Skip to content

লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইন

1 min read

২১ সেপ্টেম্বর, ১৯০১ তারিখে ত্রিনিদাদের পেটিট ভ্যালি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট কিংবা ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

পেশীবহুল কিন্তু নমনীয়, গুটানো কিন্তু লম্বাটে বাহু নিয়ে পর্যাপ্ত পেস সহযোগে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। তাঁর ব্যাটিং অনেকাংশেই চোখের উপর নির্ভরশীল ছিল। নিজের দিনে দৃশ্যতঃ তাঁকে বিদেয় করা অসম্ভব ছিল। ডিপ অঞ্চলে স্প্রিন্টারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। বলকে নিখুঁতভাবে ভীতিহীন চিত্তে ও দ্রুততার সাথে উইকেট বরাবর প্রেরণ করতেন। সর্বোপরি যে অবস্থানেই থাকতেন না কেন গতি ও অসম্ভব ক্যাচ তালুবন্দী করে সকলকে বিস্মিত করতেন। তাঁর নড়াচড়া অনেক ক্ষেত্রেই স্প্রিং ও রাবার সদৃশ দৈহিক গঠনের কারণে সম্ভব হয়েছে।

১৯২১-২২ মৌসুম থেকে ১৯৩৮-৩৯ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে বার্বাডোস ও ত্রিনিদাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, ফ্রিলুটার্সের পক্ষে খেলেছেন।

ত্রিনিদাদের দিয়েগো মার্টিনে জন্মগ্রহণ করেন। জনৈক দাসের নাতি লেব্রুন ও দাস কন্যা অ্যানেইস পাস্কালের সন্তান ছিলেন। পিতা-মাতা হয়তোবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ক্রিকেট খেলায় প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু তাঁরা কল্পনায়ও আনতে পারেননি যে, ব্রিটিশ কমনওয়েলথে অবস্থান করে তিনি নিজের সম্প্রদায়ের লোকজনকে নতুনভাবে সম্মানের আসনে নিয়ে যাবেন। এরপূর্বে তিনি চমৎকার ফিল্ডার হিসেবে অংশ নিতেন এবং ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম চিত্তাকর্ষক অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় নিয়ে যান। ‘লিয়ারি’ কিংবা ‘কনি’ ডাকনামে ভূষিত লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইন ৪০ বছর ক্রিকেটের সাথে যুক্ত থেকে ঐতিহাসিক সূত্র তুলে ধরেছেন ও এর গঠনে অপূর্ব ভূমিকার স্বাক্ষর রেখেছেন। ঐ সময়ে হতদরিদ্র ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বালকদেরকে ক্রিকেটীয় যোগ্যতা প্রদর্শনে নিজেকে মেলে ধরতে উৎসাহিত করেছেন। ঐ যুগে ব্রিটেন থেকে আসা খেলাটিতে তাঁদের খেলার অধিকারের যথার্থতার কথা তুলে ধরেছেন।

পিতা লেব্রুন কনস্ট্যান্টাইন বাগানের মালি ছিলেন। ১৯০০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অল-রাউন্ডার হিসেবে ইংল্যান্ড গমন করেন। ১৯০৬ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে প্রথম শতক হাঁকানোর গৌরব অর্জন করেন। ১৯২৩ সালে জর্জটাউনে তাঁরা উভয়েই ত্রিনিদাদের সদস্যরূপে ব্রিটিশ গায়ানার বিপক্ষে খেলেন। এরফলে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পিতা-পুত্রের একত্রে খেলার সাথে নিজেদের জড়ান। এ ঘটনাকে তাঁরা বেশ উপভোগ করেছিলেন। পারিবারিক সাহচর্য্যে থেকে ও পিতার সহায়তা নিয়ে উচ্চমান সম্পন্ন ফিল্ডিং অনুশীলন করতেন। এ ধরনের অনুশীলন পরবর্তীতে তাঁর সাফল্যের ভিত্তি গড়তে সহায়তা করেছিল।

১৯২৩ সালে অস্টিনের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমনের পূর্বে মাত্র তিনটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। এ সফরে নিজেকে বেশ মেলে ধরেছিলেন। কভার পয়েন্ট অঞ্চলে প্রায় একাকী স্বীয় দক্ষতা প্রদর্শনে অগ্রসর হয়েছিলেন। এ সফরে তিনি যে শুধুমাত্র ক্রিকেট খেলাই শিখেছিলেন তা নয়; স্মরণীয় অনেক কিছুই আত্মস্থ করেছিলেন। এ পর্যায়ে তিনি ক্রিকেট খেলার মাধ্যমে ভবিষ্যতে উত্তরণের সম্ভাবনা খুঁজে পান। সি.এল.আর জেমসের অভিমত, ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর মর্যাদা ও ব্যক্তি হিসেবে তৃতীয়-শ্রেণীর মাঝে বৈপরীত্যের বিপক্ষে নিজেকে মেলে ধরার প্রয়াস চালান। খেলার সাথে একাত্মতা পোষণ করে পাঁচ বছর অবিশ্রান্ত পরিশ্রম করে যান।

১৯২৮ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত সময়কালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বমোট ১৮ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯২৮ সালে কার্ল নানেসের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সদস্যরূপে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ খেলতে ইংল্যান্ড গমন করেন। এ পর্যায়ে প্রকৃত অর্থেই প্রাণবন্তঃ ফাস্ট বোলার, মারকুটে ব্যাটসম্যান ও যে-কোন অবস্থানে অসাধারণ ফিল্ডিং করতেন। পেশীবহুল কিন্তু নমনীয়, গুটানো কিন্তু লম্বাটে বাহু নিয়ে পর্যাপ্ত পেস সহযোগে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। তাঁর ব্যাটিং অনেকাংশেই চোখের উপর নির্ভরশীল ছিল। নিজের দিনে দৃশ্যতঃ তাঁকে বিদেয় করা অসম্ভব ছিল। ডিপ অঞ্চলে স্প্রিন্টারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। বলকে নিখুঁতভাবে ভীতিহীন চিত্তে ও দ্রুততার সাথে উইকেট বরাবর প্রেরণ করতেন। সর্বোপরি যে অবস্থানেই থাকতেন না কেন গতি ও অসম্ভব ক্যাচ তালুবন্দী করে সকলকে বিস্মিত করতেন। তাঁর নড়াচড়া অনেক ক্ষেত্রেই স্প্রিং ও রাবার সদৃশ দৈহিক গঠনের কারণে সম্ভব হয়েছে।

২৩ জুন, ১৯২৮ তারিখে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। অন্য সকলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি ১৩ ও ০ রান সংগ্রহ করে উভয় ক্ষেত্রে টিচ ফ্রিম্যানের বলে বিদেয় নেন। এছাড়াও, তিনটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। পাশাপাশি, বল হাতে নিয়ে ৪/৮২ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ইনিংস ও ৫৮ রানে পরাজিত হলে সফরকারীরা তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।

চার উইকেট পেলেও টেস্টগুলোয় নিজেকে তেমন মেলে ধরতে পারেননি। তবে, কাউন্টি মাঠগুলোয় ভাস্বর ছিলেন। ১৩৮১ রান, ১০৭ উইকেট ও ৩৩ ক্যাচ তালুবন্দী করে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।

জুনে লর্ডসে মিডলসেক্স দল ৩৫২/৬ তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। প্রথম ইনিংসে ৮৬ রান সংগ্রহসহ ৭/৫৭ লাভ করেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ধাপে এক পর্যায়ে ১১ রান খরচায় ৬ উইকেট লাভ করেছিলেন। ২৫৯ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় ধাবিত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দলের সংগ্রহ ১২১/৫ থাকা অবস্থায় মাঠে নেমে ১৩৩ রানের মধ্যে দুইটি ছক্কা ও বারোটি চারের মারে ১০৩ রানের শতক হাঁকান। ফিরতি বলে জ্যাক হার্নের আঙ্গুল মারাত্মকভাবে জখম হলে ঐ মৌসুমে তিনি আর কোন খেলায় অংশ নিতে পারেননি। ঘণ্টাখানেক পূর্বেই তিন উইকেটের ব্যবধানে দলকে জয় এনে দেন। লর্ডসের দর্শককূল নড়েচড়ে বসে। পরদিন ইংল্যান্ডের সকল ক্রিকেটপ্রেমী নতুন বৃহৎ তারকাকে স্বীকৃতি দেয়।

ঐ গ্রীষ্মে টেস্টগুলোয় তিনি খুব কমই ভূমিকা রেখেছিলেন। তবে, দ্বি-গুণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন ও সাধারণ দর্শকদের চোখে দলের সর্বাপেক্ষা ও সফলতম সদস্য হিসেবে মূল্যায়িত হন। তিনি বিস্ময়কর ক্রিকেটীয় বিনোদনে অগ্রসর হয়েছিলেন। যারা তাঁকে দেখেছেন, তাঁরাই তাঁর স্বতন্ত্র কৌশলে মুগ্ধ হতেন। যখনই তাঁর কাছ থেকে বল মাঠে চলে যেতো ও পুণরায় বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন তখন ফিল্ডার বলটি পিছন থেকে কোনি বলে তাঁর দিকে ছুঁড়ে দিলে তিনি চলন্ত অবস্থাতেই তা মুঠোয় পুড়তেন। সেজন্যে তিনি পিছনে ফিরে তাকাতেন না ও সহজাত ভঙ্গীমায় হাতে নিতেন। খুব কমই তাঁর হাত থেকে বল ফস্কে যতো। দর্শককূল তাঁকে রহস্যধর্মী ক্রিকেটার হিসেবে চিহ্নিত করলেও কেবলমাত্র একটি খেলার প্রতিবেদনের মাধ্যমেই হাজারো জনতা তাঁকে দেখার জন্যে মুখিয়ে থাকে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম দুই টেস্ট বিজয়ের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। ১৯৩০ সালে জর্জটাউনে প্রথমবারের মতো স্বাগতিকরা ইংল্যান্ড দলকে পরাভূত করে। ক্লিফোর্ড রোচ দ্বি-শতক ও জর্জ হ্যাডলি জোড়া শতক হাঁকালেও তিনি দুইবার ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ধ্বসের মূল হোতা ছিলেন। খেলায় তিনি ৯ উইকেট নিয়ে দুই দলের মাঝখানে পার্থক্য গড়ে দেন। ৪/৩৫ ও ৫/৮৭ লাভ করেন। অন্য কোন বোলারই ঐ খেলায় তেমন ভূমিকা রাখেননি।

চার বছর পর ১৯৩৪-৩৫ মৌসুমের পোর্ট অব স্পেনে আরও একটি জয় এনে সিরিজে সমতা আনয়ণে সবিশেষ ভূমিকা রাখেন। ৯০ ও ৩১ রানের ইনিংস খেলেন। পাশাপাশি, ২/৪১ ও ১৪.৫ ওভারে ৩/১১ লাভ করেছিলেন। শেষ মুহূর্তে খেলার এক বল বাকী থাকতে মরিস লেল্যান্ডকে লেগ-বিফোরে বিদেয় করে দলের জয় নিশ্চিত করেন।

ল্যাঙ্কাশায়ার লীগের যে-কোন দলই তাঁকে চুক্তিবদ্ধ করার জন্যে উৎসুক ছিল। নেলসনে খেলার জন্যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। দশ মৌসুমের আটটিতে ল্যাঙ্কাশায়ার লীগের শিরোপা লাভ করে তাঁর দল। প্রত্যেক মাঠেই দর্শকদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যায়। আন্তরিকতার সাথে তরুণ খেলোয়াড়কে প্রশিক্ষণ ও পরিচালনায় অগ্রসর হতেন। নেলসনের অধিবাসীদের অনেকের কাছে প্রথমবারের মতো কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে আবির্ভূত হলেও ‘কনি’ ও তাঁর স্ত্রী নর্মা এখানে বসবাস করেন। পরবর্তীতে তাঁরা স্মৃতিচারণের মাধ্যমে সুখানুভব করতেন।

লীগে যুক্ত থাকার ফলে কম খেলার সুযোগ পেলেও শতাধিক প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। এ পর্যায়ে ২৪.৩২ গড়ে ৪৪৫১ রান সংগ্রহসহ ২০.৬০ গড়ে ৪২৪ উইকেট দখল করেছিলেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তেমন সফলতার সন্ধান পাননি। টেস্টগুলোয় ১৯.৪২ গড়ে ৬৪১ রান ও ৩০.১০ গড়ে ৫৮ উইকেট পেয়েছিলেন। অপরদিকে দৃশ্যতঃ তিনি দুইটি টেস্ট জয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন ও একটিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯৩৯ সালে রল্ফ গ্রান্টের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ৩৭ বছর বয়সে ১৯ আগস্ট, ১৯৩৯ তারিখে লন্ডনের ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি প্রথম ইনিংসে ৫/৭৩ নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। এছাড়াও, দ্বিতীয় ইনিংসে ১/৯৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। পাশাপাশি, দলের একমাত্র ইনিংসে ৭৯ রান তুলে রেগ পার্কসের বলে বিদেয় নেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে স্বাগতিকরা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে নেয়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ইংল্যান্ডে ক্যারিবীয় কর্মীদের সহায়তায় শ্রম মন্ত্রণালয়ে কল্যাণ কর্মকর্তারূপে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৪৪ সালে লন্ডনভিত্তিক দি ইম্পেরিয়াল হোটেলে অভ্যর্থনা ও অবস্থান লাভের বিষয়সংক্রান্ত বর্ণবিদ্বেষী মামলায় জয়লাভ করেন। তিনি বেশ সাড়া জাগান। বিশ্বযুদ্ধ শেষে ১৯৪৬ সালে লর্ডসে শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড়দেরকে পাশ কাটিয়ে ডোমিনিয়ন্স দলের অধিনায়কত্ব করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়লাভে বিরাট ভূমিকা রাখেন। এ পর্যায়ে কিথ মিলারের সাথে চমৎকার জুটি গড়েন ও এক মিনিট বাকী থাকতে দলকে জয় এনে দেন।

১৯৪০ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হন। ১ জানুয়ারি, ১৯৬৯ তারিখে লর্ডসে ব্রিটেনের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ জুরি হন। ১৯৪৫ সালে এমবিই উপাধীতে ভূষিত হন। ১৯৬২ সালে নাইট পদবী লাভ করেন। ২০০৯ সালে পিটার ম্যাসন ‘ক্যারিবিয়ান লাইভস: লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইন’ শীর্ষক আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, কুমার সাঙ্গাকারা, মন্টি নোবেল, অব্রে ফকনার, স্ট্যান ম্যাককাবে, বিনু মানকড়, টেড ডেক্সটার, বব উইলিস ও ডেসমন্ড হেইন্সের সাথে একযোগে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন।

ধর্মভীরু রোমান ক্যাথলিক ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৯২১ সালে আগাথা কক্স নাম্নী তরুণীর সাথে পরিচিত হন। ২৫ জুলাই, ১৯২৭ তারিখে তাঁরা পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির গ্লোরিয়া নাম্নী কন্যা ছিল। পঞ্চাশের বয়সে এসেও দাতব্য খেলায় অংশ নিতেন। এ পর্যায়েও তিনি স্ট্রোক, বোলিং ও দর্শনীয় ক্যাচ তালুবন্দীকরণে অগ্রসর হতেন।

জীবনের অর্ধেক সময়ই ইংল্যান্ডে অতিবাহিত করেছেন। অনেক পূর্বেই ফুসফুসের চিকিৎসার জন্যে তাঁর চিকিৎসক ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের উষ্ণ আবহাওয়ায় ফিরে যাবার তাগিদ দিলেও তিনি তা প্রতিপালন করেননি। ১ জুলাই, ১৯৭১ তারিখে লন্ডনের ব্রন্ডেসবারি এলাকায় ৬৯ বছর বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। তাঁর শবদেহ ত্রিনিদাদে নিয়ে আসা হয় ও অরোকায় সমাহিত করা হয়। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনসহ ১৯বার তোপধ্বনির মাধ্যমে তাঁকে সম্মানিত করা হয়। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ক্রিকেটের স্মরণীয় মুহূর্তগুলো স্মৃতিরোমন্থন করতেন ও বন্ধুদের নিয়ে আমুদে মত্ত থাকতেন। মৃত্যুর দুই মাস পর তাঁর সহধর্মীনি প্রয়াত হন।

মৃত্যুকালীন তিনি ‘ব্যারন কনস্ট্যান্টাইন’ নামে পরিচিতি লাভ করেন। ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও ১৯৬১ সালে নিজ দেশ ত্রিনিদাদের হাই কমিশনার ছিলেন। পরের বছর নাইট পদবী লাভ করেন। এরপর, লন্ডনে ফিরে যান ও জীবনের বাদ-বাকী বছরগুলো সেখানে অতিবাহিত করেন। ১৯৬৯ সালে লর্ডসে ব্রিটেনের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পিয়ার হিসেবে মনোনীত হন। ১৯৭১ সালে প্রথম ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসেবে ত্রিনিদাদ সরকার কর্তৃক সর্বোচ্চ সম্মাননা হিসেবে তাঁকে মরণোত্তর ট্রিনিটি ক্রস প্রদান করে। কুইন্স পার্ক ওভালের ‘কনস্ট্যান্টাইন স্ট্যান্ড’ তাঁর নামানুসরণে রাখা হয়েছে।

ক্রিকেটবিষয়ক অনেকগুলো গ্রন্থ রচনা করে গেছেন। ‘ক্রিকেট এন্ড আই’ (১৯৩৩), ‘ক্রিকেট ইন দ্য সান’ (১৯৪৭), ‘ক্রিকেটার্স কার্নিভাল’ (১৯৪৮), ‘ক্রিকেটার্স ক্রিকেট’ (১৯৪৯), ‘ক্রিকেট ক্র্যাকার্স’ (১৯৫০), ‘কালার বার’ (১৯৫৪) অন্যতম। এছাড়াও, ১৯৬৬ সালে ডেঞ্জিল ব্যাচেলরের সাথে ‘দ্য চ্যাঞ্জিং ফেস অব ক্রিকেট: লন্ডন’ যৌথভাবে প্রকাশ করেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।