৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯২১ তারিখে ট্রান্সভালের কেনসিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ বোলার হিসেবে দলে ভূমিকা রেখে গেছেন। ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সেরা অফ-স্পিনারের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। যুদ্ধকালীন তিনি পায়ে আঘাত পান। এরফলে, সামনের পায়ে পুরোপুরি ভর দিতে পারতেন না। বোলিংকালে প্রায়শঃই ব্যথা অনুভব করতেন। তবে, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা এরিক রোয়ানের অনুপ্রেরণায় খেলতেন। যুদ্ধের পূর্বে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। পশ্চিম রণাঙ্গনে জার্মানদের হাতে ধৃত হন ও পালিয়ে আসেন। এরপর খেলার জগতে ফিরে এসে অফ-স্পিন বোলিংয়ের দিকে ধাবিত হন। এ পর্যায়ে সিম বোলারদের ন্যায় বল হাতে রাখতেন।
১৯৩৯-৪০ মৌসুম থেকে ১৯৫১ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ট্রান্সভালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে ওয়ান্ডারার্সে সর্বাপেক্ষা নাটকীয় ক্রীড়া নৈপুণ্যের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখেন। ট্রান্সভালের সদস্যরূপে সফররত অস্ট্রেলীয় দলের বিপক্ষে ৯/১৯ পান ও প্রতিপক্ষকে মাত্র ৮৪ রানে গুটিয়ে দেন। মামুলী ৬৯ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় ধাবিত ট্রান্সভাল দল অবশ্য ৫৩ রানে গুটিয়ে যায়।
১৯৪৭ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বমোট ১৫ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। সবগুলো টেস্টই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন। ১৯৪৭ সালে অ্যালান মেলভিলের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সাথে ইংল্যান্ড সফর করেন। ৭ জুন, ১৯৪৭ তারিখে নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। জনি লিন্ডসে, লিন্ডসে টাকেট, টাফ্টি মান, অসি ডসন, টনি হ্যারিস ও ইয়ান স্মিথের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ৩৪* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ১/৪৫ ও ২/১০০ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি অমিমাংসিত অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে।
একই সফরের ১৬ আগস্ট, ১৯৪৭ তারিখে লন্ডনের কেনিংটন ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে আর হাওয়ার্থকে ২৩ রানে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ২/১০০। খেলায় তিনি ৩/৯২ ও ৩/৯৫ লাভ করেন। এছাড়াও, একবার ব্যাট হাতে নিয়ে ডিক হাওয়ার্থের বলে শূন্য রানে বিদেয় নিয়েছিলেন। খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে সফরকারীরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত হয়।
১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে নিজ দেশে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে জর্জ মানের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত সফররত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে সফল ছিলেন। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে টিজি ইভান্সকে বিদেয় করে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। তাঁর পূর্বেকার সেরা ছিল ৩/৯২। খেলায় তিনি ৪/১০৮ ও ০/১৫ লাভ করেন। এছাড়াও, ৫* ও ১৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ২ উইকেটে পরাজিত হলে স্বাগতিকরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পিছিয়ে পড়ে।
একই সফরের ডাডলি নোর্সের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে ৫ মার্চ, ১৯৪৯ তারিখে পোর্ট এলিজাবেথে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে প্রায় অপরিবর্তিত অবস্থায় বোলিং করে ৬০-৯-১৬৭-৫ লাভ করেন।
বিখ্যাত ক্রিকেটার লেন হাটনকে এগারোবার বিদেয় করেছিলেন। তন্মধ্যে, ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমের সিরিজের শেষদিকে ও ১৯৫১ সালে সিরিজের প্রথম টেস্টে একাধারে পাঁচবার তাঁর শিকারে পরিণত করেন। ওভালে তাঁর বল থেকে সাধারণ ক্যাচ তালুবন্দী করার পূর্বে রাসেল এনডিনকে বাঁধা দিলে আউট হন। লেন হাটন তাঁকে জিম লেকারের চেয়ে এগিয়ে রেখেছেন। আঘাতের কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারেননি।
১৯৫১ সালে ডাডলি নোর্সের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ১৬ আগস্ট, ১৯৫১ তারিখে লন্ডনে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগত সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৩৮ রান অতিক্রম করেন। খেলায় তিনি ৪১ ও ১৫* রান সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও, ২/৪৪ ও ২/৭৭ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। সফরকারীরা ৪ উইকেটে পরাজিত হলে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ খোঁয়ায়। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হন।
১৯৫১ সালে ইংল্যান্ড সফর শেষে ব্যথার কারণে অনিচ্ছাস্বত্ত্বেও অবসর গ্রহণ করতে বাধ্য হন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে ওয়েস্টার্ন কেপের হার্মানাস এলাকায় ৭৭ বছর ১৫ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।
