২২ জানুয়ারি, ১৯২১ তারিখে ত্রিনিদাদের বেলমন্ট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। মূলতঃ উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হয়েছিলেন। উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিং করতেন। ১৯৪০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন।
আফ্রিকান ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত তাঁর পিতা-মাতা। ঘরোয়া আসরের প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে ত্রিনিদাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৪০-৪১ মৌসুম থেকে ১৯৬২-৬৩ মৌসুম পর্যন্ত সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। নিজ শহরে এমসিসি’র বিপক্ষে ১০১, অপরাজিত ৪৭ ও ৯০ রান সংগ্রহ করেন। এরফলে, তাঁকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ঠাঁই দেয়া হয়।
১৯৪৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে নিজ দেশে গাবি অ্যালেনের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলের মুখোমুখি হন। ফ্রাঙ্ক ওরেলের সাথে তাঁর একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ১১২.০০ গড়ে রান তুলেছিলেন। এরফলে, স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৯৪ গড়ের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। জেফ স্টলমেয়ারের আঘাতের কারণে তাঁকে খেলার সুযোগ এনে দেয়। ২৭ বছর বয়সে ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮ তারিখে নিজ শহর পোর্ট অব স্পেনের কুইন্স পার্ক ওভালে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টটি ড্রয়ের দিকে গড়ালে চার-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজটি ফলাফলবিহীন অবস্থায় অগ্রসর হতে থাকে। একবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১১২ রানের শতক হাঁকানো সত্ত্বেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ব্যাটিং শক্তিমত্তা ও ধীরলয়ে খেলার কারণে দলের বিজয় থেকে বঞ্চিত হবার ফলে আর তাঁকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে রাখা হয়নি। এ পর্যায়ে জর্জ ক্যারিও’র সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ১৪৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এ পর্যায়ে এটিই প্রথম উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৎকালীন রেকর্ড ছিল। শতরান হাঁকানোর সুবাদে এমআরএফ টায়ার্স আইসিসি প্লেয়ার র্যাঙ্কিংয়ে ৪১৭ পয়েন্ট লাভ করে এক টেস্টের বিস্ময়কারী হিসেবে পরিচিত রডনি রেডমন্ডের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পয়েন্টধারীর মর্যাদা পান।
তাঁর এ সাফল্যে ত্রিনিদাদের উৎফুল্ল জনগণ চাঁদা তুলে রূপার জগ ও রালেই বাইসাইকেল উপহার দেয়। তবে, ব্রিটিশ গায়ানায় পরবর্তী টেস্টে তাঁকে দলে রাখা হয়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে দলে না রাখার ব্যাপারে কোন ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ত্রিনিদাদের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান রাখেন। ৫০টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে পাঁচ শতক সহযোগে ৩৪ গড়ে ২৭৮৫ রান তুলেছিলেন। ১৯৫৭ সালে ইংল্যান্ড সফরে গেলেও তিনি টেস্ট খেলার সুযোগ পাননি। ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবল খেলায়ও সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন। ত্রিনিদাদের পক্ষে ফুটবল খেলায় অংশ নিয়েছেন। পোর্ট অব স্পেনভিত্তিক কোল্টস এফসি ও ম্যাপল এফসি’র প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের নির্বাচকের দায়িত্ব পালনসহ দলীয় ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন।
ব্যক্তিগত ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ তারিখে সান্তা মার্গারিটায় নিজ গৃহে শান্তিপূর্ণভাবে ৯৫ বছর ২৬ দিন বয়সে তাঁর দেহাবসান ঘটে। ৯৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণকারী লিন্ডসে টাকেটের পর দ্বিতীয় জীবিত টেস্ট খেলোয়াড়ের মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। শোকবার্তায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ডেভ ক্যামেরন তাঁকে ক্রিকেটে অন্যতম দেশহিতৈষীরূপে আখ্যায়িত করেন।
