Skip to content

১৭ নভেম্বর, ১৯০৫ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের অ্যাশফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ছিলেন। মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রেখেছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৩০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।

সামনের পায়ে ভর রেখে ব্যাটিং কর্মে নামেন। রক্ষণাত্মক ধাঁচে ব্যাটিং করলেও প্রয়োজনে মারমুখী ভঙ্গীমায় অগ্রসর হন। পেসের বিপক্ষে রুখে রান সংগ্রহে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। স্লিপ অঞ্চলে দারুণ ফিল্ডিং করেন। কার্যকর লেগ-ব্রেক বোলিংয়েও তাঁর জুড়ি মেলা ভার। ১৯৩৩-৩৪ মৌসুম থেকে ১৯৩৯-৪০ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২৮ বছর বয়সে নিউক্যাসলে অনুষ্ঠিত নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টস দলের সদস্যরূপে ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে ডগলাস জার্ডিনের নেতৃত্বাধীন দলের বিপক্ষে ১৫২ রানের ইনিংস খেলে সকলের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হন। এরপর, নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষাবলম্বন করে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৪ রান তুলেন।

১৯৩৪ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বমোট ১৪ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। এ পর্যায়ে দুইবার ইংল্যান্ড ও একবার দক্ষিণ আফ্রিকা গমনের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৩৪ সালে সফররত ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে তাঁর দলে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বেশ আশ্চর্য্যজনক ছিল। এ সময়ে তিনি মাত্র তিনটি প্রথম-শ্রেণীর ইনিংস খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ছিলেন।

১৯৩৪ সালে বিল উডফুলের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সাথে ইংল্যান্ড সফরে তাঁর স্বাস্থ্যহানি ঘটে। তবে, এ সফরে ৪০.৮৬ গড়ে ৮৯৯ রান তুলেছিলেন। প্রথম খেলায় এসেক্সের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ১৭৫ রান তুলেন। পরের সপ্তাহে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ১১৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে খেলে টেস্ট দলে জায়গা করে নেন। ৮ জুন, ১৯৩৪ তারিখে নটিংহামের ট্রেন্ট ব্রিজে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। বিল ব্রাউনের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্নভোজনের পূর্বে ৯৯ রানে পৌঁছেন। তবে, এরপর তিন বল খেলে আর কোন রান যুক্ত করতে পারেননি। তিন ঘণ্টা বিশ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করেন। অধিকাংশ রানই স্কয়ার কাটের সাহায্যে করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। উভয় ক্ষেত্রে কেন ফার্নসের বলে কট বিহাইন্ডে বিদেয় নেন। এরফলে, প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের প্রথম টেস্টে ৯৯ রানে আউট হন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/১৮ ও ০/৬ বোলিং বিশ্লেষণসহ খেলায় তিনি চারটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। ২৩৮ রানে জয় পেয়ে সফরকারীরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

লর্ডস টেস্টে হ্যাডলি ভ্যারিটি পোতানো পিচ থেকে পনেরো উইকেট আদায় করে নিলেও প্রথম ইনিংসে ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে পরিণত হন। ইংল্যান্ডের একমাত্র ইনিংসে ব্যক্তিগত সেরা ৩/৯১ লাভ করেছিলেন। কণ্ঠনালীতে সংক্রমণ ঘটে ও চিকিৎসকের পরামর্শ অগ্রাহ্য করে ম্যানচেস্টার টেস্টে ২৬ রান তুলে অস্ট্রেলিয়াকে ফলো-অনের কবল থেকে উত্তরণ ঘটান। এরপর, হাসপাতালে পুণরায় চলে যান। এরফলে, টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম ঘটনা হিসেবে ব্যাটিং বাদে ফিল্ডিং করা থেকে দূরে থাকেন।

১৯৩৫-৩৬ মৌসুমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলেন। ঐ মৌসুমে ভিক রিচার্ডসনের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৩৫ তারিখে ডারবানে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টে অংশ নেন। ব্যক্তিগতভাবে বেশ সফল ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত পূর্বতন সর্বোচ্চ ৯৯ রান অতিক্রম করেন। এ পর্যায়ে টেস্টে নিজস্ব প্রথম শতরানের ইনিংস খেলেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১০৯ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৮ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। ৯ উইকেটে জয়লাভ করলে সফরকারীরা পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে এগিয়ে যায়।

১৯৩৮ সালে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের নেতৃত্বাধীন অজি দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২৪ জুন, ১৯৩৮ তারিখে লর্ডসে অনুষ্ঠিত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। খেলায় তিনি একবার ব্যাটিংয়ে নেমে এক রানে হ্যাডলি ভ্যারিটি’র বলে বিদেয় নেন। এছাড়াও, বল হাতে নিয়ে ০/৫১ বোলিং বিশ্লেষণ দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। পরবর্তীতে, এটিই তাঁর সর্বশেষ টেস্টে পরিণত হয়।

২৯ জুলাই, ১৯৮৭ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের রাইড এলাকায় ৮১ বছর ২৫৪ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে।