকে শক্তিধর দলে পরিণত করার মাধ্যমেই স্বার্থকতা খুঁজে পেয়েছিলেন।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ধাবিত হন। জাতীয় দলের দল নির্বাচকের দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হন। ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ তারিখে ৮০তম জন্মদিন উদযাপনের একদিন পূর্বে অকল্যান্ডে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর তাঁর দেহাবসান ঘটে।

Similar Posts

  • | | |

    নীল হার্ভে

    ৮ অক্টোবর, ১৯২৮ তারিখে ভিক্টোরিয়ার ফিটজরয় এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। বামহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১.৭২ মিটার উচ্চতার অধিকারী। পরিবারের ছয় পুত্র সন্তানের মধ্যে পঞ্চম ছিলেন। জ্যেষ্ঠ তিন ভ্রাতা ঘরোয়া আসরের ক্রিকেটে অংশ নিতেন। তন্মধ্যে, একজন মার্ভ…

  • |

    ওয়াজির মোহাম্মদ

    ২২ ডিসেম্বর, ১৯২৯ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের গুজরাতের জুনাগড় এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। পাশাপাশি, ডানহাতে বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৫০-এর দশকে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৪৯-৫০ মৌসুম থেকে ১৯৬৩-৬৪ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানী ক্রিকেটে বাহাওয়ালপুর ও করাচীর…

  • | | | |

    সোমাচন্দ্র ডি সিলভা

    ১১ জুন, ১৯৪২ তারিখে গল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার, কোচ ও প্রশাসক। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। এছাড়াও, লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘ডি. এস.’ নামে অধিক পরিচিত ছিলেন। সেরা অল-রাউন্ডারের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। ডানহাতে প্রকৃত মানসম্পন্ন লেগ-স্পিন ও ডানহাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাধর্মী ব্যাটিংয়ে লিপ্ত হতেন। খেলোয়াড়ী জীবনের যাত্রা…

  • |

    চার্লি টার্নার

    ১৬ নভেম্বর, ১৮৬২ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের বাথহার্স্ট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে ভূমিকা রেখে নিজেকে স্মরণীয় করে রেখেছেন। ডানহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। চার্লস বায়াস টার্ন ও মেরি অ্যান দম্পতির সন্তান ছিলেন। ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি (১.৭৫ মিটার) উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। বাথহার্স্ট…

  • | |

    নরেন্দ্র হিরবাণী

    ১৮ অক্টোবর, ১৯৬৮ তারিখে উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। লেগ-ব্রেক গুগলি বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। গোরখপুরের সম্ভ্রান্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। পিতা ইটের ভাটার স্বত্ত্বাধিকারী ছিলেন। পারিবারিক ব্যবসা থেকে দূরে থেকে ক্রিকেটার হবার স্বপ্নে বিভোঁর ছিলেন। কৈশোরকালে ক্রিকেটে সাফল্য লাভের…

  • | |

    অজিঙ্কা রাহানে

    ৬ জুন, ১৯৮৮ তারিখে মহারাষ্ট্রের অশ্বি-কেডি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার। দলে মূলতঃ শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। ডানহাতে ব্যাটিং করেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী। ভারতের পক্ষে সকল স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি, ভারত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি (১.৬৮ মিটার) উচ্চতার অধিকারী। বাবুরাও রাহানে ও সুজাত রাহানে দম্পতির সন্তান। শশাঙ্ক রাহানে…